সুমনা ভট্টাচার্য বসুঠাকুর, সমাজকর্মী, কলকাতা:
ডঃ
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দাবী ছিল; “ এক নিশান, এক বিধান, এক প্রধান ”
থাকবে কাশ্মীরে । ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দাবী মানতে ও জহরলাল
নেহেরুর সেই ভুলের খেসারত মেটালেন মোদী সরকার ।যথাযথ সম্মান পেলেন স্বাধীন
ভারতের প্রথম শিল্পমন্ত্রী তথা ভারতীয় জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা তথা বাঙ্গালী
হিন্দুদের জন্য পূর্ব পাকিস্তানকে ভেঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সৃষ্টিকারী এবং
কাশ্মীরকে
ভারতের অভিন্ন অঙ্গরাজ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আজীবন আন্দোলনকারী
ভারত কেশরী ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। কাশ্মীরে আর্টিকেল ৩৭০ ও ৩৫এর
বিরোধিতা করে ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী প্রথম বলেছিলেন , যে এক দেশে দুই
আইন, দুই প্রধান ও দুই নিশান চলবে না। জম্মু ও কাশ্মীরে আর্টিকেল ৩৭০ এর
বিরোধীতা করে , ১১ই মে ১৯৫৩ সালে ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী শ্রীনগর
প্রবেশ করলে , তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরে এক রহস্যজনক পরিস্থিতিতে
শ্রীনগরেই তাঁর মৃত্যু হয় ২৩শে জুন ১৯৫৩ সালে।
অভিযোগ আছে , নেহেরু ও শেখ আবদুল্লার চক্রান্তের জেরে কাশ্মীরেই রহস্যময়ভাবে খুন করা হয়েছিল তাঁকে।
স্বাধীনতা
পর ১৯৪৯ সালে নেহেরু ও শেখ আব্দুল্লাহর মধ্যে বোঝাপড়া হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া
হয়, যে সংবিধানে ৩৭০ ধারা যুক্ত রাখতে হবে যেটা জম্মু-কাশ্মীরে লাগু করা
হবে। সেই অনুযায়ী সুরক্ষা, বিদেশমন্ত্রণালয় ও যোগাযোগ ব্যবস্থা কেন্দ্র
দেখাশোনা করবে । বাকি সবকিছুই রাজ্যের হাতে থাকবে।
৩৭০
লাগু থাকার অর্থ ভারত ও জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধান আলাদা হবে। শুধু এই নয় ,
জম্মু- কাশ্মীরের এর লোকজন ভারতের অন্য রাজ্যে জায়গা কিনতে পারলেও অন্য
রাজ্যের লোকজন জম্মু-কাশ্মীরে জায়গা কিনতে পারতো না। ধারা ৩৭০ থাকার জন্য
জম্মু-কাশ্মীর যে বিশেষ নিয়ম লাগু হতো-
১)বাসিন্দাদের দুটি নাগরিকত্ব , রাষ্ট্রীয় পতাকা আলাদা ।
২)বিধানসভার কার্যকাল ৬ বছর ।
৩)ভারতের কোন আইন কানুন জম্মু-কাশ্মীরে লাগু হতো না ।
৪) ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বা আদেশ জম্মু-কাশ্মীরে প্রযোজ্য হতো না ।
৫) কাশ্মীরে হিন্দু ও শিখরা ১৬% সংরক্ষণ পেত না ।
৬)মহিলাদের ওপর শরীয়ত আইন লাগু হতো ।
৭)
জম্মু-কাশ্মীরের এর কোনো মেয়ে অন্য রাজ্যের ছেলেকে বিয়ে করলে ওই মহিলার
জম্মু-কাশ্মীরের নাগরিত্ব ও সম্পত্তির উপর অধিকার সমাপ্ত হয়ে যেত । এই
ধারার জন্য বহু হিন্দু নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত রয়েছে । বিশেষ ক্ষমতার উপর
ভিত্তি করেই কাশ্মীরকে সম্পূর্ণ হিন্দু করা হয়েছে। তবে এখন ধারা ৩৭০
বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
করে দেওয়া হয়েছে। ফল স্বরূপ এবার থেকে ভারতের অন্য রাজ্যের লোকজন
জম্মু-কাশ্মীরে জায়গা কিনতে পারবে। একই সাথে বাকি নিয়মগুলোও ভঙ্গ হবে |
প্রধানমন্ত্রী
জহরলাল নেহেরুর একটা ভুল দেশকে ৭০ বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ফেলে
রেখেছিল । আজ তা শুধরে নিলেন মোদী সরকার । সরকার জম্মু-কাশ্মীরকে তিন ভাগে
ভাগ করে দিয়েছে । জম্মু , কাশ্মীর ও লাদাখকে ভাগ করে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে
পরিণত করা হয়েছে। এবার থেকে লাদাখ একটা আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং
জম্মু-কাশ্মীর একটা আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours