দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

সুরক্ষার স্বার্থে স্থায়ী ভিত্তিতে বিশ্ব ভারতীতে সি আই এস এফ নিয়োগের দাবি জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ কুমার চক্রবর্তী। যদি খবরটি সত্য হয়, তাহলে কি হবে এই নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে বিভিন্ন মহল থেকে।  বিশ্ব ভারতী কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই সংবাদের সত্যতা নিয়ে কোন মন্তব্য করে নি। বিশ্ব ভারতীর জন সংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, কাগজে আমিও পড়েছি। তবে এব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই। তাই কোন প্রতিক্রিয়াও নেই।
সংবাদে "যদি" বলে কিছু হয় না। তবুও তর্কের খাতিরে কেউ কেউ ( নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, যদি এটা সত্য হয়, তাহলে এর দুটি দিক আছে। বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনী রেখে কোটি কোটি টাকা খরচ করে কোন লাভ হয় নি। এযাবৎ চন্দন চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। আর তাই স্বাভাবিক ভাবেই উপাচার্যের উপর পরছে। যদিও, বিশ্ব ভারতীতে উপাচার্যের পিছনে লাগা একটা ইতিহাস আছে। স্বয়ং কবিপুত্র রেহাই পান নি, তো অন্যান্যদের কথা বাদ দিন। সি আই এস এফ নিয়োগ হলে কতটা কি ফল হবে, এটা দেখাই যেতে পারে! অবশ্য সে ক্ষেত্রে খরচ কেমন হবে সেটা নিশ্চয়ই তাঁদের ভাবনার মধ্যে আছে।  
দ্বিতীয়ত, কথায় কথায় উপাচার্য ঘেরাও। এই টা বোধহয় হবে না, যদি সি আই এস এফ নিয়োগ হয়, এটাও ভাবছেন এক পক্ষ। বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ এর প্রতিবাদে শুক্রবার একটি মিটিং ডেকেছে। তাঁদের এক ছাত্রের বক্তব্য, আমাদের আন্দোলন থামাতে উপাচার্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই বক্তব্য বিশ্ব ভারতীর কর্মীসভার সভাপতি গগন সরকারের। তিনি বলেন, আমাদের গণ তান্ত্রিক আন্দোলনকে থামিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা চালাতে এই সিদ্ধান্ত।
স্টিম রোলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালানো যায় না। এখানে পুলিশ, সি আই এস এফ দিয়ে শিক্ষা অঙ্গনকে ভীত সন্ত্রস্ত করা যায় না। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 
তবে, বিশ্ব ভারতীর অন্দরে যেমন উপাচার্যের বিরুদ্ধে আবহ তৈরি হয়েছে, বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ঘিরে, তেমনি অন্য পক্ষের কাছে কড়া প্রশাসক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। তাঁদের মতে, উপাচার্য যা করছেন, বিশ্ব ভারতীর ভালোর জন্য করছেন। 
বর্তমানে কোনও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েই আধা সামরিক বাহিনী বা পুলিশ স্থায়ীভাবে মোতায়েন না থাকলেও, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আবেদন নজির বিহীন নয়, বলে তাদের ধারণা। এর আগে, ২০১৭ সালে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ) একই অনুরোধ জানিয়েছিল মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে। বিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনের সুরক্ষার জন্যই সেই আবেদন করা হয়। কিন্তু, সেটি এযাবৎ কার্যকর হয় নি। সূত্রের খবর, উপাচার্যের চিঠির ভিত্তিতে বিশ্বভারতীতে সিআইএসএফ নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে কেন্দ্র। আর এখানেই ক্ষমতার ঘূর্ণাবর্তে কি পূর্বাভাস দিচ্ছে বলবে ভবিষ্যতের দিনগুলি!


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours