কিন্তু এর প্রয়োজনীয়তা কতটা সেটাই এখন প্রশ্নের মুখে।
সৃষ্টির প্রথমে ছিল না কোন ধর্ম। ছিল শুধু মানুষ! আদিম মানুষ খাদ্য বানাতে জানত না, বস্ত্র - বাসস্থান বানানো কিছুই জানত না। ছিল না কোনো সমাজ ব্যবস্থা।
এ ভাবে অশিক্ষিত অবস্থায় মানুষ যত্র তত্র যেমন খুশি বিশৃঙ্খভাবে জীবন কাটাতো। উশৃঙ্খল আচরণ করত। তখন প্রয়োজন পড়ে ধর্মের!
এখানে সারা বিশ্ব ব্যাপী মূল কিছু ধর্ম ও জীবন দর্শন সম্পর্কে শিক্ষা আলোচনা করা হল :-
বৈদিক যুগে মুনি ঋষি গণ ধ্যান, যোগ ইত্যাদির মাধ্যমে জীবনের সার , মানুষের চরিত্র, কর্ম, বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে।
তখন এই বিশৃঙ্খল মানুষদের ঐক্যবদ্ধ করতে, শৃঙ্খলা আনতে বৈদিক মুনি ঋষি গণ প্রবর্তন করেন ধর্মের। বৈদিক ধর্ম বিশ্বের অতি প্রাচীন ধর্ম (খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দ থেকে ৫০০ অব্দ )। বৈদিক ব্রাহ্মণ্যধর্ম বা প্রাচীন হিন্দুধর্ম বা, প্রাচীন ভারতের প্রেক্ষাপটে, ব্রাহ্মণ্যধর্ম হল আধুনিক হিন্দুধর্মের আদি রূপ। মানুষ কে শৃঙ্খলা বদ্ধ করা , তাদের সঠিক শিক্ষা দেওয়াই ছিল এই ধর্ম প্রবর্তনের উদ্দেশ্য।
উপমহাদেশের একাধিক স্থানীয় ধর্মমত একত্রে হিন্দুধর্ম নামে পরিচিত।
ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে, লৌহযুগ থেকে ঘটতে থাকা ভারতের ধর্মবিশ্বাসের নানা বিবর্তন এই ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এই মতের উৎস আবার ব্রোঞ্জযুগীয় সিন্ধু সভ্যতা ও তৎপরবর্তী লৌহযুগীয় বৈদিক ধর্ম।
খ্রিষ্টীয় প্রথম শতাব্দীর পর ধীরে ধীরে ভারতে বৌদ্ধধর্মের পতন ঘটলে বৈদিক ধর্মের নবজাগরণের রূপে ধ্রুপদি হিন্দুধর্মের উত্থান ঘটে।
মানুষের, আকাঙ্ক্ষা, ক্রোধ, অহংকার, লোভ ইত্যাদি আন্তরিক আবেগগুলিকে সংযত করাই এই ধর্মের মূল মন্ত্র।
বৈদিক ধর্মের পূর্বে সিন্ধু সভ্যতা খ্রি: পূ: ৩৩০০ থেকে ১৩০০ অব্দ পর্যন্ত স্থায়ী হয় । খনন কার্যের ফলে কিছু শিব ও নটরাজ মূর্তি পাওয়া যায়, যে নটরাজ মূর্তির সাথে আধুনিক নটরাজ মূর্তির অদ্ভুত মিল । এতে বোঝা যায় মানুষ যখন থেকে সভ্যতা লাভ করে তখন থেকেই বিভিন্ন বিপদের মোকাবিলা করতে পূজার্চনা করত।
জৈন ধর্ম - "জৈন" শব্দটি এসেছে সংস্কৃত "জিন" (অর্থাৎ, জয়ী) শব্দটি থেকে। যে মানুষ আসক্তি, আকাঙ্ক্ষা, ক্রোধ, অহংকার, লোভ ইত্যাদি আন্তরিক আবেগগুলিকে জয় করেছেন এবং সেই জয়ের মাধ্যমে পবিত্র অনন্ত জ্ঞান (কেবল জ্ঞান) লাভ করেছেন, তাঁকেই "জিন" বলা হয়। "জিন"দের আচরিত ও প্রচারিত পথের অনুগামীদের বলে "জৈন"। জানা যায় খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় বা চতুর্থ সহস্রাব্দেও জৈনধর্মের অস্তিত্ব ছিল। সিন্ধু উপত্যকায় পরবর্তী প্রস্তরযুগীয় একাধিক বৃহদাকার শহরের ধ্বংসস্তুপ থেকে প্রাপ্ত প্রত্নসামগ্রীগুলি পর্যবেক্ষণ করে হেইনরিক জিমার এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন।
বৌদ্ধধর্ম বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্মসমূহের অন্যতম। সিদ্ধার্থ গৌতম এর প্রবর্তক। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে তাঁর শিক্ষা ও উপদেশকে কেন্দ্র করে এ ধর্মের উদ্ভব ঘটে। সিদ্ধার্থের জন্ম ৫৬৩ খ্রিস্টপূর্ব।
এটি এখনও বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এটি একটি উচ্চমার্গীয় আধ্যাত্মিক শৃঙ্খলা ও মহৎ জীবনব্যবস্থা, যা সূক্ষ্ম নীতিবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
খ্রিস্টধর্ম একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম, যা মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহাসিক গালীল অঞ্চলের ধর্মপ্রচারক নাসরতের যিশুর জীবন ও শিক্ষার উপর ভিত্তি করে খ্রিস্টীয় ১ম শতকে উৎপত্তি লাভ করে। খ্রিস্টধর্ম ও সূক্ষ্ম নীতিবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। দুর্গতদের ত্রান ও উদ্ধার ও মানুষের মধ্যে ভালোবাসা সঞ্চারের জন্যই এই ধর্ম প্রবর্তিত।
ইসলাম একটি একেশ্বরবাদী এবং আব্রাহামিক ধর্ম; ইতিহাসগতভাবে এর উৎপত্তি ৭ম শতকের শুরুতে মক্কায়, এবং ৮ম শতক নাগাদ উমাইয়া খিলাফত পশ্চিমে ইবেরিয়া (স্পেন) থেকে পূর্বে সিন্ধু নদ পর্যন্ত বিরাট অঞ্চল জুড়ে সম্প্রসারিত হয়। ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা ও শৃঙ্খলা ও সৎকর্মশীলতার ওপর জোর দেওয়া হয়।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours