ভবানী প্রসাদ ভট্টাচার্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ আজ রূপেন্দ্রনাথ নিজ গ্রাম সোঁয়াই- এ ফিরবেন! ভারতচন্দ্র বলেছিলেন," দুজন একসাথে সাত পা হাঁটলে বন্ধুত্ব হয়, কিন্তু সাত রাত একসাথে কাটালে সম্পর্ক কি হয় সেটা বলেন নি!এই কয়েকটা দিনে একে অপরকে জেনেছেন, বুঝেছেন,পরস্পরের মধ্যে তৈরী হয়েছে প্রগাঢ় ভালবাসা তৈরী হয়েছে!ভারতচন্দ্র বন্ধুকে শুনিয়েছেন তাঁর জীবনের নানা কথা!
তাঁর কৈশোরের প্রেমিকা রাধার কথা, গোপনে তাকে বিয়ে করার কথা! তিনি শুনিয়েছিলেন তাঁর জীবন - যন্ত্রনার কাহিনী! রাধাকে গোপনে রাধাকে বিয়ে করার অপরাধে বাড়ীতে তীরস্কৃত হয়ে দেবানন্দপুরে আত্মগোপন, করে বর্ধমানরাজের বন্দীশালা, সেখান থেকে পুরী পলায়ন সন্ন্যাস গ্রহনের চেষ্টা বিফল হলে ফরাসডাঙায় প্রত্যাবর্তন, শেষে কৃষ্ন নগরের রাজসভায়! প্রোষিতভর্তৃকা রাধা আজও বিরহ যন্ত্রনা ভোগ করছে পিত্রালয়ে! অর্ধাহারে অনাহারে!
রূপেন্দ্র তাঁর প্রেমিকা কুসুম মঞ্জরীর গল্প , কিন্তু সযত্নে গোপন করেছেন তাঁর প্রথম প্রেম মৃন্ময়ীর কথা!
ভারত চন্দ্র শুধু বললেন, তোমার সময় কম! তাই নবদ্বীপ কৃষ্ন নগরের অনেক কিছু অদেখা রয়ে গেল তোমার, শান্তিপুর, মায়াপুর! রূপেন্দ্র শুধু বললেন, তীর্থস্হান সস্ত্রীক যাওয়াই উচিত! আর মঞ্জুর ইষ্টদেবতা শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু! তাই তাকে গৌরাঙ্গ দর্শন থেকে কি বঞ্চিত করে উচিত ?
ভারতচন্দ্র বললেন, সত্যিই তোমার হবু স্ত্রী ভাগ্যবতী, সার্থক তোমাদের প্রেম!তুমি শাক্ত হয়েও পক্ষকালের মধ্যে নিরামিষাশী হয়ে গেলে, শুধু কুসুম মঞ্জরী নিরামিষাশী বলে!
রূপেন্দ্র প্রত্যুত্তরে বললেন,তিনি মনে করেন, দাম্পত্য - জীবনে স্বামী স্ত্রীর সমান অধিকার থাকা উচিত! স্ত্রী যেমন স্বামীর সহধর্মিনী ,তেমনই স্বামীকেও স্ত্রীর সহধর্মী , সহমর্মী হওয়া উচিত!
বিদায় বেলায় দুজনেরই হৃদয় ভারাক্রান্ত, ভারতচন্দ্র রূপেন্দ্রকে বললেন, তিনি তাঁদের বিবাহে উপস্হিত থাকতে পারবেন না, কিন্তু তাঁদের দাম্পত্য জীবনের সাফল্য কামনা করে শুভ কামনা জানালেন !
ভারতচন্দ্র তাঁদের আর্শীবাদ জানিয়ে জানালেন, তাঁদের দাম্পত্য জীবন হবে সুখের, তাঁদের সার্থক মিলনে পুত্র সন্তান জন্ম নিলে তার নাম রাখলেন 'আত্মদীপ ' আর কন্যা সন্তান হলে তার নাম হবে 'রূপ মঞ্জরী ' এই সন্তান হবে জগৎ বিখ্যাত....
Post A Comment:
0 comments so far,add yours