জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

চলার পথে যখন অনেক সাম্যবাদীই, এখনো সেই আসল কথাটি  মনে ধরেন না, যে আবিস্কারের মাধ্যমেই একজন বিশ্বে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট
দার্শনিক হিসেবে নিজের মান্যতা আদায় করে গেলেন -----  
------- তিনি তো সারা জীবন এটাই বোঝালেন এবং প্রকৃত সাম্য না আসা পর্য্যন্ত শতাব্দী ধরে বুঝিয়ে চলবেন,  সাম্যযদি মূলতঃ জ্ঞানোত্তরনের সংখ্যবৃত্ত আধারিত রাজনীতি হয়, সর্বজ্ঞানের সিংহদ্বার।অন্যদিকে, বিশ্ব সম্পর্কে যদি দর্শনকে মেনে চলতে হয়, তবে এটাও...
------  অন্য দুনিয়া মানতে না চাইলেও, সাম্যবাদীদিরা যদি অখন্ড নিরন্তরতায় মেনে না চলেন, যে 'সাম্যের'ই অন্য নাম 'চিন্তা মুক্তি' -' রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছেন, 'চিত্ত মুক্তি',। মার্ক্স উল্লেখ করেছেন, জ্ঞানের অখন্ড সত্বায় দাড়িয়েই, প্রকৃ্ত অর্থে 'চিন্তনমুক্তির' কাজটা শুরু হবে। 
যিনি দর্শনের সর্বোচ্চ পর্বত  শিখরে উঠেছিলেন
------- তিনি তাই সেখান  থেকে দাড়িয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন, 'মুক্তি'র অর্থকে যারা  'ক্ষুদা' মুক্তিতেই শেষ করে দিতে চান, তারা মানুষকে জানোয়ারের অধিকতর উচ্চতায় দেখতেই চান না। তাদের কাজে মানবিকতার অর্থ 'জীবে দয়া'তেই শেষ হয়ে যায়।
এই সিদ্ধান্ত থেকেই দর্শন ঘোষনা করলো, নিশ্চিতভাবে 'পেটের ক্ষুদা' নিবৃত্তি 'চিত্ত ক্ষুদা' নিবৃত্তির পথে প্রথম দরজা, কিন্তু একথা মিথ্যা, জালিয়াতী এবং ইতিহাসের কবর নির্মান
------- যখন কেউ মনে করেন মানুষের কাছে, 'চিন্তনের ক্ষুদার' স্থান, 'পেটের ক্ষুদার নিচে' ,  তিনি কিংবা তারা ইতিহাস নির্মানে মানুষের স্থানকে জানোয়ারের পর্য্যায়ে নামিয়ে এনে, মেহনতিদের নির্জীব পদার্থ বানিয়ে দিয়ে, 
-----   রাষ্ট্র ব্যবস্থায় - তা সাংবিধানিক কাঠামো হোক কিংবা অটোক্রাটিক হোক, মানুষের যায়গা এক অখন্ড চিরন্তনতায়, বাবুদের দুর্গাপুজোবাড়ীর বারান্দার ওপারে পুকুর পাড়ের মাঠেই হবে। 
এই সুত্র ধরেই সাম্যকে, সংখ্যবৃত্তে  জ্ঞানত্তোরনের রাজনীতি হিসেবে ব্যখ্যা করা হয়েছে। 
----- এখান থেকেই দেখা যাবে, ইতিহাসের এক একটা কালের প্রথমিক অগ্রগতির যুগে, মানুষ যখন তার সৃজনীকে জ্ঞানগত উত্তোরনের পথ ধরে এগুনোর চেষ্টা করেছে, কোন  রাষ্ট্র কাঠামোই সরাসরি নিজের স্বার্থ বিপরীত দিকে কিংবা প্রাচীন বিশ্বাসে আঘাত  না লেগে থাকে
----  সৃজনী কিংবা জ্ঞানের বিকাশে প্রচন্ড বাধার কারন হয় নাই । সক্রেটিস কিংবা ব্রুনো হত্যা সত্বেও দাসযুগে সভ্যতার সাথে সাস্থে ইতিহাস নিজেও এগুনোর সুযোগ পেয়েছে যথেষ্ট।
------ অন্যথায় সেকালে স্পার্টাকাসের জন্ম হতে পারতো না, এবং একের পর এক দাস বিদ্রোহে, দাস সমাজ ভেংগে পরতো না।
আমরা যারা সাম্যবাদে আত্মনিয়োগ করেছি বলে দাবী করে থাকি, তারা অংকের নিয়মে এক থেকে অন্য ব্যবস্থার উত্তোরনের ধারাটার হিসেব নিকেশ করতে চাইলেও
------  প্রতিটি ধারার পেছেনে জ্ঞানের বৈপ্লবিক উত্তোরনের  সত্বাটি যে সভ্যতার উর্ধমুখীন রুপান্তরের দিকে ঠেলছে এবং তার সাথে সাথে  ইতিহাসকে
-----   কদ্যাপি বিচার করে থাকি।  পরিনামে ইতিহাসে ব্যক্তির ভূমিকাটি চিহ্নিত করার মতো রশদ যেমন সংগ্রহ করতে পারি না। যদি না আমাদের এইভাবনাকে মাথার উপরে লক্ষ টনের বোঝার উপর চাপিয়ে না দেওয়া হোত 
-----    যেন শিক্ষাটাই জ্ঞান এবং সেই জ্ঞান শ্রেফ প্রকৃ্তি বিজ্ঞানের প্রথম তিনটি গতি,  তৎ সম্পর্কীত অংক এবং সাহিতেই   সমাপ্ত হয়েছে, তবে আজ এই ভারতবর্ষ নামক দেশটা  যেভাবে, 'আদিভৌতিকবাদের' হাতে চলে গেলো, কদ্যাপি যাওয়ার সুযোগ পেতো না। 
এখন তো আমাদের সময়ের 'ইংরাজী শিক্ষার' ধারনাটাকেই, যুক্তিবাদী শিক্ষা থেকে একটা বিদেশী (আন্তর্জাতীক বটে)  'ভাষা শিক্ষায়'    য়দলে দেওয়া হোল, তা কদ্যাপি কোথায়ো বিশ্বে হয়েছে।
---- এইভাবেই, কোলকাতার বাবুরা বাংলায় আর কোন রত্নগর্ভা মায়ের জন্ম না হয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। শেষ পর্য্যন্ত জ্ঞানটাকেই, অতীতের 'হৃদয় চ্যুত' প্রকৃ্তি বিজ্ঞান থেকে, 'সাধারন বিদ্যালয় শিক্ষায়' বদলে দেওয়া হয়েছে। 
----- ওটা যে কী অবস্থায় রয়েছে, এদেশে বিশেষ করে বাংলায়, সে কথা বুঝিয়ে বলা যাবে না। শিক্ষা আর জ্ঞানের তফাৎটা লেখক, সাধারনভাবে শিক্ষি্ত ব্যক্তির সাথে, তার 'দিদিমার' তুল্যমূল্যে বিচার করে খুজে পেয়েছিলেন। দিদিমা পচান্নবই বছর পুরো বিক্রমে, ৯ সন্তান, তার অতি-শিক্ষিত বৌ-মা, নাতি নাতণীর সাম্রাজ্যে একক অদ্বিতীয়া ছিলেন। তার জীবিত কালে সংসার চালিয়ে গেছেন। উনার বিদ্যালয়ে প্রবেশের সুযোগ হয়েছিলো বলে জানি না। --- লোভ সামলাতে না  পেরে, বলে দি, লেখকের 'মা' ছিলেন আট ভাই এর এক বোন। 
অনেক সময় ভয় হয়, রবীন্দ্রনাথ যদি নোবেল না পেতেন, তাকে হয়তো, ভারতের সব থেকে অশিক্ষিত 'শিক্ষিত' মানুষ বলে চিত্রিত করতে হোত। প্রসংগত বলে রাখি
------ রোমা রোলা তার ভারত পঞ্জিকায় উল্লেখ করেছেন - উনার চন্ডালিকা লেখার পর বাংলারই এক বিশ্ব-নন্দিত দেশপ্রেমী সংগীতজ্ঞ, রোমা রোলার কাছে  সন্দেহপোষন করেছিলেন 
এই কাব্য নাটক যখন মঞ্চস্ত হবে, তখন বাংলার সমাজটা বেচেঁ থাকবে কী না।
প্রশ্নটা এখানে সেই অতিপুজ্য দেশপ্রেমী, বিশ্ব নন্দিত সংগিতজ্ঞকে শিক্ষিত বলা যাবে কিংবা জ্ঞানি অথবা কিছুই নয়। (ক্রমশ)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours