ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ কুসুমমঞ্জরীকে চলে গেছে কুপমন্ডুক সমাজপতিদের তীব্র অসহযোগীতায়! তাই রূপেন্দেরনাথ স্হির করলেন, তিনি স্বগ্রাম সোঁয়াই - এ ফিরে যাবেন! আ ভাবী প্রজন্মের জন্য নতুন যুগের বার্তা নিয়ে! তিনি নারী শিক্ষার জন্য সোঁয়াই গ্রামেই গড়ে তুলবেন নারী শিক্ষানিকেতন! তিনি নিজে এটা বুঝতেন, সোঁয়াই সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষ তাঁকে ভালবাসেন! অনেক বর্ধিষ্নু পরিবারের চিকিৎক হওয়ার সুবাদে তিনি শ্রদ্ধেয়,গ্রামের জমিদার তাঁকে অত্যন্ত ভালবাসেন! তাই তিনি গ্রামে যে বিদ্যয়তনটি গড়ে তুলতে চান, সেটি শুধু মাত্র বালিকাদের জন্য নয়, যুবতী, বিবাহিতা এমনকি বিধবারাও সেখানে অধ্যয়ন করবে!
তবে রূপেন্দ্রনাথ এটা উপলব্ধি করেন, তাঁর মহৎকর্মে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ গোপনে সহযোগীতা করলেও সমাজের স্বার্থান্বেষী, কুপমন্ডুক , কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজপতপদের তীব্র বিরোধিতার সন্মুখীন হতে হবে! তাঁরা মানুষের ভাল বোঝে না, সমাজের মঙ্গল চায় না,শুধু বোঝে অহং, অসার শাস্ত্রবাক্য!
তাই তিনি স্বীকৃত হয়েছেন এই তীর্থযাত্রীদের সাথে জগন্নাথে যেতে! তাঁর উদ্দেশ্য পুরীর মন্দিরে জগন্নাথদেবের দর্শন নয়! পুরীর সমুদ্রতীরে গোবর্ধন মঠের আচার্য শ্রীমৎ স্বামী শঙ্করাচার্য!
শ্রীমৎ আদি শঙ্করাচার্য, ভারতবর্ষের চার প্রান্তে চারটি মঠ প্রতিষ্ঠা করেন! উদ্দেশ্য হিন্দু সমাজকে একসূত্রে বেঁধে রাখা!
দ্বারকায় সামবেদাশ্রয়ী সারদা মঠ, যার ভৌগলিক সীমানা : পশ্চিম খন্ড - সিন্ধু,সৌরাষ্ট্র,রাজপুতনা, ও কাথিয়াবাড়!
বদরীতে, অথর্ববেদাশ্রয়ী যোশীমঠ , ভৌগলিক সীমানা :উত্তরাখন্ড- কুরু, পাঞ্চাল, পাঞ্জাব, কাশ্মীর, কম্বোজ এবং গঙ্গা- যমুনার অববাহিকা অঞ্চল!
রামেশ্বরে, যজুর্বেদাশ্রয়ী শৃঙ্গেরীমঠ, ভৌগলিক সীমানা: দক্ষিন খন্ড- অন্ধ্র,দ্রাবিড়, কর্নাটক, কেরল, ও মহারাষ্ট্র
পুরীতে ঋকবেদাশ্রয়ী গোবর্ধনমঠ, ভৌগলিক সীমানা ; পূর্বখন্ড- অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, মগধ, ও পূর্বাঞ্চল!
ভেষগাচার্য রূপেন্দ্রনাথের মূল উদ্দেশ্য গোবর্ধন মঠের মঠাধ্যক্ষ পূর্বাঞ্চলের শঙ্করাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করে একটি অনুমতপত্র আদায়! আদি শঙ্করাচার্য নিদান দিয়ে গেছেন, চারধামের মঠাধ্যক্ষরা হিন্দুধর্মের রক্ষক ও অবিভাবক! পূর্বাঞ্চলের গোবর্ধন মঠের মঠাধ্যক্ষ শঙ্করাচার্য অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গের হিন্দু সমাজের নিদান দেওয়ার অধিকার আছে!
রূপেন্দ্রনাথকে তিনি একটি ভুর্জপত্রে যদি লিখে দেন হিন্দুধর্মে নারীর শিক্ষার অধিকার আছে, তাহলে,সেটিই হবে রুপেন্দ্রনাথের স্বীকৃতিপত্র! গ্রামে প্রত্যাবর্তন করে নারীশিক্ষার জন্য একটি বিদ্যায়তন প্রতিষ্ঠা করবেন!
(চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours