অঙ্কিতা ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, পূর্ব বর্ধমান:

(হয়েই যাক ডিএনএ টেস্ট)

এরপর অর্পিতা চক্রবর্তীর পরবর্তী কার্যকলাপ, গৌরী চক্রবর্তীর জন্য এক ভদ্রলোককে গৌরী চক্রবর্তীর স্বামী হিসেবে সমাজের চোখে দেখানো, এবং আমার বাবা হিসেবে নির্বাচিত করা। অর্পিতা চক্রবর্তী এই কাজটিও করলেন। একজন ভদ্রলোক কে গৌরী দেবীর স্বামী সাজালেন।যে ভদ্রলোকটি গৌরিদেবী সাথে প্রত্যহ সংসারে থাকতেন না। মাঝেমধ্যে আসতেন গৌরী দেবীর কাছে। এইভাবে সমাজের চোখে গৌরী দেবী বিবাহিত।যদি ওই ভদ্রলোককে গৌরী দেবীর স্বামী না বানানো হতো তাহলে গৌরী দেবী কিভাবে সমাজের সামনে অবিবাহিত হয়ে আমাকে লালন পালন করতেন? এরপর অর্পিতা চক্রবর্তীর আরো একটি কার্যকলাপ আছে।আমি যত বড় হয়ে উঠতে থাকি গরিবের কাছে উপদেশ ছিল বাড়িতে যেন কোন প্রকার টেলিভিশন না থাকে।এতটা চিন্তা ভাবনা করে বা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটার পর একটা ধাপ তৈরি করেছেন আমার জন্ম পরিচয় নষ্ট করার জন্য। আপনারা ঠিক বুঝতে পারলেন না তো!কেন টেলিভিশন আমার পালক মা গৌরী চক্রবর্তীর বাড়িতে রাখা হয়নি।এর একটাই কারণ টেলিভিশন থাকলে আমি আমার বাবাকে টেলিভিশনের পর্দায় দেখে ফেলবো। এবং আমার সমস্ত কিছু পুনরায় মনে পড়ে যাবে। ও তাছাড়া খুব সম্ভবত আমার মনে পড়ে গিয়েছিল আমি একদিন অর্পিতা চক্রবর্তীর দাদা রঞ্জিত চক্রবর্তীর বাড়িতে একটি টেলিভিশন প্রোগ্রাম এ আমার সেই গোপন মাসীমণি দেখে ফেলি অর্থাৎ তসলিমা নাসরিনকে।কিন্তু ঠিক তারপর থেকেই কোথাও টেলিভিশনের সামনে গিয়ে আমি দাঁড়ালে তৎক্ষণাৎ টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়া হতো। এইভাবে আমি অত্যাচারের শিকার।আমি যখন গিরিবালা স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পাঠরত ঠিক তখন থেকে আমার পালক মা গৌরী চক্রবর্তী আমাকে স্কুলে ঢুকিয়ে দিয়ে সারাদিন স্কুলের গেটের সামনে বসে থাকতেন। যতক্ষণ না আমার স্কুল ছুটি হয়। স্কুল ছুটি হলে আমাকে সঙ্গ করে নিয়ে আসতেন।এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে নির্দেশ দেওয়া ছিল যতক্ষণ না আমার অভিভাবক স্কুলে নিতে আসবেন ততক্ষণ আমাকে স্কুল থেকে যেন ছেড়ে দেওয়া না হয়।তাই যদি কোনদিন নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই স্কুল ছুটি হতো তখন আমাকে স্কুলে বসিয়ে রাখা হতো। আর পাঁচটা বাচ্চার মত আমার শৈশব জীবন ছিল না এমনকি খেলাধুলার জন্য বাইরে ছাড়া হতো না। আজ আমার এই জীবনের জন্য দায়ী কে? 
নিশ্চয়ই আমার বাবা ও আমার মা।আমার বাবা ও আমার মায়ের বাচ্চা আমি তাহলে আমার অপরাধ কি ছিল?আমি তো একজন মানুষ তাহলে আমার জন্ম দিয়ে আমার জীবন দুর্বিষহ করার কি প্রয়োজন ছিল? আমি তো বন্যার জলে ভেসে আসে নি, বা মুক্ত আকাশ থেকে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়নি। একটি বাচ্চা কখনোই অবৈধ হতে পারে না। কারণ তার বৈধতা তার জন্ম হওয়া।তাই আমার যখন জন্ম হয়েছে আমার তো অধিকার আছে আমার পিতৃপরিচয় ও মাতৃ পরিচয় পাওয়া। আমি সরব হয়েছি আমার এই দাবি নিয়ে আমার জন্মদাতা বাবা জর্জ বেকার ও জন্মদাত্রী মা তসলিমা নাসরিনের কাছে। তাতে যদি আমাকে ডিএনএ পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয় আমি এই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। (ক্রমশ)

(প্রতিবেদনের যাবতীয় দায় লেখিকার)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours