প্রিয়াঙ্কা সরকার, ফিচার রাইটার, বর্ধমান:
"আত্মানং রথিনং বিদ্ধি
শরীরং রথমেব তু..। "
প্রস্তর
নিদর্শনে রথের প্রাচীনতা লুকিয়ে আছে বাংলা তথা ভারতের নানা স্থানে।
খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী প্রস্তর নির্মিত রথ রয়েছে গিড়দুয়ারের
কাছে৷ বলতে ইচ্ছা করে,..
মনে হয়, যেন মনে পড়ে
যখন বিলীনভাবে ছিনু ওই বিরাট জঠরে .
এই কথাগুলো মনে করলেই অতীতে যেতে ইচ্ছা হয়।
তবে
আর কোথায় কোথায় এমন পুরাতত্ত্বের রথের নিদর্শন আছে? মহাবলীপুরমের রথ
টেম্পেল দেখা যায়। দাক্ষিণাত্যের বিজয়নগরে হাম্পির বিঠঠালা মন্দির চত্বরে
নকশাচিত্রিত রথ দেখতে পাওয়া যায়৷ ইতিহাস যদি রথের কাল নির্দেশ করতে বলে,
তবে - বলতে হয়, (১৩৩৬- ১৪৮৫)সঙ্গম রাজবংশ
(১৪৮৫ - ১৪৯১) সালুভ রাজবংশ, ( ১৪৯১ - ১৫৭০) তুলুভ রাজবংশ, (১৫৭০ - ১৬৪৭) আরাভিদাস রাজবংশ।
প্রথমে
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই রথের ধারণা পরিলক্ষিত হয়। ইতিহাস বলছে
জৈনধর্মের সঙ্গেও রথের সম্পর্ক রয়েছে। জৈনাচার্য হরিসেন রচিত "বৃহৎ কথা কোষ
" গ্রন্থের ১৩১ তম অধ্যায়ের লিখিত আছে যে, পুণ্ড্রবর্ধনের কোটিপুর নগরের (
বর্তমানে বাণগড়) রাজা ছিলেন "পদ্মরথ "। সোমশর্মা নামে এক ব্রাহ্মণ তাঁর
আশ্রিত ছিলেন। সোমশর্মার পুত্র ভদ্রবাহু ছিলেন জৈনধর্মের অধিনায়ক। রাজা
পদ্মরথের নামের সঙ্গে " রথ " শব্দ যুক্ত রয়েছে৷ যদিও রথের ধারণা নিশ্চিত
তারও আগের। প্রচ্ছন্ন ভাবে হলেও এদের মধ্যেও রথের ধারণা লুক্কায়িত ছিল।
বলতে সাধ হয়,
"আলোকের থরথর শিহরণ চমকি চমকি
জ্যোতির্ধারা দিল প্রবাহিয়া। "
আর্যযুগে
রথ ছিলো যান বিশেষ। সময় তো স্রোতের গভীরে সুনির্দিষ্ট ভাবেই প্রবাহিত হয়।
রথির পার্থক্যহেতু রথকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
দেবরথ.. "রথযাত্রা, লোকারণ্য মহা ধুমধাম
ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম "।
অবতার রথ বলতে, অবতারগণ কার্যকালে যে রথ আরোহণ করেন, সেই রথ অবতার রথ।
সোজারথ ও উল্টো রথ।
ভাবুক মনে প্রেমময়ী রাধারাণী মাধূর্যময় শ্রীক্ষেত্র জুড়েই রথ আয়োজন। হৃদয়ের গহীনে শূন্য আঁধারের গূঢ় নাড়ী বলে যায়,
" উঠ স্বর্গরথে - থাক বৃথা আলোচনা
নিদারুণ ঘটনা..। (ক্রমশ)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours