জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:
উল্লেখ
করেছিলাম, যারা আত্মবিক্রয় করেছেন, তাদের সাম্য নিয়ে বিচার আচার করতে
যাওয়া, কুক্কুট কর্ম বই অন্য কিছু হবে না। কথাটা যদি, সাম্যবাদী আন্দোলনের
বাইরের মানুষদের মধ্যে আত্মবিক্রীতদের প্রতি চিহ্নিত করা হয়ে থাকে
------
তবে সাম্যবাদী আন্দোলনের সাথে যারা যুক্ত তাদের প্রতি এই মানদন্ড আরো
শতগুন পবিত্রতার অগ্নিপরীক্ষায় উত্তির্ন হতে হয় একটি নিদৃষ্ট মানদন্ডের
ভিত্তিতে। সাম্যের আন্দোলন সংসদীয় স্তরে থাক কিংবা অ-সংসদীয়
গনতন্ত্রের গনতান্ত্রিক অথবা বৈপ্লবিক স্তরে থাক না কেন।যারা আন্দোলনে
রয়েছেন, তারা মেনেছেন, সংসদীয় গনতন্ত্রে এই অগ্নিপরীক্ষার মানদন্ড অতিক্রম
করা কতো কঠিন।
----- সেখানে একপ্রান্তে যেখানে
যুক্তি তর্কের ভেতর দিয়ে, গনতন্ত্রবেশধারি শত্রুকে নির্মুল করা,
অন্যপ্রান্তে নিজেকে লৌহদৃঢ় একাত্মতায় মেহনতিদের সাথে একাত্ম হওয়ার সাথে
সাথে, শ্রমিক শ্রেনীর অগ্রবর্তী অংশকে চিত্তে এবং সংগ্রামী চেতনায়
একট্যাবদ্ধ করা, তাদেরকে ধীরে ধীরে দলের কেন্দ্রে স্থান করে দিয়ে, দল এবং
ট্রেড ইউনিয়ণের মাধ্যমে শ্রমিকদের সর্বাত্মক যোগদান - সাথে সাথে গগনচুম্বি
গনতন্ত্রকে সুনিশ্চিত করা।
অনেকেই
মেনে চলেন, যেন যুক্তি-বাদের বিস্তৃতির বিষয়টি একমাত্র পুঁথি ধরে আসে ।
সেটা উদারবাদী আইনের যুক্তিটি সেভাবে শেখা যায়। কিন্তু, জনগনের গনতন্ত্রের
অভিমুখে সাম্যকে নিয়ে এসে যখন একটা সামাজিক রুপান্তরের প্রশ্ন যুক্ত হয়,
সাংসদীয় গনতন্ত্রের সাথে এবং রুপান্তরের নেতৃ্ত্বকে যখন সংসদীয়
কার্য্যকলাপের অভিমুখে প্রতিষ্ঠিত করার প্রশ্ন সামনে আসে
------
তখন যুক্তি তর্কের সংগ্রামটি পুথিগত বিদ্যার সাথে, লৌহ দৃঢ় মানসিকতার
প্রশ্নটি যুক্ত হতেই হবে। এই সংযুক্তি আবার ব্যক্তির ইচ্ছার অধীন কখনোই হয়
না
------- যত সময় ব্যক্তির ইচ্ছা অন্য তিনটি সর্তের অধীন আনার নিরন্তর চেষ্টা না হয়ঃ
(ক)
প্রথম সর্তঃ একজন সাম্যবাদীর লোহদৃঢ় দৃঢ়তার বিষয়টী, মেহনতি এবং দুনিয়ার
নিপিড়ীত মানুষের সাথে একাত্ম হওয়ার নিরন্তর চেষ্টা করা না হয়।
(খ) এই চেষ্টাটাও, কর্তা ইচ্ছা কর্ম নয় - ভাতীয় ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে,
(১)
তার প্রতিটি সুস্থ-সবল অনুভুতিগুলিকে চিহ্নিত করা, কালে কালে সঞ্চিত
পুজ-রক্তের মধ্যে আটকে থাকা সে সব অনুভূতি সমুহকে মুক্ত করতে,
(২) আন্ততর্জাতীক এবং ইতিহাসগত ধারনাগুলিকে নিজেতে একাত্ম করা
(৩) সেই একাত্মতা, বিশ্ব মেহনতিদের বিরত্বের সাথে নিজেকে একাত্ম করার মধ্যে দিয়েই
(৪)
ভবিষ্যতের জন্য দল যে রুপরেখা চিহ্নিত হয়েছে, যাকে আমরা জনগনের গনতন্ত্র
বলে চিনেছি, সে পথে সম্মলিত জনশক্তিকে এগিয়ে দেওয়ার জন্যেই সব রকম অতীত
আবর্জনা থেকে, কর্মী ও নেতাদের মুক্ত করা এবং সাথে সাথে
------
বুর্জোয়া উদারবাদী সততার শৃংখল ছিরে, সাম্যবাদী নৈ্তিকতার দিকে ব্যক্তিগত
ভাবে কমরেডদেরকে এবং সংগঠিত ভাবে দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারনে লৌহদৃঢ়
একাত্মতাতে কায়েম করা।
(গ) তবু সব শেষের দুটি
প্রশ্নের একটি হোল, ১২৫ কোটি মানুষকে এই সব জটিল প্রকৃয়ায় একাত্ম করার পথে,
কোন মন্ত্রবলে জাতীয় এবং আন্তর্জাতীক অভিজ্ঞতাকে একাত্ম করা যাবে।
-----
এখানেই, মার্ক্স এবং লেনিনের একাত্মতায়, বিশ্বজ্ঞানের যে অখন্ড রুপটিকে
তার সর্বোচ্চ ধাপে উঠে এসেছে, যাকে ইতিহাস, দর্শনের সর্বোচ্চ রুপ বলে
চিহ্নিত করেছে, যে দর্শনকে বিশ্ব যতদিন বিরাজমান থাকবে, জন্ম-সৃষ্টি-বিলয়
সংক্রান্ত যে ধারনা নির্মান হোল, - অনতিক্রম্য বলে চিহ্নিত হোল ,
---- তার আয়ত্বিকরন এবং প্রয়োগের ধাপে ধাপেই বিশ্ব সমাজ এগুতে থাকবে।
এসব
কথার মধ্যেই আরো একটা সুত্রকে চিহ্নিত করে যাওয়া উচিত হবে। সেটা কোন
কমিউনিষ্ট পার্টির সাথে 'সাম্য'কে একাকার করে দেখা উচিত হবে না। কোন
কমিউনিষ্ট পার্টী সব সময়, এক উৎক্রমনকালীন শ্রেণী শক্তি। এই শক্তি সাম্যের
অভিমুখেই ক্রমে যেমনভাবে সাম্যের সাথে একাত্ম হবে, তেমনভাবেই, সে পূর্ণতা
পাবে।
বাকি রইলো শেষ প্রশ্নের সমাধানের পথেও
-----
, সাম্যবাদী নৈতিকতাকে বুর্জোয়া উদারবাদী - রেনেসাঁর ধ্বসে পরার কালে যখন
এই উদারবাদীতা প্রতিনয়ত ঠুনকো হয়ে যাচ্ছে - নৈ্তিকতা থেকে পৃথক করতেই হবে
নেসাঁর ধ্বসে পরার কালে
বিষয়টি হোল ভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে, ভারতের সাম্যকে মার্ক্সবাদী বিশ্ববিক্ষায়,
-----
বিশ্বের সহ ভারতের সমকালিন রুপান্তর প্রকৃয়ায় ভারতকে, ভারতের মানুষকে, তার
সংগ্রামী অনুভূতিগুলিকে টেনে তোলা। এটা এমন এক ভারতের সন্ধান যা,
-----
অতীতে যত রুপে যত ভারতবর্ষকে দেখা গেছে, তার অন্তরের কোনা কোনা অন্বেষনের
পর, আজকের নিপিড়ীত ও অপমানিত ভারবর্ষকে টেনে তুলে, অত্যাচারী জালিমের
মুখোমুখি দাড় করানো।
এ
কাজটাই চলছে গত শতবছর ধরে, বাকি কাজটা শেষ করার দায় পরবর্তী প্রজন্মের। এই
কাজটার দিক চিহ্নই ১৯৬৪ সালে গৃহীত দলের কর্মসূচী দিয়ে গেছে। পরবর্তী
প্রজন্মকে সেই চিহ্ন ধরেই, গৌংগোত্রি পর্য্যন্ত পৌছুতে হবে এবং সেখান থেকে
আজকের দিক চিহ্ন
----- সেখান থেকেই 'মহামানবের সাগরে'
আগামী লেখা কয়টিকে সেই ভাগীরথির উৎস মুখ থেকে অববাহীকতার সন্ধানেরই চেষ্টা করবো। (ক্রমশ)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours