ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ অজয়ের দক্ষিন তীরে সাতকাহনিয়া গ্রামের ঘাট! অজয় তখন খরস্রোতা! নদীপথে চলতো ব্যবসা বানিজ্য! অজয়ের উত্তর তীরে উদয়পুর, নারায়নপুরের ঘাট! মাঝিরা নৌকায় যাত্রী পারাপার করে! ঘুরিষা গ্রামের বেনেরা শাঁখা বিক্রি করতে আসে! অযোধ্যা - বনকাটি, শ্যামবাজার, সাতকাহনিয়ার করবে মেয়ে বৌয়েরা শাঁখা পরে!
কিংবদন্তি, একদিন শাঁখারী নৌকা থেকে নেমে গ্রামের দিকে পা বাড়িয়েছে তখন অজয়ের দহের কাছে একটি লালপাড় শাড়ী পরিহিতা বালিকা তাঁকে শাঁখা পরানোর আব্দার করলে ,শাঁখারী শাঁখা পরিয়ে দাম চাইলে, বালিকাটি জানায়, সে অযোধ্যা গ্রামের অভয় ঘটকের মেয়ে! বাড়ির ঈশান কোনের কোলঙ্গায় সিঁদুর কৌটাতে পয়সা আছে! সেই পয়সা তাঁর বাবার কাছে সে যেন নিয়ে নেয় শাঁখার দাম বাবদ!
শাঁখারী অযোধ্যা গ্রামে এসে জানতে পারেন, অভয় ঘটক নিঃসন্তান!তবুও অভয় বাবুকে সবিস্তারে সব কথা শোনালেন! দেখা গেল সত্যিই ঈশানকোনে কোলঙ্গায় সিঁদুর কৌটায় একটি স্বর্নমুদ্রা আছে!
এরপর দুজনেই সেই দহে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ডাকতে লাগলেন, " দেখা দে মা, দেখা দে..."....জনশ্রুতি, ভক্তের করুন আর্ত্তিতে, দহের জল থেকে শাঁখা পরা হাত দুটি তুলে দেবী তাঁর অস্ত্বিতের জানান দেন! সেখানেই দেবীর একটি পাষান অর্থাৎ পাথরের মূর্ত্তি পাওয়া যায়!
সেই থেকে প্রায় সাড়ে তিন'শ বছর ধরে সেই দেবী দুর্গার মূর্ত্তিটি পুজা হয় এবং দেবী 'পাষান দুর্গা 'নামে পরিচিতা! অভয় ঘটক বৃদ্ধাবস্হায় আর নদীর ঘাটে যেতে অসমর্থ হওয়ার বাড়ীতেই একটি মৃন্ময়ী মুর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজার পত্তন করেন! পুজার বৈশিষ্ঠ শাক্ত মতে পুজা হয় সপ্তমী, অষ্টমীর সন্ধিক্ষন ও নবমীতে ছাগ বলি হলেও দেবীর সন্মুখে কোন বলিদান করা যায় না মন্দিরের পুর্বদিকের অর্থাৎ দেবীর বাম দিকে ছাগ বলি দেওয়া হয়!
নবমীতে অজয়ের ঘাটে পাষান মুর্ত্তির পুজা ও ছাগ বলি হয়!স্যার দুর্গার পুজোকে কেন্দ্র করে প্রচুর ভক্ত সমাবেশ ঘটে!
Post A Comment:
0 comments so far,add yours