fiture
মুজতবা আল মামুন, সাংবাদিক, কলকাতা : (পদোন্নতি ও কিছু ন্যায্য সুযোগ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি সেই গ্রামীণ স্বাস্থকর্মীদের) একেবারে অন্দরমহল পর্যন্ত গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবাকে টেনে নিয়ে গেছেন এবং টিকিয়ে রেখেছেন গ্রামীণ মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা। তারপরও দীর্ঘদিন অবহেলিত ও বঞ্চিত থাকার কারণে, ফুঁসে ওঠা সেই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা কড়াপাকের চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। চার দফা দাবি জানিয়ে। সম্প্রতি তাঁরা কলকাতার স্বাস্থ্যভবনে বিক্ষোভ সমাবেশও করলেন, তাঁদের প্রতি অবিচারের ব্যাপারটা মানুষের নজরে আনতে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য প্রকল্পের সরকারি নাম এএনএম(আর), তারই একটা পদ স্বাস্থ্য সহকারী ( মহিলা) । প্রতিটি গ্রামে যেখানে ন্যূনতম ৭ -- ১৪,০০০ জনসংখ্যা আছে, সেখানে তাঁদের নিয়োগ হয়। সরকার অনুমোদিত অনেক জায়গায় সাবসেন্টার আছে। অনেক জায়গায় পঞ্চায়েত ভবনে, নির্দিষ্ট ঘরে কাজ করতে হয়। দুজন এ এন এম থাকেন । প্রথমজনেরা গোলাপি শাড়ি পরেন। দ্বিতীয়জন পরেন হলুদ শাড়ি। এছাড়া আছেন এক হাজার জনসংখ্যার নিরিখে একজন করে 'আশা কর্মী'। যদিও অনেক পদ খালি। 
ওদের সুপারভাইজ করার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত অনুযায়ী একজন থাকেন। শুন্য পদের কারণে একজনকে দুটো-তিনটে পঞ্চায়েত দেখতে হয়। ওদের কাজের শেষ নেই। যেমন প্রসব করাতে হয়, প্রসূতির যাবতীয় পরিচর্যা, পরিবার পরিকল্পনায় সহায়তা, যক্ষা,কুষ্ঠ রোগিদের নিজে হাতে ওষুধ খাওয়ানো, ফাইলেরিয়া, ডায়েরিয়ার তদারকি। নানান টিকাকরণ করতে হয়। কাউন্সেলিং, প্রশিক্ষণ দেয়া, গ্রুপ মিটিং, সচেতনা শিবির তো আছেই। তার সঙ্গে হাজারও রকমের কাগজপত্র আপডেট করতে হয়। জন্ম-মৃত্যুর পরিসংখ্যান তৈরি, সেগুলো উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছনো তো আছেই। সেই সঙ্গে নির্বাচনী কাজ, জনগণনার কাজ, স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের কাজ, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা কেন্দ্রে ক্যাম্প বসানো...... দায়িত্ব আর কাজের শেষ নেই। সে বড় কষ্টের ও ঝক্কির হলেও, স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়বে বলে, হাসি মুখে তাঁরা দায়িত্ব পালন করেন। টিফিন করার সময়ও মেলে না। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তার যোগ্য প্রতিদান কই ? বরং বিমাতৃসুলভ আচরণ পান ওঁরা। এবার অনেক আশা নিয়ে ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবিপত্র জমা দিয়েছেন। দেখে নেওয়া যাক, কী দাবি তাঁদের : ক.কাজের মান উন্নত করার জন্যে কিছু কাজ কমানো হোক। খ. সরকারি ছুটিগুলো তাঁদেরও দেওয়া হোক। গ. গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যের বিষয়টা মূলত ওঁরাই দেখেন, তাই সিনিয়রিটি এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী উপযুক্ত ট্রেনিং দিয়ে তাঁদের পিএইচএন, বিপিএইচএন-এর সুপারভাইজার হওয়ার, সর্বোপরি সি এইচ ও হওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। 
ঘ. তাঁদের যে যোগ্যতা আছে, দায়িত্ব দিলে স্বার্থকভাবে পালন করতে পারেন..... সরকার তার প্রমাণ নিক। তাঁরা কাজ বন্ধ করলে, এখনই হয়তো চিকিৎসাহীনতায় মানুষের মৃত্যু ঘটবে না। তবে স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়বে। কারণ, তাঁদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা কর্মসূচি তৈরি হয়। বা আপগ্রেড করা হয়।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours