ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ
বৃদ্ধা নাম জনতে চাইলে, সে জানায় তার নাম গয়ারাম! বৃদ্ধা আবার জিঞ্জাসা করলেন, " গঙ্গাচরন তোমার কেউ হয়? মুখের আদলটা তার মতোই! গয়ারাম প্রত্যুত্তরে so জানায়, নেদের নেদের বিষ্টুচরনের সেই বিবাহ - বিশারদ কুপুত্রটা? সে মারা গেছে!
আহা, সে আমার জামাই ছিল! গঙ্গাচরনের চোখদুটি উজ্বল হয়ে ওঠে, একপায়ে ভর দিয়েই উঠে দাঁড়ায়, সে তার শ্বাশুড়ীকে চিনতে পারে নি, না পারারই কথা, কারন তার তিন কুড়ি শ্বাশুড়ী, কিন্তু তার শ্বাশুড়ীর তো একটাই জামাই, তাই দাড়ি গোফের জঙ্গল ভেদ করে তাকে চিনতে পেরেছে!
গঙ্গাচরন তার শ্বাশুড়ীর কাছে জানতে পারল, দু বছর আগে তার স্ত্রী মারা গেছে! এই প্রথম বিস্মৃত স্ত্রীর জন্য ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল সে! বৃদ্ধা গঙ্গাচরনের পরিচয় পেয়ে তাকে সসন্মানে ঘোড়ার গাড়ীতে করে বাড়ী নিয়ে গেলেন! উলোর রায়বাড়ীর জামাই আনন্দময়ীতলায় ভিক্ষা করলে সে তো তাঁদেরই অসন্মান!
গঙ্গাচরনের সন্বন্ধী রসিকলাল রায় এলাকার ধনী ও গন্যমান্য ব্যক্তি! তিনি কিছুতেই গঙ্গারামকে বাড়ী আশ্রয় দিতে রাজী ছিলেন না, কিন্তু মনে করলেন এটা উটকো বিপদ, বোন যখন নেই, আর যে ভগ্নী পতিকে কখনো দেখেননি তার প্রতি দরদ কিসের? কিন্তু মায়ের জেদে তাকে , গোয়ালের এক কোনায় থাকার ব্যবস্হা করতে বাধ্য হলেন!
গঙ্গা রামের সন্ধানে কবি ভারত চন্দ্র আর রূপেন্দ্র ঘোড়ার গাড়ীতে করে রসিকলালের ঘরে হাজির হলেন! তাঁদের দুজনকে বাইরের অতিথিশালায় বসিয়ে রসিকলালকে খবর দিলে, তিনি এসে জনতে চাইলেন তাঁদের এখানে আসার কারন কি?
ভারতচন্দ্র নিজের পরিচয় গোপন করে রূপেন্দ্রকে দেখিয়ে বললেন," আমার বন্ধুটি কবিরাজ, আপনি অনুমতি দিলে আপনার আস্তাবলে গিয়ে গয়ারামকে একবার দেখে আসতো..."
কথাটা শুনে ভিরমী খেলেন রসিকলাল, তিনি অবাক হয়ে জানতে চাইলেন," কি ব্যাপার উপযাজক হয়ে গয়ারামের চিকিৎসা করতে এসেছেন? ব্যাপরটা কি? "
রূপেন্দ্র বোঝাল তাঁর বাড়ী বর্ধমানভুক্তির সোঁয়াই গ্রামে, সেখানকার এক ধনী ব্রাক্ষ্মনের কন্যাকে বিবাহ করেছিল গয়ারাম তিনিই নিয়ে যাওয়ার জন্য , অনুরোধ করেছেন! মনে মনে খুব খুশী হলো রসিকলাল , যাক আজ বিদেয় হ'ল!
গঙ্গাচরন ওরফে গয়ারাম প্রথমে সন্দেহ করলেও পরে রাজী হয়ে গেল! যদিও তার শ্বশুর শ্বাশুড়ী বা স্ত্রী কারোকেই মনে করতে পারল না! পারার কথাও নয়!
( চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours