ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ গোপালপুর গ্রামটি পশ্চিম বর্ধমান জেলার একটি বড়ো গ্রাম! কাঁকসা ব্লকের এই গ্রামটি রাজবাঁধ স্টেশন থেকে তিন কিঃমিঃ উত্তরে ও ২ নং জাতীয় সড়কের উত্তরে অবস্হিত! গ্রামটিতে প্রায় সব জাতির বাস! গ্রামে নবরাত্রি সহ সব দেবদেবীর পুজা হয় এবং পাকা মন্দিরও আছে!
গ্রামের মধ্যস্হলে বড় কালীমায়ের মন্দির! দেবীর নিত্যপুজা হয়! প্রামের পশ্চিম পাড়ার 'ভট্টাচার্য্য পরিবার ' সেবাইত! দেবী মা ডাকাত কালী নামে পরিচিতা!
জনশ্রুতি, প্রায় আড়াইু'শ বছর আগে গ্রামের জয় গোপাল ভট্টাচার্য্য পুজা অর্চ্চনা আর যজমানী করে সংসার চালাতেন! বর্তমান পানাগড় সামরিক বিমান বন্দরের নিকট রাজ কুসুম গ্রামটির পাশে গভীর জঙ্গলে ডাকাতের দল প্রতি অমাবশ্যায় কালীমায়ের পুজা করে ডাকাতি করতে যেত! গোপালপুরের জয় গোপাল ভট্টাচার্য্য একজন নিষ্ঠাবান পুরোহিত হওয়ায় তাঁকে মায়ের পুজা ও নিত্যপুজার দ্বায়িত্ব দেয়!
বৃদ্ধ বয়সে ৫ কিঃমিঃ হেঁটে মায়ের পুজো করতে যেতে জয়গোপালের খুব কষ্ট হওয়ায় মা কালী তাঁকে স্বপ্নাদেশে তাঁর নিজের বাড়ীতে প্রতিষ্ঠা করার আদেশ দেন! একই সাথে রাজকুসুম গ্রামের ভট্টাচার্য্য পরিবারের একজন পুরোহিতও কালীপুজার পরদিন অর্থাৎ প্রতিপদে দিনের বেলায় তাঁর পুজো করার জন্য স্বপ্নে আদেশ পান!
তাঁরা দুজনেই স্বপ্নাদেশের কথা ডাকাত সর্দ্দারকে জানালে তিনি সন্মত হ'ন এবং জয় গোপাল ভট্টাচার্য্য নিজের বাড়ীর নিকট মাটির মন্দির নির্মান করে মা কালীর পুজার পত্তন করেন!
ভট্টাচার্য্য পরিবারের বর্তমান সেবাইতদের বয়জ্যেষ্ঠ সদস্য সুকুমার ভট্টাচার্য্য জানালেন, গোপালপুরের বড় কালীমার পুজার কয়েকটি ব্যতিক্রমী নিয়ম আছে! এই মায়ের পুজা শুরু হয় মধ্যরাতের পর এবং অমাবশ্যার শেষে রাতেই বারী বিসর্জন হয়! মন্দিরের অভ্যন্তরেই প্রতিমা নির্মান করা হয়! রাজকুসুম গ্রামের ডাকাত কালীর সেবাইত ( ভট্টাচার্য্য) বাড়ী থেকে ভোগ এলে মায়ের পুজা শুরু হয় ও ভোগ দেওয়া হয়! পুজায় কোন আড়ম্বর করা যায় না! একটি ঢাক একটি কাঁসি ছাড়া কোন বাজনা থাকবে না! সেবাইতদের পক্ষ থেকে তিনটি ছাগ বলি দেওয়া হয়! এছাড়া ভক্তদের মানতের ছাগও বলি হয়! বলি প্রদত্ত কোন ছাগের মাংস পৃথকভাবে রান্না করা যাবে না! সেবাইতের গৃহে পংতিভোজে সেই মাংস ভোজন করানো হয়!
এখানে বড় কালীর পুজার পরদিন প্রতিপদে রাজকুসুমের জঙ্গলে কোন প্রতিমা ছাড়া মায়ের পুজা করেন রাজকুসুমের 'ভট্টাচার্য্য পরিবারের সেবাইতরা'! এখানে ছাগ বলি দেওয়া হয়!
প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় কাঁধে করে পুকুরে নিয়ে যেতে হবে এবং কোথাও দাঁড়ানো যাবে না বা গ্রাম প্রদক্ষিন করাও যাবে! কথিত আছে, অতীতে একবার মায়ের প্রতিমা নিয়ে গ্রাম প্রদক্ষিন করার পর সেই১ রাতেই গোটা গ্রাম আগুনে ভষ্মীভূত হয়! গ্রামটি তখন থেকেই পোড়া গাঁ নামে খ্যাত হয়!
ভট্টাচার্য্য বাড়ীর বড় কালীমা খুব জাগ্রতা বলেই ভক্তদের বিশ্বাস! তাই প্রতি বছর কালীপুজার রাত্রে বড় কালীমার মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে
Post A Comment:
0 comments so far,add yours