ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ  রূপেন্দ্র  আরও  বললেন," এছাড়া  আমাকে  বাসস্হান  ও করে বছরের খাদ্য  সামগ্রী প্রদানের  প্রতিশ্রুতিও  ছিল!  কিন্তু  আমি  সেই  লোভনীয়  প্রস্তাব প্রত্যাখান  করে  নিজ  গ্রামে   ফিরে  এসেছি  দুটি  কারনে! প্রথমতঃ  আয়ুর্বেদ  শিক্ষা  গ্রহনের  জন্য  আমার   স্বর্গত পিতা আয়ুর্বেদ  শিক্ষা  গ্রহনের  জন্য  গুরুগৃহে  পাঠানোর  মূল  উদ্দেশ্য  ছিল  এই  সোঁয়াই  গ্রামসহ  পার্শ্ববর্তী  গ্রামের  মানুষ  চিকিৎসার  সুযোগ  থেকে  বঞ্চিত! আমি  যেন সেই  দ্বায়িত্ব  পালন  করি  সেটাই  তিনি  চেয়েছিলেন!আমি  সেই  দ্বায়িত্ব  পালনে  দায়বদ্ধ!

            আর  দ্বিতীয়তঃ গ্রামে  একটি  নারী  বিদ্যানিকেতন  স্হাপন  করা!"
          বাচস্পতি  প্রশ্ন  করেন, গ্রামের  বেশীর  ভাগ  মানুষের  আপত্তি  থাকলেও?
রূপেন্দ্র  বলেন , এখানে  যাঁরা  উপস্হিত  তাঁরা  সকলেই  পুরুষ! তাই  যাঁদের  তিনি বিদ্যালয়  স্হাপন  করতে  চাই! তাঁদের অর্থাৎ  মায়েদের মতামত প্রয়োজন!
      নন্দ  চাটুজ্যে  গর্জে  উঠে  বললেন, এখানে  চন্ডীমন্ডপে  মেয়েদের  উপস্হিত  থাকা  নিয়ম  বিরূদ্ধ!
        রূপেন্দ্র  জবাবে  জানান, আমি  এই  নিয়মটাই  ভাঙতে  চাই! তবে  এটাও  জানি  আমি  জোর  করে  বালিকা  বিদ্যালয়  স্হাপন  করলে  আপনারা  আমার  ঘর  আগুনে  পুড়িয়ে  দেবেন!আমাকে  একঘরে  করবেন! তবুও  সোঁয়াই  গ্রামবাসীর  কাছে  আমার  নিবেদন! আপনারা  যদি  আমার  ইচ্ছায়   সহমত  না  হন, তাহলে আমি  পিতৃ-আদেশ  ছিন্ন  করে, নিজ  গৃহে  আগুন  লাগিয়ে  , আমি  স্বকন্যা  সোঁয়াই  গ্রাম  ত্যাগ  করে  ত্রিবেনী  চলে  যাবো!সেখানেই  প্রতিষ্ঠা  করবো আয়ুর্বেদ  মহা বিদ্যালয়  ও মহিলা  বিদ্যানিকেতন!   আপনাদের  হয়তো  একটু  অসুবিধা  হবে! কেউ  অসুস্হ  হলে  তাকে  ত্রিবেনী  নিয়ে  যেতে  হবে!
        চন্ডীমন্ডপে  পালক পতনের  নিস্তব্ধতা! রূপেন্দ্র  আবার  বলতে  শুরু  করলেন, গ্রামবাসীর  কাছে  আমার  যা  জানানোর  জানালাম!এখন  আমাকে দাতব্য  চিকিৎসালয়  যেতে  হবে! তবে আমার  শিষ্য  জীবন  রইলো  ওর  মাধ্যমে  আপনাদের  সিদ্ধান্ত  জানিয়ে  দেবেন! 'ব্রজসুন্দরী  মহিলা  বিদ্যানিকেতন' টি  কোথায়  হবে- সোঁয়াই  না  ত্রিবেনীতে?
জীবন  দত্ত  তাঁর  গুরুদেবকে  জানিয়ে  দিল, তিনি  সোঁয়াই  ত্যাগ  করলে  সেও  তাঁর  সাথে  যাবে!
  রূপেন্দ্র গ্রামবাসীর  উদ্দেশ্যে জানিয়ে  দিলেন, তাঁর শিষ্য  জীবন  দত্ত  তাঁর  সাথে  ত্রিবেনীতে  গেলে ব্রজেন্দ্রনারায়ন  প্রতিষ্ঠিত দাতব্য  চিকিৎসা  কেন্দ্রটি  বন্ধ হয়ে  যাবে! আপনারা  তখন  ঠিক  করবেন  ওখানে  কোন  দেবীর  মন্দির  হবে, মনসা  শিতলা  না  অন্য  দেবীর ? কারন  চিকিৎসকের  অভাবে  এঁরাইতো  তখন  একমাত্র  ভরসা !
( আগামী  কাল  থেকে  আগামী ১৩ ই  অক্টোবর '২০১৯  তারিখ  পর্য্যন্ত  ' অতীত  ঐত্যিহ্যের  আতসে  দুর্গাপুর ' ধারাবাহিক  লেখাটি  প্রকাশিত  হবে  না!)
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours