রানি মজুমদার, ট্রান্স জেন্ডার লেখিকাঃ
ওর নাম ছিলো ফুলা. বাপ মা না থাকলে যা হয় আর কী !
ঘুরে ঘুরে বেড়াতো এদিক ওদিক, তবে পেট টুকু চালানোর
একটা ব্যাবস্থা ওর ছিলো, রানিগন্জ ফাঁড়িতে ও রান্না
করতো. ওকে কিছুদিন ভ্যান চালাতেও দেখেছি, একবার
তো দেখি এক মাড়োয়ারিদের বিয়েতে লাইট মাথায়
নিয়ে যাচ্ছে, ওকে নিয়ে ওর বাকী ঘরের লোকের
লজ্জার শেষ ছিলো না. একবার ফাঁড়ির রান্না ঘরে ওর
সঙ্গে দেখা করতে গেছি. রান্নাঘর তো নয় যেন ধোঁয়ার
কারখানা, ও রুটি সেঁকছিলো, বললাম এই রান্নার কাজ
ভালো লাগছে? ও দাঁত বের করে খিলখিলিয়ে হাসতে
লাগলো, হাসছে কেন বুঝতে কোনো অসুবিধা হলো না.
বললাম পুলিশ গুলোর সাথে ? ও লজ্জা পেয়ে বললো. হ্যাঁ.
আবার ওর সেই দাঁত বের করা লাজুক হাসি, সবুজ
প্লাস্টিকটা সরিয়ে হাসপাতালে যখন ওর মরাটা
দেখেছিলাম ঐ দাঁতগুলো. কেমন বিচ্ছিরি ভাবে বের
হয়ে ছিলো... আঁতকেই উঠেছিলাম
আমি. একটা চোখ কেমন সাদা, সামনের দিকে ঠেলে
বেরোনো, যেন ও পৃথিবীর সবাইকে আজ গিলে গিলে
খাবে. সারা মুখে দনিয়ার কষ্ট চিহ্ন রেখে ফুলা আজ
অনেক অনেক দূরে. সন্ধ্যের হাওয়াটায় কেমন শীত শীত
ভাব. কাল ভোরেই মহালয়া. ফুলা আর আমি ছাদের ছোট
পাঁচিলটায় পা দুলিয়ে বসে. হ্যাঁরে ফুলা তোর কুনালের
কী খবর? এবার ও বুঝলো ছাদে আসা ওর সার্থক হয়েছে,
দুনিয়ার সমস্ত প্রান এখন ওর মুখে চোখে.....পা দুটোও যেন
এবার বেশিই দোলাচ্ছে. লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেলেও
কথার ফোয়ারা এবার কোনো বাধা মানবে না. জানো
রানিদি কুনাল কেমন বদলে যাচ্ছে..জানো রানিদি
কুনাল না কাল আমায় দেখে মুখ ফিরিয়ে নিল...জানো
রানিদি কুনাল বোধ হয় কোনো মেয়ের পাল্লায় পড়েছে.
জানো রানিদি......ওকে ঝাঁকুনি দিয়ে বললাম বল না
শুনছি তো.....আমার হাতটা ও চেপে ধরলো, ভগবান কেমন
পেছনটা মেরে আমাদের পাঠালো বল.....ওর চোখের
দিকে তাকালাম আমি.....মরাটা ওঠাবে. এবার
পোড়ানোর জন্য......!!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours