শঙ্খ বাজিয়ে রেখেছি,তুমি ক্লান্তির তপ্ত ছায়া ছুঁয়ে আসবে! অভিমান কি এতোটাই বড়ো, যে জর্জর বন্ধনে অনাথিনী স্ফীত অপমান তোমায় পান করতে হবে!! দিগমীর স্তন্যপান করেই তো কেটেছিল তোমার শৈশব, আর প্রাপ্য আদর ভরে ঘুমিয়েছিল প্রিয় কোল, তবে কি জন্মান্তর!! ডুবরি হয়েই তো তুমি ডুবেছিলে জলে, তবুও তুমি যথার্থ।
তুমি বলেছিলে অনাদর তো মস্ত স্বাধীনতা৷ স্বাধীনতা মুক্ত করে প্রাণ৷ বয়সের ভার কমিয়ে যেটুকু পাওয়া যায়, তাই তো সামগ্রীর মূল্য - আগলে নিতে হয় সবুটুকু। বন্ধনহীন শিশুর তো অভিমান আহুতিমন বলো!! ও গো কবি!! তুমি যে আমার পুরুষযাত্রাপথ। খননশেষে ইতিহাস ছুঁয়ে কুয়াশা ভেজা আলিঙ্গন যেন মধ্যমার মুদ্রা।সেইখানেই তো নতুন বৌঠান। জলস্তম্ভ কেঁপে উঠতেই যৌবনের ভরা৷ ব্যথা আর প্রজন্মের মানী আহ্বান। দুঃখের বেদনা ছেড়ে অন্তিম শ্বাস, এই বুঝি উঠে এলো সম্ভাবনার উৎসমুখ।
তুমি বেদনাক্লিষ্ট পথে যেন বীজের শরীরে অনাগত বৃষ্টি৷ প্রাকৃতীয়তা কি কম বলো!! ঘুড়ি ওড়ানো, মাছ ধরা, নৌকা বাওয়া, লাঠি সড়কি খেলা, ও তো তোমার শখের নয়, তরঙ্গ সুখে পিপাসার আঁখি৷ গোরাই এর বুকে অপেক্ষা যেন ফুরাচ্ছে না, এ আমার কাছে লোলুপ প্রস্তর মাদকতা।
তুমি তো ভুলে যাও নি সেই মীরা বোনের কথা। আহা! আমি যে মেয়ের জাত, তোমার ছোটো বোনের কথা ভুলতে পারি! তোমার জীর্ণ কায়ায় তখন ভরা কোটালে অভ্যাস জেগে ওঠা, জলশ্বাস বলে মনে হয়। একটু বৈপরীত্য বলেছি!! ক্ষমা করো!! তুমি যে পরম আমার, তরলের উপাখ্যানে ফিরিয়ে দিতে পারি না আমার ঢেউমন্থনের নাবিককে।
আর তোমার সেই পৌঢ়ত্ব পাপ্তি, আর আগলে রাখা প্রাণের হিল্লোলে মনটা যে শিশু করে দেয়৷ শূন্যবোধে প্রত্যাশা ভরেই আত্মনির্ভর দেহ। ভালোবাসা তখন আশ্রয় হয়ে যায় যে, অনেকটা বর্ষাপ্রবাহের কাদার মতো। স্থির হবে না জেনেও, দাঁড় টানা বৈভব। ছায়াময় ইন্দিরা দেবীর চিঠি, ও তো জবাবী ফসল। আচ্ছা কবি!! বালুকাময় পথে নদী প্রবাহ কি স্নেহময় হয়!! তুমি বলো না, আত্মীয়তা আর পারিবারিক দুই শব্দের কতো পার্থক্য।
তোমার যে সাধনব্রত, পূর্ণাঙ্গের গতিতে নিঃশ্বাস ত্যাগ, আহা!! নিখাদ সোনা। কিন্তু দীনেন্দ্রনাথ, দ্বিপেন্দ্রনাথ সেই ব্রাত্য!! প্রাণমন ঢালা আশ্রমে কতো সমর্পণ, সুদক্ষ শিক্ষানবিশ তুমি আমার। উত্তীর্ণের বর্ণগন্ধীতে নীরস মরুভূমি সে কি সাকার হতে পারে!! অক্লান্তের ঔদার্য ফসল প্রতিধ্বনিত হয় তোমার কানে, আনন্দ বাহন মনে হয়।
অনাত্মীয় নয়, আত্মীয় করেই তো ভাবের ঘরে মনের বাসনা আমার৷ সজল মেঘে আমার আত্মীয় তো প্রাকৃতীয়তা। একবার গ্যেটের মতো করে বলি, " More light!! more light and more space. "তুমি বললে তুমি একা। আমরা সকলেই একা কবি। চালনা তো অনেক করেই, মনের কথায় চালিত হতে পারে কয়জন!! সম্পর্কের বাঁধনে অভিমান রেখে মালা বদলটা না হয় একটু অবহেলায়, তাই বলে এতো অভিমান!! পাখির মতো ভাবো নিজেকে। এই মস্ত আকাশ তোমার; আমার মতো পাঠক আছে, এক আকাশ বুকে ভিড়হীন দিগন্ত একান্ত তোমার৷ সময়ের কথক হয়ে গল্প ভাবি মায়া কি এতো সহজ গো!! তাই তো তুমি আমার মূল্য বোঝো। নিরুপায় গতির মুখে খিদে ভাঙা পণ, ও দুঃখ আমায় দাও। তুমি যে একক, আমার নমস্য। এক একক বুকের আত্মীয়জাল কি তোমার নয়!! ও নির্জন সন্ন্যাসী বুকটা আমায় দাও।। আমি বৈরাগী হবো, আতর মাখা কায়ার বুকে নিপাট অন্তরঙ্গ.. একান্তে তোমার ।।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours