ভবানী প্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ
দুর্গাপুর..শুধু একটি " শিল্প শহর " বা শিক্ষানগরীর তকমা দিলে তা শুধু ভুল নয় অবমূল্যায়ন! একদা দুর্গাপুর
ছিল , শাল, মহূয়া,পলাশ পিয়ালের বনে ঢাকা অরন্যভুমি, তার মাঝে ছোটছোট জনপদ,অনান্য জাতির বাস
থাকলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসীই আদিবাসী. এবং সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর, যাঁরা প্রকৃতই অরন্যচারী!
সেই সময় সন্ধ্যার পরই গ্রামগুলিতে নেমে আসতো এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা, সেই নৈশব্দের মূর্চ্ছনাকে খানখান
করে রাতের অন্ধকারের বুক চিরে জ্বলন্ত মশাল হাতে হা-রে-রে শব্দ করে ছুটে আসতো ডাকাতের দল, হিংস্র
জন্তুদের জান্তব চিৎকারে ঘুম আসতো না, বিনিদ্র রজনী কটতো জনপদের মানুষদের,
এই অরন্যভুমি ছিল তন্ত্র আর তান্ত্রিকদের কর্মভুমি !
জনশ্রুতি,এই জনপদের বর্তমান কাঁকসা ব্লকের
'গড়কেল্লা-খেরোবাড়ী' মৌজায় অতীতে রাজা সুরথ, প্রখম চন্ডীদেবীর পুজা করে বঙ্গে ' দুর্গাপুজার প্রচলন করেন
!বর্তমানে গড়জঙ্গলে বহুপ্রচীন একটি অষ্টভুজা দেবী চন্ডী মূর্তি পূজিতা হ'ন/
চন্ডীমন্দিরের অদুরে রয়েছে দশভূজা দেবী দুর্গার শ্বেত পাথরের মূর্ত্তি, দেবী এখানে ' 'শ্যামরূপা দেবী ' নামে
পূজিতা হ'ন / আর এই দেবীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে নানা কিংবদন্তী /কথিত আছে,এই গড় জঙ্গলের দুর্গাপুজাই
সম্ভবতঃ রাঢ় বঙ্গের সর্বপ্রাচীন দুর্গাপুজা /
বর্তমান দুর্গাপুরের অতীত ইতিহাস কতটা গৌরবজ্বল সেটা জানতে গেলে জানতে হবে এই জনপদের
অতীত ইতিহাস, বর্তমান দুর্গাপুর মহকুমার কাঁকসার গড় জঙ্গল ও বুদবুদের কসবা ( চম্পাই নগরী)ই বাংলার
অমর সাহিত্য দুটি মঙ্গলকাব্যের ( ধর্ম মঙ্গল ও মনসা মঙ্গল ) পটভুমি। (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours