old temple
ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ গোপভুমের অনান্য গোপরাজাদের মধ্যে অন্যতম বর্তমান পূর্ব বর্ধমান জেলার আউসগ্রাম-২ নং ব্লকের কালিকাপুরের রাজ বংশ! যদিও এঁদের রাজা না বলে বৃহৎ জমিদার বলাই বান্ছনীয়! কলকাতা থেকে ১২০ কিঃমিঃ উত্তর পশ্চিমে, পানাগড় - মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের ১১ মাইল বাস স্টপেজ থেকে গুসকরা অভমুখে ৩ কিঃমিঃ দুরত্বে এবং পানাগড় স্টেশন থেকে ২১ কিঃমিঃ উত্তরে অনুপম ভাষ্কর্যের নিদর্শন হয়ে ভগ্নপ্রায় সাতমহলা রাজবাড়ী অতীতের কালিকাপুরের গোপরাজা অতীত ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করছে! অজয়নদের তীরবর্তী মৌখিরা গ্রামের পরমেশ্বর রায় বন্যার কবল থেকে বাঁচতে সাত পুত্র সহ স্বপরিবারে কালিকাপুরে জঙ্গল,পরিস্কার করে বসতি গড়ে তোলেন! বর্ধমানের মহারাজের কাছে এই এলাকার জমিদারী স্বত্ব লাভ করেন! 
১৭৬১ সালে এই গ্রামে সাত সন্তানের জন্য সাতটি প্রাসাদ নির্মান করেন! এটি সাত মহলা রাজবাড়ী নামে পরিচিত! পরমেশ্বর রায়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র কৈলাশপতি রায় বর্ধমান মহারাজের দেওয়ান পদে নিযুক্ত হ'লে তিনি সাতমহল থেকে কিছুটা দুরে ৩২ বিঘা জমির উপর নির্মান করেন চাঁন্দনী বাড়ী ( মূলতঃ খাজনা আদায় ও অতিথি আপ্যায়নের জন্য)! এই চাঁন্দনী বাড়ী হরেক প্রজাতির আম ও নানা রকম ফলের সমারোহে সমৃদ্ধ ছিল, কিন্তু মূল আকর্ষন ছিল চতুর্দিক বাঁধানো চাঁন্দনী পুকুর! যেখানে প্রতি পূর্নিমায় বসতো গানের মেহফিল, তৈরী হতো এক মোহময়ী পরিবেশ! সাতমহল রাজ বাড়ী সংলগ্ন দুর্গামন্দির, নাটচালা, পরমেশ্বর রায় নির্মিত টেরাকোটা শিল্পের অনুপম নিদর্শন জোড়া শিবমন্দির ,বিষ্নু মন্দির এবং গ্রাম্যদেবী কালীমাতার মন্দির ! 
গ্রাম্যদেবীর নামানুসারে গ্রামের নাম কালিকাপুর! পরমেশ্বর রায়ের পুত্র বর্ধমান মহারাজের দেওয়ান কৈলাসপতি রায় তিনবিঘা জমির উপর নির্মান করেন 'রাধাবিনোদ ' মন্দির ! এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠার জন্য বৃন্দাবন থেকে কষ্টিক পাথরের শ্রীকৃষ্ন ও অষ্টধাতুর রাধার বিগ্রহ আনেন!কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার পুর্বরাত্রে হঠাৎ কৈলাশপতি মারা যান!
স্হগিত হয়ে যায় বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা! এই ঘটনার বহু বছর পর ফরিদপুর থানার ধবনী গ্রামের প্রখ্যাত সাধককবি নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায় সেই রাধাবিনোদ বিগ্রহটি নিজের গৃহে মন্দির নির্মান করে প্রতিষ্ঠা করেন! ( চলবে)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours