জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:
বিদ্যালয় বলুন, কিংবা রাজনীতি অথবা সাম্যের অনুসন্ধানে শিক্ষক প্রয়োজন হবেই। তারাই তো ছাত্রকে
;জ্ঞানর দ্বারটিকে চিহ্নিত করে দিতে পারে।
জীবনের প্রান্তে এসে জেনেছি, তিনিই সর্বশ্রেষ্ট শিক্ষক যিনি নিজে জ্ঞানের দরজার উন্মুক্তিতে, জীবনবোধের
পারতের পর পারত, আবিস্কারে সংগ্রামে নিজেকেই সংগ্রামে প্রতিচ্ছবিতে উত্তোরন ঘটিয়েছেন। সে রকম
শিক্ষকরাই, যদিও সংখ্যায় নগন্য থেকেও নগন্যতর
মর্য্যাদায় উঠে আসেন। সে রকম যারা জ্ঞানরুপী পরমব্রহ্মের পথ খুজে পেয়েছেন, তারা
নিজেদেরকে নিজেরা ঘোষনা জারি করেন না। জাতি বা তার বিদ্য অংশ তাকে হিসেবে মেনে
নেন।
বিষয়টা যেহেতু, আজকের দিনের সাম্যবাদী আন্দোলনে অতীব গুরুত্বপূর্ন, সে জন্যে আরো একটু গুছিয়ে বলা
যেতে পারে। সেই সুত্রে এটা আগে থেকেই বলে নেওয়া উচিত হবে। সাম্যের গুরুত্বের কথা যখন বলা হচ্ছে, এ
কারনে নয় যে, লেখক নিজে সাম্য সম্পর্কে কোন বিশেষ অনুরাগ বা affinity রয়েছে, সে কারনে নয়।বিষয়টা
এই কারনে, পুঁজির ফ্যাসিস্ত উত্তরনের কালে যখন;উদারবাদ বা liberalism ক্রমে অপ্রাসংগিক হয়ে যাচ্ছে,
তখন পরিত্রাতার ভূমিকায় দলবদ্ধ রাজনৈতিক সত্বা হিসেবে শ্রমিক শ্রেনী এবং তার ভাবাদর্শগত অভিমুখ
হিসেবে সাম্য ব্যতিরেখে বিশ্বে প্রতিরোধের আর কোন শক্তিই বেঁচে রইলো না।।
যদি মেনে চলা হয়,একজন শিক্ষক, ইতিমধ্যে পথের যতটুকু উন্মুক্ত হয়েছে,ত ততটুকু পথ পর্য্যন্ত ছাত্রদের পৌছে
দিতে পারেন এবং গুরুকে দরজার উন্মুক্তি ঘটিয়ে চলার নতুন শ্রোতে উঠিয়ে দিতে হয়, সেখানে শ্রমিকদের
শ্রেনীগত উত্তোরনের বিষয়টি যখন সার্বজনীনতার আবেদেন
-----, সেই আবেদনের সাথে আকাশচুম্বি গনতন্ত্র এবং জ্ঞানের নিরবিচ্ছিন্নতা হিসেবে সাম্যকে খুজে নিতে হয়,
সেখানে ইতিমধ্যে উন্মুক্ত জ্ঞান নিয়ে কিছুতেই সাম্যের ভাবঃ সেই ভাবের অনসঙ্গ হিসেবে রাজনীতিকে
আবিস্কার করতে হলে
------ সেই অনোউন্মোচিত জ্ঞানসত্বাকে, প্রকৃ্তি বিজ্ঞানের ধারাবাহিকতাকে চিন্তন প্রকয়া্র আনাচে কানাচে
এবং আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থার আলোকে, ইতিহাসের নিরন্তর একাত্মতার ধারাগুলিকে আবিস্কার করতে হয়।
----- শুধু আবিস্কার নয়, সেই আবিস্কারগুলিকে শ্রমিক আন্দোলনের রসায়নাগারে প্রয়োগসত্বাকেও আবিস্কার
করতে করতেই শ্রমিক আন্দদোলনকে ক্রমে জনগনের মঞ্ছে রুপান্তরের পথটিকেও চিহ্নিত করতে হয়।
------ সাধারনভাবে, বুর্জোয়া উদারনীতিবাদ, জ্ঞানকে যে চৌ্রাস্থায় ইতিমধ্যে পৌছে দিয়েছে, সেখান থেকেই
শ্রমিকদের শ্রেণী রাজনীতির চলাটা শুরু হয়। এখন খোক কোলকাতাকে দেখেই, যে কোলকাতা নিজেই একদিন
ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত ছিলো, নিশ্চিত হয়েছি - বিশ্বায়নের ধাক্ষায় উদারনীতিবাদ
যেভাবে তার প্রাসংগিতা হারাচ্ছে (BOURGEOIS LIBERALISM HAS BEEN LOSING ITS
RELEVANCE) সেখানে শ্রমিক আন্দোলনকে অনেকটা পেছনে গিয়েই, শ্রমিক রাজনীতির সাম্যবাদী
অভিমুখটাকে খুজে বের করা প্রয়োজন হবে।
এখান থেকেই, শ্রমিক আন্দোলনে যে সব শিক্ষকরা, শ্রেনী রাজনীতির দরজা উন্মুক্তির পথে নিজেদের, জ্ঞানরুপী
পরমব্রহ্মের দরজায় পৌছুতে চাইছেন
তাদের নিশ্চিতভাবে দুটি সুত্র মেনে চলতে হবেঃ
প্রথমটি , আমি যাকে গুরু বলে মেনেছিলাম, তার ঠোট ধরে আমাতে এসেছিলো একদিনঃ
তিনিই জ্ঞানের অভিমুখে থেকে, প্রকৃ্ত শ্রেণী রাজনীতির পথটি খুঝে পাবেন যিনি, যিনি জ্ঞানের সর্বমুখীন
ধারার থেকে এক অখন্ড নিরন্তরতার সাথে,
বিশ্বটাকে বদল করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে সচেষ্ট হবেন।
দ্বিতীয়টীঃ
প্রজাতন্ত্রের আবির্ভাব, যেদিন ব্যক্তিগত গুরুবাদ (আকারহীন ব্রহ্ম) বিনাশের পথ চিরতরে বন্ধ ঘোষানা করে,
------ নীতি এবং যুক্তিবাদকে গুরুর যায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেছে , সেই ধারাকে অভ্যাহত রাখতেই, তথাকথিত
উদারদের সাথে রাখার চেষ্টা চালিয়ে গিয়ে ,শ্রমিক রাজনীতির ধারাটিকে উন্মুক্ত করেই, তাকে ;গুরুর যায়গায়
প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
HAD I CALLED FOR TAGORE-NEHERU COMBINATION BE TAKEN AS THE STEP
TOWARDS REACHING THE MARX
------- তার অর্থ একটাই।সাম্য বা শ্রমিকদের শ্রেনী রাজনীতির সোপানটির প্রকৃত অবস্থানটিকে চিহ্নিত
করতেইঃ
প্রথমতঃ নেহেরুর ভারত খোজের মধ্যদিয়ে ভারতীয় ইতিহাসটির সাথে রবীন্দ্রভাবনার;বিশ্বভারতীর
সংশ্লেষনে তিনি যে নতুন ভারতের রুপরেখা, চলার পথে রেখে গেছেন, তাকেই ভিত্তি হিসেবে রেখে, চিন্তার
ধারাকে চিহ্নিত করনে চেষ্টা করতে হবে।
দ্বিতীয়তঃ রবীন্দ্রকাব্যকে, এক প্রান্তে মার্ক্সের চিত্ত উন্মুক্তি, চিত্ত সুদ্ধি এবং অন্য দুই মহাকাব্যের ধারাবাহিক
হিসেবে আধুনিক ভাব সত্বার অভিমুখ হিসেবে খুজে পেতে হবে। (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours