জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

ভারতের মতো দেশগুলিতে,  যে সব দল তখনো মধ্যযুগীয় ভাবগত উপাদানে আচ্ছাদিত থেকেই,  উদারবাদীদের সামনে রেখে সোভিয়েত শাসনের অর্থনৈ্তিক, জ্ঞনগত উপাদানগুলিকে কাজে লাগিয়ে, দেশের অর্থনৈ্তিক স্বয়ংসম্পুর্নতার কথা ভেবেছিলো কিন্তু
----- ভেতরের মধ্যযুগীয়ে উপাদানগুলিকে সংযত রেখে, সোভেয়েত ব্যবস্থাকে সমর্থন  দেওয়ার বিষয়টিকে আমল দিতেই চায় নাই।   আভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে সাম্যবাদী কর্মোদ্যোগকে সমর্থন করা তো দুরের কথা, তাকে  প্রতিহত করতে, প্রাচীনত্বের জয়গান গেয়েছেন, তারা। জনগনমনের বিশ্বজনীনতার কথা যদি একবার উচ্চারন করে থাকেন, তবে 'বন্দেমাতারম' একশ' বার উচ্চারন করেছেন, শ্রেফ্ - পেছনকার  অতি আঞ্চলতাকে প্রশ্রয় দিতে এবং সাম্যবাদী আন্তর্জাতীকতাকে জনগনের মধ্যে হেয় করার লক্ষ রেখে। 
-----পরিনামে   হটাৎ করে চাগিয়ে তোলা, অতি-প্রাচীনত্বের আদিভৌতিক, ভাবের সাথে, রামরাজ্য (মূলতঃ মহাত্মার শ্লোগান) যখন হিংস্র রুপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করলো এবং  'হিন্দুত্বের' নামে ব্রাহ্মন্যবাদের আগ্রাসনকে   মোকাবিলা করার প্রশ্নে সাম্যবাদী ভাবাদর্শগত প্রতিরোধ ব্যুহ অকেজো প্রমানিত হোল, 
------ এরকম সব তথাকথিত উদারবাদীদের অনেকেই যখন রনে ভঙ্গ দিতে শুরু করলো, অন্যদের অনেকে মাঝামাঝি অবস্থান নিতে শুরু করলো, আবার অনেকে খোল নলচে সমেত, সরাসরি ফ্যাসিস্তদের সাথে হাত মেলাতে শুরু করলো।

সামগ্রিকতার বিচারে,
শুধু দর্শনের বিচারেই নয়, সাধারন কান্ডজ্ঞান হিসেবেও 'মুরগী এবং বাঘ' এক খাচায় কোন দিন সহঅবস্থান সম্ভব নয়। এই ক্রুশ্চেভ নীতির বিরুদ্ধে সি পি আই এম এর বর্ধমান প্লেনাম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। বলা হোল, দুটো রাষ্ট্র পাশাপাশি থাকতে পারেলেও
----- দুটি ব্যবস্থার সহ অবস্থান সম্ভব নয়। ভিষ্ম  পিতামহ,  যতদিন বেঁচেছিলেন, এমন কোন সভা বাকি ছিলো না, যেখানে বিশ্বদুষ্টু বুদ্ধির ভারতীয় ক্রীড়নকদের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন নাই।
----- আমরা সাম্যবাদীরা  যখন ভাবছি, বামফ্রন্ট/যুক্তফ্রন্ট ইত্যাদির মাধ্যমে অমরত্ব পেয়েছি, তখন এক কালে সাম্যবাদীরা শুধু রাসিয়ায় কেন ভারতেও সাংগঠনিক,  কার্য্যকলাপের ভেতর দিয়ে   জ্ঞান এবং সৃজন সম্পর্কীত  জ্ঞান প্রসারনকেই  রাজনীতির প্রধান অভিমুখ করেছিলেন
-----  তা থেকেও সহস্রগুন উদ্যোমে, সেই পথগুলিকে কাজে লাগিয়ে, জ্ঞান বিরোধী, সৃজন বিরোধী অভিমুখগুলিকে ক্রমাগত শক্তিশালী করে, মানুষকে উলটো পথে নিয়ে গিয়ে  প্রতিবিপ্লবের প্রস্তুতি চালিয়েছে। 
----   আজ সম্পুর্ণ এক নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে, যখন শার্দুল ঝাপিয়ে পড়লো দেখা গেলো, আমরা শুধু নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলার রাস্তাটাই খুজে পাচ্ছি না , তা নয়  --- এই যে খুজে পাচ্ছি না পথ তার পেছনেও মুল কারন, সাম্য যে জ্ঞান এবং সৃজনীর যুগল বন্দী সেটাই অভিজ্ঞতার আলোকে বুঝে ওঠা সম্ভব হয় নাই। 
------পরিনামে, জ্ঞান নামক বস্তটাকে,  বিদ্যালয় শিক্ষার প্রকৃ্তি বিজ্ঞান এবং সেই বিজ্ঞান আধারিত অন্য সব জ্ঞানকে পৃ্থক রেখেই, মার্ক্স আবিস্কৃত দর্শনের সর্বোচ্চ রুপটকে, আলাদা করে দেখা হয়েছে। সেখানে,শেখার নামে উল্টোটাই শেখা হয়েছে, সাধারনভাবে।

এখানেই প্রশ্ন উঠবে,  ইতিহাস এবং অন্যপ্রান্তে সৃজনী কিংবা জ্ঞানের বিপর্য্যয়ের সাথে সোভিয়েত ভেংগে যাওয়ার বিষয়গুলি কিভাবে পরস্পরে সম্পর্কীত? 
এখানেই, পুর্বকার অংশে (অংশ ৩০) শে বর্নীত অন্তসম্পর্কগুলি উল্লেখিত প্রশ্নের জবাব দেবে। 
------  জ্ঞান-সৃজনীর উপরে দাসযুগে কিংবা মধ্যযুগীয়  আক্রমনগুলি , যতটা না  হয়েছে ' ব্যবস্থার' স্বার্থে, , তার থেকেও বেশী হয়েছে বন্যজীবন এবং বন্যতার বিশ্বাসগুলির উপর ধর্মীয় ছাপকে মর্য্যাদা দিতে। এই যুক্তিতে দাড়িয়েই, গত অংশে উল্লেখ করা হয়েছে, দাসযুগে ধর্মান্ধতাকে ঘিরে কোন বিশ্বাস নিন্তনকে ততটা বিকৃ্ত কিংবা সম্মোহীত করতে পারে নাই, যে বিদ্ধ্বংসি রুপে, মধ্যযুগে এসেছিলো। সেজন্যে পুরো কালটাতেই, কার্জত জ্ঞান কিংবা সৃজন মুখ থুবরে পরে ছিলো। 
-----  সেই সুত্রেই বুঝে নিতে হোত, সৃজন যখন অন্ধকুপে, সাম্য কন্ঠরুদ্ধ হতে বাধ্য। কারন সাম্য এবং সৃজন, পরস্পরকে পরস্পরে পরিচিত করে। সেজন্যেই, দর্শন মেনেছে - এটা কোন সাম্যবাদি, সামন্তিক কিংবা দাসযুগীয়ের বিষয় নয়,
------- যেখানেই শ্রম রয়েছে, সেখানেই সৃজন থাকেবে আবার সৃজন এবং জ্ঞান পরস্পরের সাথে পরস্পরে একাত্ম। সেকারনেই দর্শন মেনেছে, পুজির নিয়ন্ত্রানাধীন উৎপাদন ব্যবস্থার প্রাথমিক দিকে
------- পুজির  ইতিহাসকে  হটাৎ করেই, পুজিকে ইতিহাসের  মধ্যমনি হিসেবে গ্রহন করে। এর উদ্যেশ্য একটাই। বিশ্বাস আধারিত রাষ্ট্রিয় চিন্তনকেঃ  সে বিশ্বাস বন্যাবস্থা কেন্দ্রিক হোক কিংবা মধ্যযুগের ধর্মীয় বিশ্বাস হোক
----- সে সবকে  চুর্ণ বিচুর্ন করে, দাসত্বের কিংবা ইউরোপের কিছু অংসের উন্নত কিন্ত অনুমান ধর্মী বিজ্ঞানকে যুক্তিবাদী বিজ্ঞান এবং তাকে নির্ভর করে একটা নতুন সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনের দায় চাপিয়ে দেয়। 

এর মধ্যেই যদি অক্টোবর বিপ্লব আত্মপ্রকাশ করে থাকে,
তার পেছনকার, কারনগুলি,
পরের পোস্টিং এ আলোচনা করার ইচ্ছা রইলো। 
তবে আপাততঃ স্মরনে রাখা উচিত হবে, 
---- সেখানেও সেই একই সংকটঃ যে শক্তি সৃজনী এবং জ্ঞানকে মুক্তি দিয়ে একদিন উভয়ের যুগল বন্দিতে বিশ্বকে এক যুক্তি ভিত্তিক জ্ঞান এবং মানবিকতার অভিমুখ উন্মুক্ত করে দিয়েছিলো
----- সেই উন্মুক্ত অভিমুখটিরই, সেই পূজিই যখন পথ রোধ করে দাড়ালো, ইতিহাসের বিকল্প হিসেবেই, 
-------শ্রমিক শ্রেনীর বিদ্রোহ এলো, অক্টোবর বিপ্লবের নাম নিয়ে। বলা হয়, সেটাই ছিলো মনুষ্য সমাজের ইতিহাসে প্রথম মানবিক বিপ্লব। 

Had the working class  movement in India could conceive the historical reason involved behind, the rise of Soviet Power led by Lenin, 
------ it would have also conceive, the socio-political  reality behind the rise  of Soviet Union which had  just acted substitute  capitalism, for its role as the fore runner of Renaissance 
 and carried it to its highest possible  peak while opening a new meaning about  social  relations and  for the first time  recognizing humanism,  
------ as an universal entity. 

এই বিষয়টাই পরে স্তালিন আরো সোজা কথায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন,
----- বুর্জোইয়া নিজেরাই গনতন্ত্র এবং রেনেশার পতাকে ফেলে পালিয়ে গিয়েছে, শ্রম জীবীরা সে কাজটাই এখন  সমাধা করছেন।

অক্টবর বিপ্লব, রাসিয়ার গৃহযুদ্ধ, এবং পরে হিটলারের অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে, ক্ষমতার পুনোরোদ্ধারের চেষ্টা, স্তালিনের যুদ্ধ বিজয়, চিন বিপ্লব, কিউবা ভিয়েতনাম এবং ইন্দোচিনের বিপ্লব
--------- ইত্যাদি সব কিছু মাঝখানের একের পর এক আলো ঝলক অতিক্রান্ত হওয়ার পর
সোভিয়েতের পতনের পেছনে  যে দুটি মূল অর্থ বিদ্যমান, সেগুলিও যদি
ভারতের শ্রমিক আন্দোলনের সামনে উন্মুক্ত হোত, তবেও আজকের অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব হতো।

একটা কথা শুধু লিপিবদ্ধ থাকুক আপাততঃ
সোভেয়েত ভেংগে যাওয়া বা ভেংগে দেওয়ার পর, 
হিটলার যে পরিস্থিতি নির্মান করেছিলো, বিশ্ব রাজনীতিত
------ সেই পথেই বিশ্বকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং হচ্ছে।
এখানে সব থেকে বৃহৎ প্রতিবন্ধকতা দুটিঃ 
সোভিয়েত ভেংগে যাওয়ার পর জ্ঞানের প্রগতিবাদী ধারা সমুহের উৎসমুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জ্ঞানের এবং সৃজনীর মুখ বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে,
সব দিক থেকে নিরস্ত্র ভারতবাষি, ভেতরে এবং বাইরে অবরুদ্ধ। (ক্রমশ)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours