Politics
জীবন রায় প্রাক্তন সাংসদ রাজ্যসভা ও লেখকঃ বছর খানিক পূর্বে  বাংলার এক বিজেপি রাজ্যপাল,   সরাসরি নজরুল ইসলাম এবং  সুকান্ত ভট্টাচার্য্যকে  কুৎসিৎভাবে আক্রমন করার পর, এই কলেমে, রবীন্দ্রনাথের উপরে আসু আক্রমন সম্ভাবনা্র  কথা বলা   হয়েছিলো। যারা রাজনীতিকে ইতিহাসের ধারায় ভাবাদর্শগত সংঘাতের প্রতিরুপ হিসেবে দেখেছেন এবং বুঝেছিলেন 'শ্রীরাম রাজনীতির' কারনেই রবীন্দ্রবধ আসু হয়ে দাঁড়াবে ---   তারাই মানবেন,বাঙ্গলার বিদ্রোহী ও বিপ্লবী ভাবের উপরে এতোবড় আক্রমনের হটাৎ কি কারন হয়ে দাড়ীয়েছিলো। সম্প্রতি আর এস এস এর এক নীতিনির্ধারকের কথায় বোঝা গেলো, রবীন্দ্র বিতারনের আর এস এস কমর্সূচী হটাৎ কিছু নয়, যেদিন থেকে এদেশে  স্বস্তিকার  অনুপ্রবেশ ঘটানো  হয়েছে , এরা মাঠে মাটে মাদ্রাসার অনুকরনে বিদ্যালয় খোলা  এবং মাঠে মাঠে লাঠি খেলা শেখানো শুরু হয়েছিলো, সেদিনেই নাথুরাম গডসে হত্যার সাথে সাথে রবীন্দ্রবধের পালা   শুরু করা হয়েছিলো।। ওরা প্রথমেই বুঝেছিলো, রবীন্দ্রনাথকে ভারতীয় মনন সত্বায় রেখে দিয়ে , কিঘুতেই, নৈরাজ্যের ভাবাদর্শকে এগিয়ে দেওয়া যাবে না।  ---- সেই আসঙ্কাই দৃঢ় হয়েছিলো,  যখন কিছু দিনের মধ্যে, বিজেপি সভাপতি, অমিত সাহ, কোলকাতায় রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীকে এড়িয়ে গিয়ে,  ভাটপাড়ায়, বঙ্কীম চন্দ্রের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোয় অতি অতিরিক্ত  উৎসাহ দেখালেন। ---- তখনই সতর্ক করে বলেছিলাম, এবারে কেবল রবীন্দ্রনাথ নয়, জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় পতাকার উপরে কোপ পড়া হয়তো বা 'অবস্বম্ভাবী হয়ে উঠলো।  যে দেশের শ্রমিক আন্দোলনেরই, ১০০ বছর পরেও, শরীর থেকে 'বৌদ্ধিক' সত্বায় উঠিয়ে আনার চেষ্টাটাই ক্রম নব্বই দশকের পরে পরিত্যক্ত হয়েছে, উপর থেকেই, এবং সে কারনে  বিন্দুমাত্র অনুশোচনার কারন ঘটে নাই, সেখানে  -----  ভারত শাসনের ' স্বস্তিকাকিকরননের' বিপরীতে রবীন্দ্রনাথ যে পাহার উচ্চতার  এক  জলস্তম্ভ, সেটা  আর এস এস এর যতটুকু জানা, তা যদি, একতাকামী শ্রমিক আন্দোলনের জানা থাকতো, তবে  এ দেশের অনেক বিড়ম্বনাকেই আটকানো যেতে পারতো।  প্রশ্ন উঠতেই পারে, যখন দেশ তো বটেই, বাংলাতেই  রবীন্দ্রনাথাকে গানবাজনা,কবিতা এবং খুব জোর ছবি আকার কবিতে বদলে দেওয়া হচ্ছে, বাংগালী বুদ্ধি বাবুরাও মহাকবিকে, বাঙ্গালি কবি     কবি বলে সম্বধোন করছেন, , রবীন্দ্র স্মরনের দিনে অন্যদেরকেও একাশনে বসিয়ে গান-বাজনার আসরকেই রবীন্দ্রচারন বলে মেনেছেন এবং এসবে আজকের 'আধুনিতায়' কোন দাগ পড়ার লক্ষন দেখা যাচ্ছে না -----  তখন কেন সাম্যবাদীদের ধরে 'টানাটানি। '    যাইহোক, এটা নিশ্চিতভাবে বুঝেছিলাম, ,
ভারতীয় ভাবসত্বাকে নর্দমা থেকে তুলে এনে আধুনিকতার দরজায় পৌছে দিতে, রবীন্দ্রনাথের অবদানকে চিহ্নিত করতে, দ্বান্দিক নিয়মের সুচারু প্রয়োগ ব্যতিত, রবীন্দ্রকাব্যের সাথে বিশ্বভারতী বা মহামানব, কিংবা রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত আন্তর্জাতীক চিন্তা - প্রাচ্যের সাথে প্রাতিচ্যের মিলনের সুত্রগুলি, উদ্ঘাটিত করার কাজটি কখনো  সম্ভব ছিলো না। এইভাবেই, বুঝতে হবে, বাংলায়, দন্দ্বতত্ব আধারিত তাত্বিক বিতর্ক ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে,  এদেশে  রবীন্দ্র উন্মোচনে যে শূণ্যতা নির্মান হয়েছে, সেই শূন্যতা, নিশ্চিতভাবে - জাতীয় ভাবনাকে একতার বিপরীত অভিমুখে ঠেলছে। এটা কোন দেশের অভিজ্ঞতা  নয়, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের একট রাজ্য রাশিয়ার নবীন প্রজন্মের যে মতামত পাওয়া গেছে, সেখানেও দেখা গেলো, সোভিয়েত ভেংগে যাওয়ার পর দর্শনের খন্ড বিখন্ড সত্বাই, রুশ দেশে চরম বিশৃংখলা ডেকে এনেছে। রবীন্দ্রনাথ কে খন্ডিত সত্বায় দেখতে গিয়ে যে বিপর্যয় নামার কথা, সে বিপর্যয়ই এদেশে নেমে এসেছে। (চলবে)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours