ভবানী প্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার দুরগাপুরঃ
মা শ্যামরূপার মানসপুত্র ইছাই ঘোষের মৃত্যুর সাথে সাথে একটি যুগের অবসান ঘটল!ঢেঁকুর গড়ে নেমে এলো শোকের ছায়া, কিংবদন্তী প্রিয় পুত্রের মৃত্যুতে হাহাকার করে কাঁদলেন মা শ্যামরূপা , আজও একটি জায়গা দেখিয়ে লোকে বলে 'কাঁন্দুনে ডাঙা' জনশ্রুতি এখানেই পুত্রশোকাতুর দেবী শ্যমরূপা কেঁদে বেড়িয়ে ছিলেন! আজও তপ্ত দুপুরে রাখাল বলকদের কান্না মেশানো সুরে গাইতে শোনা যায়," শনিবারের বারবেলা, যুদ্ধে যাইয়ো না ইছাই গোয়ালা !
ইছাই-এর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তাঁর একমাত্র কন্যা দেবী শ্যামরূপার প্রতি প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে, ক্রোধ আর অভিমানে দেবী শ্যমরূপার মূর্ত্তি দীপ সায়রে বিজর্সন দিলেন!
অনেক গবষকের অনুমান বঙ্গের প্রথম গোপরাজ্যের অবসান ঘটল ইছাই-এর মৃত্যুর সাথে সাথে!
কিন্তু এ ধারনা অমূলক বলেই মত পোষন করেন বেশীরভাগ গবেষক, কারন শ্যামরূপা মন্দির থেকে ২ কিঃমিঃ দুরে একটি সুউচ্চ গম্বুজাকৃতির মন্দির আছে, সেটি ' ইছাই ঘোষের দেউল ' নামে পরিচিত! অনেকের ধারনা, কর্নসেনকে পরাজিত করে 'বিজয়- স্মারক ' রূপে এটি নির্মান করেন! কিন্তু এ ধারনা সম্পূর্ন ভুল, কারন ইছাই ঘোষের সময়কাল খ্রীষ্টিয় সপ্তম - অষ্টম শতক আর মন্দিরটির নির্মানকাল একাদশ -দ্বাদশ শতক! সম্ভবতঃ ইছাই ঘোষের কোন উত্তরপুরুষ ইছাই ঘোষের বীরত্বকে সন্মান জানেতে এই মন্দিরটি 'ঘোষ' সম্প্রদায়ের আরাধ্যা দেবী ভগবতীর মন্দির নির্মান করেন, কোন কারলে দেবীর বিগ্রহ স্হাপিত হয়নি , বর্তমানে একটি শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত আছে!
ইছাই ঘোষ ঐতিহাসিক চরিত্র কিনা সে বিষয়ে দ্বিমত আছে, অনেকের কাছেই দেবী শ্যামরূপাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা কিংবদন্তী বিশ্বাসযোগ্য নয়, কিন্তু আজও শ্যামরূপা গড় আছে, ইছাই ঘোষের দেউল আছে, তিষষ্টিগড়ের স্মৃতি আছে, আছে দীপ সায়র, আজও এখানে কাল পাতলে শোনা পুত্রহারা মা শ্যামরূপার হাহাকার...ইতিহাস এখানে ফিসফিস কথা কয়
.................( চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours