জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:
সালকিয়া
প্লেনামে, 'বিপ্লবী হওয়া' শব্দটার সাথে - হয় 'বারুদের গন্ধ' নয়তো
'সরকারীয়ানা' ডুবে যেতে দেওয়ার কারনেই, শুধু যে 'বিপ্লবী-গনপার্টীর'
'বিপ্লবী' সত্বাটা উধাও হয়েছে তাই নয়, ভাবের আকাশ ক্রমাগত 'অসচ্ছ' হয়েছে।
-----
এই অসচ্ছতাই, সমাজের ক্ষমতালোভীদের, অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি এবং শেষ
পর্য্যন্ত, ভারতীয় জনসত্বা যে একটা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির সমন্বয়, সে কথাটার
বিন্দুবিসর্গ জ্ঞান না নিয়ে, যারা শাসনে এসেছেন, তারা ক্রমাগত বিজ্ঞান থেকে
অধিবিদ্যায় আশ্রিত হয়ে যাচ্ছেন।
----- এইভাবে
ইতিহাসবোধ এবং বিজ্ঞানহীনতার বিপরীতে, মানুষকে জ্ঞান এবং সংস্কৃতির মেল
বন্ধনের বিপ্লবী রাজনীতিতে টেনে এনে, ভাবজগতের আকাশকে স্বচ্ছ রাখার, শ্রমিক
উদ্যোগ যেমনভাবে দুর্বল হয়েছে, তেমনভাবেই 'বিকৃতির পরিবেশটা তিল তিল করে
নির্মান হয়েছে।
এই পরিবেশের
বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে, জ্ঞানের অখন্ড সত্বাটি খন্ড বিখন্ড করে দেওয়ার ,
বিশ্বউদ্যোগে ভারতীয় উদারবাদী রাষ্ট্র নেতার ঝুকে পরার কারনে। সব থেকে
বিপদজনক ঘটনা যা ঘটেছে, তা হোল -
শুধু শ্রমিক আন্দোলনই যে, ক্রমে 'জ্ঞানের উন্মুক্তির' বিষয় থেকে সরে এসে,
'শরীরের ক্ষুদা মুক্তি সর্বস্বতায় ফিরে এসেছে তাই নয়
-----
যদি সাম্যবাদী আন্দোলন এবং তার শাখাপ্রশাখার উদ্যোগ গুলিকে চিহ্নিত করা
যায়, সেগুলিও 'হয় শরীর সর্বস্বতা' কিংবা 'সরকার সর্বস্বতার হাত ধরেই চলার
চেষ্টা করেছে।
-------পরিনামে, ভাবের আকশে যে জ্ঞান
তার অখন্ড সত্বা থেকে পরিত্যক্ত হয়েছে, তাই নয়, প্রয়োজনীয় প্রতিশেধক নষ্ট
হয়ে যাওয়ায়, শুধু যে ছত্রিশ কোটি দেব দেবী কিংবা কয়েককোটি 'গুরুর'
আবির্ভাবে 'বৌদ্ধিক' যৌগ্যতাকে ক্রমে আধিবিদ্যার দিকে ঠেলেছে তাই নয়,
ভাবজগতে
আগ্রাসী জন্তু-জানোয়ারের আবির্ভাব ঘটিয়েছে। বিষয়টা দলত্যাগি প্রাক্তন
বিজেপি অর্থমন্ত্রী সুন্দর বুঝিয়েছেন। তিনি নাকি তার সাম্প্রতি প্রকাশিত
পুস্তকে নাকি উল্লেখ করেছেন, রাজনীতি এখন জংগলের রাজত্ব, অনেক
বাঘ-ভল্লুকের দখলে।
কথাটা না বোঝার কারন নেই,
জলযখন
অপরিষোধিত হয়ে যায়, তা যে কারনেই হোক না কেন, সেখান ছোট মাছের সাথে সাথে
তিমি হাংগরদের আনাগোনাও বিপুল যেমন হবে, তেমনি যে যেমন খাদ্যের যোগান পাবে,
সে রকম মাছ আসবেই। ইলিশ মাছের কিংবা বোয়াল মাছের খাবারেরো স্বতন্ত্রতা
রয়েছে অন্যদের তুলনায়।
এখন
শ্রমিক আন্দোলনের অগ্রবর্তী বাহিনীও যখন,কাশ্মীরে ৩৭০, কিংবা অর্থনৈতিক
সংস্কারকে এড়িয়ে গিয়ে, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুশাসনকে আঘাত অথবা একটি
বহূজাতিক দেশে, একটি বিশেষ ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার কথা যখন উঠে এবং তার সাথে
যখন বারংবার ব্রহ্মন্যত্বকে নতুন করে চাগিয়ে তোলার সাথে সাথে পশ্চাতপদ
জনগোষ্টি গুলির উপর আক্রমন চলতে থাকে -
------
একপ্রান্তে বুঝতে হবে, জাতিগুলির বৌ্দ্ধিক এবং আত্মমররায্যাদের অবস্থান
ইতিমধ্যে তলানীতে ঠেকেছে অন্যপ্রান্তে সমাজে সাধারনভাবে সাম্যের প্রবাহ
শক্তিশালী হলেও, সাম্যবাদী বিশেষ করে শ্রমিক আন্দোলনের 'বৌদ্ধিক সত্বার'
বিপর্য্যয়, বিপুলভাবে। এই দুই ব্যাধীরই প্রকোপের মাত্রাকে যদি সমাজে
'নারীত্বের' মর্য্যাদায় মানদন্ডে বিচার করা হয়, তবে সাম্প্রতিক কালে
রাজস্থানের কোন একটি ছোট শহরে একটি তরুনীর যে মর্মন্তুদ ঘটনা সংবাদে এসেছে
তা সামাজিক ভাবাকাশের পচনের চালচিত্রটাই স্পষ্ট করবে।
--------
দুই বান্ধবী মিলে বিকেলে এক মন্দিরে যাচ্ছিলো। পথেই, এক রোগ, একজনকে
'বলাৎকার' করে। মেয়েটি ত্রাসের কারনে কার্য্তঃ বিবস্ত্র অবস্থাতেই দৌড়ুতে
থাকে। ...।। এসব ঘটনা থেকেও, সমাজের নিরুদ্বেগ অবস্থানটাই পরিস্থিতিটা
বুঝিয়ে দেয়।
যারা সমাজ বিজ্ঞানকে, সাধারন ইতিহাস এবং প্রকৃ্তি জগতের বিবর্তনের ধারার সাথে এক অভিন্ন দৃষ্টিতে
------
এগুলিকে দেখতে অস্বিকার করেছেন, তার মানবেনই না, জ্ঞন এক থেকে অন্য শাখায়
বিখন্ডিত হয়ে, সে যেমনভাবে উলংগ চেহারা পাচ্ছে এবং এর বিপরীতে ইতিহাসকে
বিজ্ঞনের উভয় ধারায় বিকশিত করার নামই 'বিপ্লবী সত্বা' তাদের অন্য কিছু বলা
যেতে পারে কিছুতেই সাম্যবাদী বলা যাবে না।
-----
তারাই বিপ্লবী যারা জ্ঞানের উল্লেখিত অখন্ড সত্বার উদ্ঘাটন করাই নয়, অখন্ড
এবং খন্ডিত সত্বায় - সমাজ , সংস্কৃতি এবং পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্যেই যে
সাম্য এবং ফ্যাসিবাদ নিজেকে অন্য থেকে পৃথক করছে
----- সে সব গুঢ় সত্যকে এক লহমায়, উদগাঠিত করতে সক্ষম। (ক্রমশ)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours