ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ  গুরুগৃহে  শিক্ষা  সমাপন  করে  রূপেন্দ্রনাথ  যখন  বাড়ী  ফিরলেন! তখন  কাত্যায়নী ষোড়শী! যৌবন তার  ভরা  দামোদরের  মতো! বিয়ের  পর  ক্যাত্যায়নীর  আর  স্বামীর মুখ দর্শনের  সুযোগ  হয়নি! নবদ্বীপের  গোআড়ি  গ্রামের  যে  কুলীন  ব্রাক্ষ্মন  সন্তানটি     করুনা করে জগু ঠাকরুনকে  কন্যাদায়  থেকে  মুক্তি  দিতে, বর পন চাদরের  খুঁটে  বেঁধে  বিয়ের  পরদিন  চলে গিয়েছিল  আর  ফিরে  আসেনি!

            এঁরা  ভ্রাম্যমান  কুলীন  ব্রাক্ষ্মন  বিবাহ-ই  এঁদের  পেষা! যজন  যাজন  বা  পূজা  পাঠ  করেন  না! এঁরা  নিজের  ঘরে  একটা  রাত্রিও  বাস  করেন  না! বছরের  প্রতিটা  দিন  প্রতিটা  রাত্রি  নিত্য নতুন  শ্বশুর  ঘরে  বাস  করতেন  অর্থের  বিনিময়ে!আর  প্রতি রাতেই  নিত্য নতুন  নারী  সঙ্গ, কিন্তু  তারা  প্রত্যেকেই  তার  অগ্নীসাক্ষী  করা  স্ত্রী!
              সারা  বছর  সেই  হতভাগীরা  একটি  রাতের  জন্য  স্বামী সঙ্গের প্রতিক্ষায়  থাকে তীব্র  কামনা  নিয়ে!একটি  রাত্রির  জন্য!পরদিন  নগদ  নিয়ে  জামাই  চলে  যায় অন্য কোন গ্রামের  শ্বশুর বাড়ী! এঁদের  নেই  কোন  ভালবাসা, সন্তান  বা  স্ত্রীর  প্রতি  দায়বদ্ধতা! সারা  বছর  ভিন্ন  ভিন্ন  শ্বশুর বাড়ীতে  জামাই  আদর  আর  প্রতি  রাতে  অপরিচিতা ( যদিও  বিবাহিতা  স্ত্রী) তীব্র  কামনামদীর নারীর  সাথে  সহবাস! এখানে  নারীর  রূপ  তাদের  কাছে  বিচার্য  নয়, তার  বাবার  আর্থিক  সঙ্গতি ই  তাদের  বিচার্য! শ্বশুর  আর্থিকভাবে  সচ্ছল  হলে, একধিক রাত্রিও  স্ত্রীকে  ভাত দিত  বিনিময়ে  দক্ষিনা  বাড়তো!এদের  স্ত্রীরা  স্বামীর  সাথে  দুটো  ভালবাসার বা সুখ  দুঃখের  কথা  বলার  সুযোগ  পেত  না! কারন  মেয়াদ  মাত্র  এক রাত্রি, আর যেখানে 'ভালবাসা' ই  নেই   , নেই  সংসার, শুধুই  জৈবিক  তাড়না, আর  আর্থিক  লাভের  হিসাব, সেখানে  ' ভালবাসা ' শব্দটাই  নিরর্থক! এই  কুলীন  ব্রাক্ষ্মনরা  সহধর্মিনীর  সাথে  রাত কাটানোর  জন্য  প্রতি  রাতের  দক্ষিনা  নিত!
           
কাত্যায়নী  মাতুলালয়ে  আশ্রিতা, তাই  তার  জামাই কে  দক্ষিনা  কে  দেবে? তাই  নোএক রাতের  জন্যও  স্বামী  সোহাগের  সুখ  থেকেও  বঞ্চিতা! বিবাহের  সাত  বছর  পরেও  স্বামী  এক  রাত্রির  জন্যও  শ্বশুরবাড়ী  আসেনি, হয়তো  সেই  কুলীন  ব্রাক্ষ্মনের  লাল  খেরো  খাতায় ( যেখানে  স্ত্রীর  নাম  ও শ্বশুরবাড়ীর  ঠিকানা  লেখা থাকতো)  এই  হতভাগিনীর  নাম  ধাম  ইতি  মধ্যেই  অবলুপ্ত  হয়েছে!
(চলবে)



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours