মুসবা তিন্নি, ফিচার রাইটার, বাংলাদেশ:
প্রতি
 মাসে বাংলাদেশ থেকে কতজন নারী সৌদিতে আসেন- তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান মেলে
 না। তবে জেদ্দা বিমানবন্দরে জমজম হাউস, ট্রলিম্যানের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন
 বাংলাদেশি শ্রমিক জানালেন, প্রতি মাসে কম করে হলেও ৪০০ থেকে ৫০০ নারী 
কাজের সন্ধানে সৌদি আরবে আসেন। দালালদের মারফতেই তারা আসেন। তবে সেখানে 
তারা অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে কারণ যেসব নারী কাজের সন্ধানে 
সেখানে যায়, তাদের ব্যবহার করা হয় যৌনদাসী হিসেবে।
কিছুদিন
 অাগে,সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে ৫০জন বাংলাদেশী প্রবাসী নারী শ্রমিক দেশে ফিরে
 যাওয়ার আকুতি জানায় এবং তা ভিডিওতে প্রকাশ পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে 
ছড়িয়ে পরে। তাদের অভিযোগ ছিলো তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও 
মানুষিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
শুধু আকুল আবেদন 
জানায় "দেশে ফিরে  যাবে"! কাউকে কাউকে সৌদি আরব থেকে দুবাইয়েও নিয়ে যাওয়া 
হয় নানা প্রকার অপকর্ম করানোর জন্য অথচ সৌদি আরবে আসার আগে এসব নারী কাজ 
সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাদের জানানো হতো, গৃহকর্মী হিসেবে কাজ দেয়া 
হবে।
এ রকম অসংখ্য নারী শ্রমিক  পৈশাচিক নির্যাতিত 
হয়ে ৪দেয়ালে বন্দী থেকে জীবন কড়ির অংক কষে প্রবাসে। প্রতিনিয়ত নিউজ ভর্তি 
হচ্ছে গৃহকর্মীদের অত্যাচার ও নির্যাতনের খবর দিয়ে। সৌদি আরবে বাংলাদেশি 
বেশির ভাগ নারীদের ভোগের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন 
ওখানে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও। তারা জানান, জেদ্দা বিমানবন্দর পাড়ি দেয়ার 
পরপরই তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেয়া হয় তারপর তাদের গোলাম বানিয়ে যা খুশি তাই 
করা হয় তাদের সাথে। বাংলাদেশ থেকে আসা নারী যারা নির্যাতন সহ্য করে টিকে 
থাকে তারা পরবর্তীকালে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ 
নারীই সেটি পারেন না। অসংখ্য বাংলাদেশী মা বোনেরা গৃহকর্মী হিসেবে গিয়ে বড় 
কষ্টে আছে প্রবাসে।পরিবারকে দুবেলা দু মুঠো খাবার ও পরিবারে উজ্জ্বল আলো 
ফুটাতে নিজের জীবনকে নিঃশব্দে নিঃশেষ করে দিচ্ছে এরা তবুও পায়না আলোর দিশা,
 অত্যাচারের কষাখাতে নিঃস্বেশ হয় জীবন । বাংলাদেশের একটা দালাল চক্র দেশ 
থেকে নারীদের এনে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বেহাত হতে হতে অনেক
 বাংলাদেশি নারী কোথায় চলে যায় শেষে তাদের হদিসই মিলে না। ভাগ্যবান যারা 
তারা কখনো কখনো বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সাহায্য পেয়ে থাকেন। কিন্তু অনেকেরই 
ভাগ্যে সেটি জুটে না।  বাংলাদেশ থেকে আসা নারীদের খুব কমসংখ্যক মক্কা ও 
মদিনা আসেন। যারা আসেন তারা জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মামসহ কয়েকটি এলাকায় বেশি 
থাকেন এবং সৌদিয়ান শেখরাই তাদের কিনে নেন। এছাড়া দালালদের দ্বারাও তারা 
প্রায় সময় নির্যাতিত হয়ে থাকেন। বর্বর নির্যাতিত নারীদের কষ্টের বর্ণনার 
সাথে একটা কথা থাকে " আর যেনো কোনো নারী শ্রমিক প্রবাসে গৃহকর্মী হয়ে না 
আসে"!
তাই প্রবাসে নারী শ্রমিক প্রেরণের পূর্বে 
সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।যেখানে হাজার হাজার পুরুষ শ্রমিক প্রবাসে 
মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।সেখানে নারী শ্রমিক আর কতটুকুই সফল হবে?
নারী জনশক্তিকে প্রবাসে প্রেরণ না করে দেশের মধ্যে নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যেগ নেওয়া উচিত।





Post A Comment:
0 comments so far,add yours