Old temple
ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ  হটী বিদ্যালঙ্কারই ভারত বর্ষের প্রথম মহিলা সংস্কৃত পন্ডিত এবং ' কাশীধামে ' পুরুষ পন্ডিতদের সাথে তর্কযুদ্ধে বিজয়নী হয়ে ' বিদ্যালঙ্কার ' উপাধী আদায় করেছিলেন! আবার তিনিই ভারত বর্ষের সংস্কৃত টোলের প্রথম অধ্যাপিকা! তৎকালে যেখানে মহিলাদের সংস্কৃত অধ্যয়ন করা ছিল নিষিদ্ধ, সেখানে হটীর মতো একজন মহিলার পক্ষে সংস্কৃত অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা খুব সহজ ছিল না! সমাজ ও সমাজপতিদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করা ছিল স্বপ্নের অতীত! তা সত্বেও শুধুমাত্র মনের
জোর এবং দৃঢ় সঙ্কল্প আর লক্ষ্যে পৌঁছানোর অদম্য ইচ্ছাই ছিল এই বাধাগুলি অতিক্রন করার চাবিকাঠি! হটী বিদ্যালঙ্কারকে জানতে, বুঝতে হলে সোঁয়াই গ্রামের ' একবগ্গা ঠাকুরকে জানতেই হবে! সোঁয়াই গ্রামের বাসুদেব সার্বভৌম ( মুখোপাধ্যায়) , মাড়ো রাজাদের রঘুনাথ শিরোমনির খ্যাতি ছিল জগৎজোড়া! কিন্তু রূপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধায়ের কোন উপাধি ছিল কিনা জানা যায় না! তবে সোঁয়াই গ্রামকে কেন্দ্র করে ১০০ কিঃমিঃ পর্য্যন্ত গ্রামগুলিতে তিনি ছিলেন অতি পরিচিত! সবাই তাঁকে চিনতো দুটি অদ্ভুত নামে 'একবগ্গা ঠাকুর ' আর ' ধন্বন্তরী '! প্রথম নামটি গ্রামের মানুষের মুখে মুখে তৈরী কারন তিনি যে পুকুরে তিনি নিত্য স্নান করতেন সেই দীঘিটি অদ্ভুত আকৃত্তির পুকুরটির দুটি বাহু সমান কিন্তু সমান্তরাল নয়, আবার অন্য দুটি বাহু অসমান কিন্তু সমান্তরাল নয়! জ্যামিতিক বিচারে ট্রাপিজিয়াম 'দিঘীটির. তাই নাম ' একবগ্গা দিঘী ' এজন্যই গ্রামের মানুষের কাছে তিনি একবগ্গা ঠাকুর নামে পরিচিত! দ্বিতীয় উপাধিটি স্হানীয় জমিদার ব্রজেন্দ্রনাথ ভাদুড়ীর তাৎক্ষনিক ভাবে দেওয়া! এই রূপেন্দ্র নাথে ছিলেন তৎকালীন সমাজে অর্থাৎ অষ্টাদশ শতকের প্রথম দিকে মানুষ হয়েও তিনি ছিলেন ব্যতিক্রমি চরিত্র! একজন প্রগতিশীল আধুনিক মনষ্ক ব্যক্তি! সম্ভবতঃ ১৭১৭ খ্রীষ্টাব্দে সোঁয়াই গ্রামে রূপেন্দ্রনাথের জন্ম!পিতা সৌরীন্দ্র নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়!
বালক রূপেন্দ্র নাথকে ত্রিবেনীতে চলে যেতে হয় গুরুগৃহে বিদ্যার্জনের জন্য! ত্রিবেনীর ক্ষনজন্মা পন্ডিত জগন্নাথ তর্কলঙ্কার তাঁর শিক্ষাগুরু! গুরুকূলের শুরু হল রূপেন্দ্র নাথের সংস্কৃত, ন্যায়, ব্যাকরনের শিক্ষা! (চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours