ইন্দ্রানী সেন, সাংবাদিক, বাঁকুড়া:
রত্নগর্ভা বাঁকুড়ার সমৃদ্ধির ইতিহাস বহুজন বিদিত। স্বাধীনতার ৭৩ বছরের ইতিহাসে বারেবারে উঠে এসেছে এই জেলার নাম। বাঁকুড়ার বারিকুল থানার ছেঁদাপাথরের গভীর জঙ্গলে বসেই এক সময় বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর নেতৃত্বে চলতো বোমা তৈরীর গোপন প্রশিক্ষণ। চলত বৈপ্লবিক গোপন বৈঠক।সেই সব ঘটনা জানতে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে একশো বছরের কিছু বেশী সময়। সারা দেশ তথা এরাজ্যেও ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন জোরদার। কিন্তু বাঁকুড়ার দক্ষিণের এই অংশে সেভাবে বৈপ্লবিক কাজকর্ম দেখা না যাওয়ায় ইংরেজ শাসকরা এদিকে সেভাবে নজর দেয়নি। আর সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগালেন ম ক্ষুদিরাম বসু। ক্ষুদিরাম বসুর পাশাপাশি এই ছেঁদাপাথরের জঙ্গলে অবাধ যাতায়াত ছিল প্রফুল্ল চাকী, বারীণ ঘোষ, ভূপেশ দত্তদের। আর এই এলাকায় বৈপ্লবিক কাজকর্মের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন স্থানীয় অম্বিকানগর রাজবাড়ির তৎকালীন রাজা রাইচরণ ধবলদেব। বিপ্লবীদের খাবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের সাহায্য আসতো অম্বিকানগর রাজবাড়ি থেকেই। এমনও শোনা যায় মুজফ্ফরপুরে গিয়ে কিংসফোর্ড সাহেবকে হত্যার ছক তৈরী হয়েছিল এখানে বসেই।
গভীর জঙ্গলে বৈপ্লবিক কাজকর্ম পরিচালনার পাশাপাশি জঙ্গলের ভীতরে একটি পাহাড়ি গুহায় বসবাস করতেন বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু। যদিও সেই গুহামুখ এখন বন্ধ। তৎকালীন সময়ে তৈরী একটি বাড়িও এখন ধ্বংস স্তুপে পরিণত। তবে আশার কথা স্বয়ং ক্ষুদিরাম বসু যেখানে বসে আলোচনা করতেন সেই জায়গাটি বাঁধানো হয়েছে। তৈরী হয়েছে তাঁর নামাঙ্কিত শিশু উদ্যান, পর্যটক আবাস ও আবক্ষ মূর্তি। ফি বছর ক্ষুদিরাম বসু নামাঙ্কিত একটি সংগঠনের উদ্যোগে তাঁর জন্ম ও শহীদ দিবস ঘটা করে পালন করা হয়।
ছেঁদাপাথর এস.কে.এস.টি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানস মুখার্জ্জী বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর-পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের এই এলাকায় ক্ষুদিরাম বসু বৈপ্লবিক কাজকর্ম চালিয়ে গেছেন। তাঁর ব্যবহৃত একটি গুহা ছিল। বর্তমানে সেই গুহামুখ যদিও বন্ধ।
বাঁকুড়া জেলা পরিষদেথ সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্ম্মু বলেন, ছেঁদাপাথরের এই জঙ্গলের গোপন আস্তানায় বসেই ক্ষুদিরাম বসু বৈপ্লবিক কাজকর্ম সংগঠিত করতেন। সেই কারণে এই জায়গাটি বিখ্যাত হয়ে আছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours