জীবন রায় প্রাক্তন সংসদ রাজ্যসভাঃ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে, পুজিতন্ত্রের পূনর্গঠনের কাল এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধ, বিশ্ব সাম্যবাদী আন্দোলনকে গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছিলো, কিন্তু শুধু নেহেরু নয়, যুগোশ্লোভিয়া, মিশর, ইন্দোনেশেয়ার পতনের পর একমাত্র চিন বেঁচে ছিলো, ফ্যাসিস্ত আগ্রাসনকে মোকাবিলা করায়। আর সেটাই ছিলো ভারতীয় সাম্যবাদের কাছে, আভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে , সনাতনি ধারাকে মতাদর্শগতভাবে নিকেশ করার প্রকৃ্ষ্ট সুযোগ।
------ বিপরীত দিক থেকে, সে কাজটায় যে , কংগ্রেস দলের ভেতরের এবং তার সাথে 'হিটলারের' অনুগামী হিসেবে যারা 'সনাতনি'দের পূনঃর্গঠিত করার সুযোগ পেয়েছিলেন, তারাও ভেতরে এবং বাইরে বেপোরোয়াভাবে, এক হোওয়ার সুযোগ পাবে সেটাও সাধারনভাবে বোধগম্য ছিলো। তিব্বত প্রশ্নে ১৯৫৮ সালে দলাই লামা সহ কয়েক লক্ষ তিব্বতিদের ভারতে নেমত্যন্ন করে আনা এবং সেই আগমনকে ভারতীয় প্রেস দ্বারা গগন বিদির্ন প্রচার অন্যতম ছিলো।
------ এদের একতার তীভ্রতাই, নেহেরু কালেই তাকে কোনঠাসা করতেই সিন্ডিকেট ইত্যাদি নির্মীত হয়েছিলো এবং পিএল ৪৮০ ইত্যাদি দ্বারা ভারতীয় খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্নতা ইত্যাদি ভেংগে দিতে আমেরিকার অনুপ্রবেশও তখনকার ঘটনা। এই সিন্ডিক্যাটকে ভাংগতেই শ্রীমতি ইন্দিরাকে কংগ্রেস ভাঙ্গা, তার সাথে, ভারতের অর্থনৈতিক লাইনে তিনি সে সময়ে বামমুখীনতার আশ্রয় নিয়েছিলেন। ১৯৭০ থেকে এবং মেনে চলতে হবে ১৯৭১ এর বাংলাদেশ যুদ্ধে তার অবস্থান, এই আভ্যন্তরীন পরিস্থিতি অনেকটাই প্রভাবিত করেছিলো।
------ সিপিআই কে এবং সোভিয়েতকে পাশে রেখে ভারতে, সাম্যবাদী বিরধীতা এবং জনতার পর, আবার ফিরে আসার সময় থেকে, অর্থনীতির দিক থেকে আমেরিকা মুখীনতার কারনে দক্ষিন মুখীন যাত্রা সে সময়েই শুরু হয়েছিলো। অবশ্য সে মুখীনতা আমেরিকান মিলিটারীতন্ত্রের কাছে চিরে ভেজাতে পারে নাই। উল্লেখনীয়, নব্বই দশকের মধ্যে যখন নরসিমহা রাও-মনমোহন দৌত্বে, আমরা অর্থনৈ্তিক স্বয়ংসম্পূর্নতা বিক্রি করে দিয়েছি, তার মধ্যে - ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর উপমহাদেশের একাত্মতার জন্য যে কয়জন দাড়ীয়েছিলেন, শ্রীমতি ইন্দিরা সমেত, তাদের চারজনকেই হত্যা করা হয়েছিলো।
কাজেই, উল্লেখিত পরিপ্রেক্ষিতে যদি বুনিয়াদী দায়বদ্ধতার স্খালনকে চিহ্নিত করতে হয় প্রতথমেই বুঝতে হবে, তৃ্তীয় বিশ্বের অংশ হিসেবে ভারতে আধুনিকতার আবেগ যখন সংকোচনে, তখন মানতে হবে, এই সংকোচন শুরু হওয়ার পূর্বেই ইতিহাস, সাম্যবাদিদের যথেষ্ট সময় দিয়েছিলো। কিন্তু সে সময়কে, যুক্তিভিত্তিক শিক্ষার জ্ঞানগত রুপান্তরন, জ্ঞানের সাথে সংস্কৃতির সেতুবন্ধন এবং সেই বন্ধনে একটা জনগনের একটা অংশকে যুক্ত করার
----- সর্বোপরি, সনাতনিরা যখন, শক্তিসমাবেশের দিকে যখন হিটলারের প্রায় সব নীতি-কানুনকে কাজে লাগাচ্ছে, তখনো, আহুনিকতার প্রধান বাহন হিসেবে, সাম্যবাদীরা শ্রমিক আন্দোলনকে, তার অদক্ষ রুপ হিসেবে শরীর সর্বস্বতা থেকে বৌ্দ্ধিক স্তরে উঠিয়ে আনার সব কাজ, প্রথমে সত্তোরের শেষভাগ থেকে পশ্চাত মুখীনতায় এবং শেষে সোভিয়েত ভেংগে যাওয়ার পর অতলযাত্রায় পাঠাণো শুরু হয় এবং সনাতনিদের বিপরীতে শ্রেনীগতভাবে সংগঠিতে শক্তিটিকে অকেজো করে দেওয়া চলতে থাকে।
কাজেই যদি কেউ দাবী করেন যেন, 'সনাতনি' ব্যাভিচারিতার পুনোরোত্থান যেন হটাৎ করেই ঘটে গেছে, সে রকম ধারনাটি হবে জাতীয় পরিস্থিতিকে স্বতস্ফুর্ততার আবরনে দেখা। একপ্রান্তে, মনমোহনিকনমিক্স, তত্বগত দিক থেকে আমেরিকানদের সামনে আনতে না পারার ইন্দিরা সংস্কার, তাকে ক্রমাগত বেপথে টানতে গিয়ে, একটা অতল স্পর্শি দুর্নীতির গহ্বরে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো।
অবোধগম্মিতা এবং অপমানবোধ মানুষকে যখন কংগ্রেস থেকে সহস্ত্র যোজন দূরে নিয়েগিয়েছিলো, তখন সাম্যবাদীরা ক্রমে, যেমনভাবে নিজের শ্রেনীগত অবস্থান থেকে দূরে গেছে, ট্রেড ইউনিয়নকে সেই অবস্থাস্নের সাথে বেধেছে এব্ং এইভাবে নীতির উপরে সরকারীয়ানার যায়গা করে দিয়েছে
---- মানুষ কালিপূজোর পোকামাকরের মতো পংগপালের বেগে আত্মহননের পথে গেছে। মানুষ জেনেশুনে বিশ্বের সব থেকে 'কালো হাতটিকে' ভারতের রাষ্ট্র কাঠামোর সর্বোচ্চ স্তরে এনে বসিয়ে দিয়েছে।এরা যখন রাজনৈতিক দিক থেকে, সমাজের সব থেকে অসচেতন, ব্যক্তগত বিচারে সব থেকে স্বার্থপর, শিক্ষার দিক থেকে জ্ঞান থেকে পরিত্যজ্য এবং ভয়ংকরভাবে আত্মলোভী, ধর্মের দিক থেকে অন্ধ, জাতীয়তার দিক থেকে দু-মুখো (প্রকাশ্যে উঘ্র জাতীয়তাবাদি, অভ্যন্তরে অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্নতা বিরোধী এবং আমেরিকান প্রতিরক্ষায় দায়বদ্ধ, তার সাথে চরম চিন বিরোধী )। অর্থনীতির পথে সে মনমোহনের অসুবিধায় থাকার কথা নয়ঃ খোলাখুলি একপ্রান্তে একেবারে তলানি থেকে ছেঁচে-ছেচে, টাকা আদায় করছে জনগনের গলা টিপে (সেখানেও শত বিরোধ সত্বেও রাজ্যগুলির সাথে বাটোয়ারার প্রশ্নে একটা আন্তরিকতা বিদ্যমান), অন্যপ্রান্তে কোন রকম বিনিয়োগহীন হয়েও অবলিলা ক্রমে, রেল গাড়ী ও লাইন থেকে শুরু করে একেবারে যোগাযোগ ব্যবস্থার (বি এস এন এল) সব কিছু বিক্রি করে দিচ্ছে। এখন ধরুন দুর্গাপুর কিংবা ভিলাই কারখানাকে বিক্রি করে দেওয়ার অধিকার যদি, কারখানার প্রশাসনিক কর্তাদের দিয়ে দেওয়া হয় এবং দেশ তা মেনে নেয়ঃ
---- বেঁচে থাকা কিংবা স্বাধীনতার আর কোন ফাক-ফোপর টিকে রইলো। ..............চ ল বে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours