জীবন রায় প্রাক্তন, সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:
জেনে-বুঝে
সভ্যতা বিনাশে, ইতিহাস সমাপ্তির পথকে, অথবা সভ্যতার সন্ধানে
ভূত-ত্রুটীর অতিক্রমনে নতুন ইতিহাসের উন্মোচনে, ক্রম-বিস্ফোরিত
যন্ত্রনাদায়ক পথকে বেছে নেওয়া হবে?
----- কাগজে নয়,
কাগজে কলমে এবং ময়দানী অবরোধে,জবাবটা কারখানা/অফিস গেটে এবং খনি মুখে নিয়ে
যাওয়াটাই - আজকের দিনে মানুষের কাছে, সাম্যের দায়বদ্ধতাকে বুঝিয়ে দেওয়াই
সাম্যবাদী দলগুলির কাজ। বাকি দায় সংগঠিত শ্রমিক শ্রেনী এবং মানুষের।
-----
এই দায়বদ্ধতা বুঝতে গিয়েই - এ দেশের গনতান্ত্রিক আন্দোলনেই নয়, ২০১৯ এর
নির্বাচন এ দেশের সাংবিধানিক শাসনে, ইতিমধ্যেই যে প্রতিবিপ্লব নিয়ে
এসেছে, সে কথাটা ভালো করে বুঝিয়ে দিতে হবে। ইতিহাসের এই ভয়ংকর বাঁককে,
সাম্যবাদী দলগুলি কিংবা শ্রমিকদের মধ্যেই নয়, দেশের গনতান্ত্রিক সত্বার
আনাচে-কানাচে, যেখানেই কিঞ্চিৎ পরিমানো সাম্যবোধ বিরাজমান পৌছে দিয়েই
প্রতিবিপ্লবকে সংযত করার সুযোগ দেবে।
------
বিষয়টিকে চরম আন্তরিকতার সাথে, শ্রমিক সাধারন এবং মানুষের অন্তরে -
কার্য্যকারন সম্পর্ক সমেত বোঝাতে হবে, এবং প্রতিবিপ্লবকে যেমনভাবে
প্রাতিষ্ঠানিক করা হয়েছে, তার থেকেও গভীরতায় গিয়ে আগতপ্রায় বিপর্য্যয়ের
সম্ভাবনাগুলিকে, ইতিহাসের নিয়েমে প্রাতিষ্ঠানিক করার চেষ্টা নয়, পরম
বিক্রমে কাজটা সমাপ্ত করতে হবে। মানুষকে বুঝতে হবে, দেশের সাংবিধানিক
এবং সংসদীয় ব্যবস্থা ভেংগে যাবে বলে, বোঝানোটায় ইতি টানা যাবে না।
কার্য্যতঃ বিপর্য্যয়কর হলেও, সেই বিপর্য্যয় যে নেমে এসেছে, সেটাকেও বোঝাতে
হবে।
কী করে তেমনটি ঘটলো? এতোকাল ভোটের অধিকারকে জীবিকার অধিকার এবং চিন্তনের অধিকারের সাথে একাত্ম করে দেখার অধিকারটি
মানবিকতা
এবং সানবিধানিক অধিকারের সাথে একাত্ম দেখতেই শেখাটা ২০১৯ চুড়মাড় করে
দিয়েছে। কোন সংসদীয় ব্যবস্থাকে যে লেনিনীয় মানদন্ডে পরিমাপ করতে শেখানো
হয়েছে, সেই মনদন্ডে আজকের ভারতীয় সংসদকেক, লেনিন 'শুয়োরের খোয়ার'
ব্যতিরেখে বেশী কিছু বলতে পারতেন না। অন্যপ্রান্তে
-------
সংসদীয় কাঠামোর মধ্যেই যে সব প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলির
রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে জ্ঞানধর্মীতার সব প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাকেই
বিজ্ঞান থেকে সমাজ বিজ্ঞানর অভিমুখের উল্টো পথে যেভাবে চালিত করা হয়েছে, সেখানে,
মেহনতি এবং মেহনতের বাজারে যারা অপেক্ষা করছেন, তাদের জীবিকার বিপত্তি কিংবা নারীদের বানিজ্যিক ব্যবহার থেকে ব্যক্তিগতকরন তো বটেই,
--- পুরো বোধ জগতটাকেই, অনুমান বা বিশ্বাস ধর্মীতার পথ ধরে, জানোয়ারী প্রবৃত্তিতে বদলে দেওয়ার চেষ্টা হবে।
সেখান
থেকেই বুঝতে হবে, প্রাতিষ্টানিক এবং সংগঠিত শক্তি হিসেবে, মানুষের হাতে,
কারখানা/অফিস ও খনিমুখ এবং তার সাথে, বিগত একশ' বছরের গনতান্ত্রিক ভাব-
সত্ত্বার সঞ্চয়টুকু ব্যতিরেখে, অন্য সব হাতিয়ারই হাত ছাড়া হ্য়ে গেছে।
কাজেই,
------ ইতিহাসকে যদি ইতিহাসেরই জমা হওয়া পচাঁ রক্ত-পুজে চাপা না পরে-যায়, সেকারনে, সাম্যকে কাজ শুরু করতে হবে, নতুন উদ্যোগে।
জ্ঞানের
ইতিহাস ও বিজ্ঞানের উন্মুক্তিতে, অতীতে যে ফাঁকফোপর গুলি আমরা রেখে
গেছি, সেগুলিকে পুরন করার, সর্বোতোমুখী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন হবে।
ইতিহাস
ভেংগে পরাকে যদি আটকে দিতে হয়, তবে সাম্যবদী, উদারবাদীদের টিকে থাকা
অংশগুলি এবং সংগঠিত শিল্পের নেতাদেরকেই ইতিহাসের প্রতি তার দায়বদ্ধতায়
এগিয়ে আসা প্রয়োজন হবে। সেখানে ইতিহাসের অভিমুখের স্বার্থেই ইতিহাসের
পুরো অতীতটারই পুনরায় পর্য্যবেক্ষনে নিয়ে আসা প্রয়োজন হয়ে।
সেটা ঘটাতে হবে, শ্রমের বিবর্তনের ধারার সাথে সাথে মানবিকতা এবং সাম্যবোধের বিকাশের ইতিহাস বেয়ে।
এই
সুত্র ধরেই যখন পাতি পাতি করে বিশ্ব ইতিহাস, তার বিবর্তনে শ্রমিক
আন্দোলনের ভূমিকা, সেই ভূমিকাকে সামনে রেখে ভারতীয় ইতিহাস এবং সেখানে
শ্রমিক আন্দোলনের পর্য্যবেক্ষনের কাজটা পূনমূল্যায়ন করা যাবে
-----
তখনই নতুন পরিস্থিতিতে এদেশের শ্রমিক আন্দোলনকে নতুন পৃষ্ঠভূমিতে দাড়
করানো সম্ভব হবে। এই পথেই সাম্য নিশ্চিত হবে, ইতিহাসের কিংবা সভ্যতার
পরিসমাপ্তি ইতিহাসের নিদান নয়
----- ইতিহাসের পথকে
চিহ্নিত করাটাই ইতিহাসের উত্তোরন। সেখান থেকেই ভারতক এবং বিশ্ব ইতিহাসের
গতিমুখে ভারতীয় সাম্য তথা শ্রমিক শ্রেনীর ভূমিকাটি চিহ্নিত হবে। (ক্রমশ)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours