old temple
ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য,ফিচার রাইটার,দুর্গাপুরঃ চরক,সশ্রুত,নিদান আয়ত্ব করতে হলে সংস্কৃত জানা আবশ্যক! সেই ঞ্জান নিজেই দিতে পারতেন সৌরীন্দ্র নাথ কিন্তু নিজে চতুষ্পাঠী চালান! তাই পুত্রটিকে রেখে এসেছিলেন ত্রিবেনীতে জগন্নাথ তর্ক পঞ্চাননের নিকট! সংস্কৃত শিক্ষান্তে জগন্নাথ তর্ক পঞ্চাননের ব্যাবস্হাপনায় তাঁর প্রিয় শিষ্য রূপেন্দ্রনাথ আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অধ্যয়ন করতে চলে যান বর্ধমানভুক্তির সরগ্রামে! সরগ্রামের স্বনামধন্য কবিরাজ আচার্য গোকুলানন্দের পিতামহর নিকট দীর্ঘ সাত বছর আয়ুর্বেদ শাস্ত্র, চরক,সুশ্রুত ও নিদান আয়ত্ব করেন! অধ্যয়ন সমাপ্ত করে দীর্ঘ পনের বছর পর স্বগ্রামে প্রত্যাবর্তন করেন রূপেন্দ্রনাথ! তখন তাঁর বয়স পঁচিশ বছর,!ইতিমধ্যে রূপেন্দ্রনাথের পিতৃবিয়োগ ঘটেছে! স্বগ্রামে ফিরে পিতৃশ্রাদ্ধ সমাপন করলেন! ঘরে তখন তিনটি প্রানী, তিনি তাঁর বিধবা পিসীমা জগন্ময়ী আর তাঁর কন্যা কাত্যায়নী! পিশেমশাই জীবিত থাকাকালীন তাঁর জগুপিসীমা কন্যাসহ বাপের বাড়ী চলে এসেছিলেন!
কারনটা তখনকার দিনে অতি সামান্য! তাঁর স্বামী বৃদ্ধ বয়সে এক পঞ্চদশীকে বিয়ে করে ছিলেন!সেই সময়ে এটা অতি তুচ্ছ ঘটনা!কুলীন বামুন আড়াই কুড়ি বয়সে দ্বিতীয় পক্ষ করল তাও সহ্য না করে বিদ্রোহ করল জগু ঠাকরুন! বাপের বাড়ী ফিরে এলো, এমন কি স্বামীর মৃত্যু সংবাদ পেয়েও শ্বশুরবাড়ী মুখো হননি, বাপের বাড়ীতেই শাঁখা সিঁদুর ঘুচিয়ে কন্যাকে দিয়ে চতুর্থীর শ্রাদ্ধ করিয়েছিলেন! বিপর্যয়টা ছিল বাড়ুজ্জে বংশের রক্তে! নাহলে ভাইপো হবে ' একবগ্গা ঠাকুর ' আর নাতনী ' হটী বিদ্যালঙ্কার '! পিলতুতো বোন বোন কাত্যায়নী রূপেন্দ্রনাথের থেকে দশ বছরের ছোট! ন' বছর বয়সে তার বিয়ে হয়! বিয়েটা আবছা মনে পড়ে কাত্যায়নীর! অঘ্রানের এক শীতের রাতে নাকে নোলক পরে, চন্দনের টিপ পরে লাল পাড় শাড়ীপরে দাঁড়াতে হয়েছিল ছাতনা তলায়! শঙ্খ আর উলুধ্বনী করে পষ্ট মনে থাকলেও, টোপর পরা গোড়ের মালা পরা লোকটা যে তাকে অগ্নীসাক্ষী করে সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছিল তাকে একবরই সেই ছাতনাতলায় দেখেছিল! 
আজ তার মুখটাও মনে নেই! কিন্তু আজও তার কল্যানে হাতে নোয়া , শাঁখা ধারন করে আছে, নিত্য সিঁদুর পরে সিঁথিতে! ( চলবে)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours