ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য,ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ
কোটা গ্রামের আর একটি বৈশিষ্ট রাঢ় বঙ্গে প্রথম ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু হয় কোটা গ্রাম থেকে! তারই নিদর্শন আজও রয়েছে কোটা গ্রামে! ভগ্ন মসজিদটি প্রায় এক হাজার বছরের প্রাচীন! মারাঠী বর্গীনেতা ভাষ্কর পন্ডিত এই মসজিদে আক্রমন করলে স্হানীয় মুসলমানদের সাথে খন্ডযুদ্ধ হলে মসজিদটির প্রভুত ক্ষতি হয়!
কোটা গ্রাম থেকে তিন কিঃমিঃ উত্তর পশ্চিমে সোঁয়াই গ্রাম! গ্রামটি বুদবুদ থানার অন্তর্গত হলেও পানাগড়ের সাথে প্রায় সংপৃক্ত! গ্রামের মধ্যস্হলে রয়েছে গ্রাম দেবতা সোমেশ্বর শিব মন্দির! জনশ্রুতি, সোমেশ্বর শিবের নামানুসারেই গ্রামের নাম হয় 'সোমাই ' পরে অপভ্রংস হয়ে হয় 'সোঁয়াই!
সোমেশ্বর শিব লিঙ্গ প্রতিষ্ঠার সম্পর্কে একটি কিংবদন্তী আছে!
কথিত আছে, বহু বছর পুর্বে এক শিব ভক্ত ব্রাক্ষ্মন শিবলিঙ্গটি নিয়ে কাশীধামে যাচ্ছিলেন! পথে পরিশ্রান্ত হলে সোঁয়াই গ্রামে একটি গাছের নীচে শিবলিঙ্গটি রেখে ঘুমিয়ে পড়েন! দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়, নামে রাত্রির আঁধার কিন্তু ব্রাক্ষ্মনের ঘুম ভাঙে না!পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আর শিবলিঙ্গটি তুলতে পারেন নি! বাধ্য হয়ে রাত্রি যাপন করেন! রাত্রে স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেব তাঁকে স্বপ্নাদেশ তাঁকে সেখানেই প্রতিষ্ঠা করতে! তাই সেই ব্রাক্ষ্মন সেই শিবলিঙ্গটি সেখানেই প্রতিষ্ঠা করেন!
তবে সোমেশ্বর শিবের বর্তমান সেবাইতগনের দাবী তাঁদের পূর্ব পুরুষ মহাভারত বন্দ্যোপাধ্যায় সোমেশ্বর শিবের প্রতিষ্ঠাতা এবং তৎকালীন বর্ধমানের মহারাজার অকৃপন দান এবং আন্তরিক প্রয়াসে সোমেশ্বর শিবমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়! বর্ধমানের মহারাজা শিবের নিত্য পুজার জন্য মহাভারত বন্দ্যোপাধ্যায়কে পঞ্চাশ বিঘা নিষ্কর জমি ও বসতবাটী দান করেন!
সোমেশ্বর শিবলিঙ্গের পাশেই মন্দিরে গর্ভগৃহে আরও একটি ছোট শিব লিঙ্গ আছে ইনি ' পাতালফোঁড় শিব ' নামে খ্যাত,
প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে ধুমধাম সহকারে শিবের গাজন উপলক্ষে মেতে ওঠে সারা গ্রাম! মন্দির প্রাঙ্গনে মেলা বসে! চড়কে ঘোরার জন্য ভক্তরা বান ফোঁড়ে, তিনি কাটে, সোমেশ্বর শিবের জয়ধ্বনীতে গ্রামের আকাশ বাতাশ মুখরিত হয়!
(চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours