ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ পশ্চিম বঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার শিল্প শহর দুর্গাপুরের একটি বর্ধিষ্নু গ্রাম বামুনাড়া! পূর্ব গ্রামটির নাম ছিল ' ব্রাক্ষ্মন আড়া '! সম্ভবতঃ একদা রাঢ়ের রাজধানী রাড়াপুরীর অংশ ছিল গ্রামটি!এবং এই অংশে ব্রাক্ষ্মনদের আধিক্য থাকায় গ্রামের নাম করন হয় ' ব্রাক্ষ্মনআড়া ' পরে অপভ্রংশ হয়ে ' বামুনাড়' তে পরিনত হয়েছে!
জনশ্রুতি, এই গ্রামের পর পদবীধারী জনৈক উগ্রক্ষত্রিয় একটি সাপের মনি পান! বর্ধমানের মহারাজা সেই মনিটি তাঁর কাছে নিয়ে পরিবর্তে প্রচুর ভুসম্পত্তি দান করেন! মনি পাওয়ার জন্য সেই ব্যক্তির নাম হয় ' মানিক পাল '!
এই গ্রামটি ব্রাক্ষ্মন প্রধান হওয়ায় প্রায় সব হিন্দু দেব দেবীর পুজা হয়! গ্রামে অনেকগুলি শিব মন্দির ছাড়াও দুর্গা, মনসা ,ও কালী , ধর্মরাজ সহ আরও দেব দেবীর মন্দির আছে!
গ্রামের পারিবরিক কালীপুজা একটি! মুখার্জী বাড়ীর পুজো! পঞ্চমুন্ডির বেদীতে দেবীর অধিষ্ঠান! নিশি পুজার শেষে ছাগ বলি দেওয়া হয়! পরের দিন পংক্তিভোজের ব্যবস্হা থাকে!
গ্রামের দক্ষিন প্রান্তে ভুবনেশ্বর শিবমন্দিরের পাশে শিব গড়ের উত্তরে ' মা মুক্তিদার' মন্দির! মা আনন্দময়ীর প্রতিমা ভিন্ন রকমের! এখানে না শিবের বুকের উপর দন্ডায়মানা নন! দেবাদিদেব মহাদেবের নাভীমূল থেকে একটি পদ্মের সৃষ্টি হয়েছে, তার উপর মা কালী বসে আছেন!
প্রায় দেড়'শ বছর আগে গ্রামের পাল পরিবারের জনৈক রাম পাল স্বপ্নে মাকে এইরূপে দেখেন এবং মা তাঁকে পুজা করার জন্য স্বপ্না দেশ দেন! তাই তিনি আনন্দময়ীরূপে মায়ের পুজা শুরু করেন! পরবর্তীকালে পুজোটি সার্ব্বজনীন পুজার রূপ পায়!
মায়ের সান্ধ্য পুজা হয়! পুজা শেষে পুর্বে ছাগ বলি হতো! বর্তমানে বলি হয় না ! পুজার সময় বহু ভক্ত সমাগম ঘটে! গ্রামের মানুষের বিশ্বাস মা খুব জাগ্রতা! শুদ্ধাচারে মাকে মানত করলে তার মনোবাঞ্ছা পূর্ন হয়!
গ্রামে আনন্দময়ী মায়ের পুজোকে ঘিরে উন্মাদনা দেখা দেয়!
পুজার পরের দিন রাত্রে সারা গ্রামের মানুষ পংতিভোজে অংশ নেয়!
Post A Comment:
0 comments so far,add yours