জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভাঃ
মার্ক্স বুঝেছিলেন -- ইতিহাসের এই বিপর্য্যয়ে,মনুষ্যকে ভাবজগতের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেই, ইতিহাসকে তার অন্তিম মুক্তির পথ উন্মুক্ত করে দিতে সক্ষম। এই প্রশ্নেই মার্ক্সবাদ এবং সাম্যবাদী আন্দোলনেরো অগ্নিপরীক্ষা। ----- উভয়ের যুগলবন্দিতে চিন্তন প্রকৃয়ার গাটগুলি উন্মুক্ত হতেই হবে। মার্ক্সবাদকে যদি কিঞ্চিত বুঝে থাকি। ------ যদি বুঝে থাকি দর্শনের হিমালয় চুড়ার সেই মর্মবানীকে ---- কেন্দ্রিকতা যদি পুজিতন্ত্রের সাধারন নিয়ম বলে বিবেচিত হয়, সেই নিয়মই, উৎপাদন এবং বন্ঠনের সন্তুলনহীনতাতেই, পুজিঁ ক্রমাগত হিংস্র হতে থাকবেই। এই হিংংস্রতা ইতিহাসের সব থেকে কুৎসিত এবং জঘন্য রুপ নিতে বাধ্য যখন ----- কোন দেশে শিল্পপুজি যখন বানিজ্যিক পুঁজির হাতে কোনঠাসা হতে থাকে, উৎপাদিকার প্রয়োজনীয় গবেষনাগারগুলি বন্ধ হওয়ার কারনে, সৃজনীর উন্মুক্তি একেবারে বন্ধ হয়েছে এবং এই মিলিত অক্ষশক্তি একপ্রান্তে বিশ্ব ফ্যাসিতন্ত্রের সাথে গাটছড়া বেধেছে, অন্যপ্রান্তে অভ্যন্তরে, আধুনিকতার বিপরীতে আদিভৌতিকতা (metaphysics) বা অনুমান ধর্মীতার নন্দী-ভৃংগি সংস্কৃতির পুজ-রক্তে মানবিক প্রবৃত্তিগুলিকে যখন ধ্বংস করতে উদ্ধত হয়, তখন ----- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভিয়েতনামের পর, মানবিকতাকে ইতিহাসের সব থেকে বড় অগ্নিপরীক্ষায় ঠেলেছে। সম্ভবতঃ মার্ক্সবাদেরো অগ্নীপরীক্ষা এবং মানব ইতিহাসের চালিকা হিসেবে লেলিনের পাদপ্রদীপে ---- বিশ্বের দুটি মহামুক্তি এবং চিন ও ভিয়েতনাম মুক্তির, সবগুলি মানবিক অভিজ্ঞাতার সম্মেলণ ঘটবে, ভারতের বিগত দু'শ বছরের সংস্কার আন্দোলনের পটভূমিতে। এই সংগ্রাম - মানব মুক্তির পথে ইতিহাসের সর্ববৃহৎ সংগ্রাম হয়ে উঠছে এবং সেই সংগ্রাম সমুপস্থিতঃ ----- তত্ব ও চেতনায়, সংগ্রাম এবং চিত্ত মুক্তির পথে, মার্ক্স এবং ফ্যাসিবাদী তত্বের লড়াইটার ফলাফলটাও উন্মুক্ত হবে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ জনপদের দেশে, যেখান বিগত কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসে কোন বিপ্লব এসে, তলদেশে জমা হওয়া পুজ-রক্তের নিস্কাষন ঘটে নাই। ২০১৯ এর মহারন একটা বিষয় নিদৃষ্ট করে দিয়েছে।ফ্যাসিস্তদের উঘ্রজাতীয়তার সাথে যখন আন্তর্জাতীক পুজির একাত্মতা ঘটে এবং তার বাহণ হিসেবে যখন মিডিয়া এক হয়ে যায় ---- তখন বাম ও বামপন্থী এবং গণতান্ত্রিক শক্তির সাম্যবাদী অনুমুক্তিতাই ভারতে এই ভয়ানক দক্ষিনী বিস্ফোরনের মুল কারন। হয়তো ইতিহাসের গতিমুখে এই বিপর্য্যয় খুব প্রয়োজনই ছিল।
এবারে ইতিহাস, নিজ অভিমুখের উন্মুক্তিতে নিজেকেই মার্ক্সের সেই অমোঘ বানীর উন্মুক্তির পথ খুলে দিতে হবে। --- সেই সত্যের মুল কথা হল, সাম্যবাদী আন্দোলনের যে বৌদ্ধিক অনুন্মুক্তিতার কারনে, দর্শন-কর্মসূচী-শ্রমিক আন্দোলনের শ্রেণীগত উত্তরন এবং সংগঠনের সেতুবন্ধন ঘটার সুযোগ পাচ্ছে না ---- সেই উন্মুক্তি ঘটবেই, সেই বিন্দু থেকেই যেখানে মার্ক্স এবং রবীন্দ্রনাথ একাত্ম হয়েছিলেন। এই মুক্তির গানকে রবীন্দ্রনাথ এমন ভাবেই দেখেছিলেনঃ "ওরে, চারি দিকে মোর এ কী কারাগার ঘোর-- ভাঙ্ ভাঙ ভাঙ কারা, আঘাতে আঘাত কর্। ওরে আজ কী গান গেয়েছে, পাখি, এসেছে রবির কর।।" আমি নিশ্চিত ভারতের মাটিতেই প্রমানিত হবেঃ "দাসত্বের চিরন্তণতায় নয়,সাম্যেই ইতিহাসের পরিসমাপ্তি'।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours