রূদ্রাণী মিশ্র, লেখিকা ও কবি, কলকাতা:
জীবনে বোধহয় সবাই প্রেম করে, তাই না? আহা প্রেম করা মানেই হাত ধরে ঘোরা বা ফুচকা খাওয়ার কথা বলছি না। প্রেম মানে বলছি, কাউকে খুব ভাল লাগা বা ভালবাসা হয়তো তার অজ্ঞাতে, অজান্তে। তাও কিন্তু প্রেম। কেউ অবশ্য এক প্লেটোনিক লাভ বলেন।
তা আপনাদের মতে কত রকমের প্রেম আছে? আরে দাঁড়ান ঐ পূর্ব রাগ, অনুরাগের কথা বলছি না। আমি বলছি, কিরকম বৈশিষ্ট্যের প্রতি মানুষ প্রেমে পড়ে। রূপ দেখে মানে ঐ সৌন্দর্য দেখে, চরিত্র দেখে, অর্থ দেখে, কথাবার্তা শুনে। আবার অনেক সময় তো আচার ব্যবহার দেখেও মানুষ প্রেমে পড়ে। এতদূর আপনাদের জানা। এবার আপনাদের এক নতুন প্রেমের খোঁজ দিই, বুদ্ধি দেখে প্রেমে পড়া। শুনেছেন কখনও? হমম বাওয়া, পশ্চিমাদেশগুলো থেকে তার একটা নামকরণ ও হয়েছে। স্যাপিওসেক্সুয়াল (sapiosexual)। মাত্র ২০০৪ সালে এই শব্দটি মান্যতা পেয়েছে।
তা এই শব্দ নিয়ে একটু কাটাছেঁড়া করা যাক। sapio কথাটা এসেছে ল্যাটিন শব্দ sapien থেকে, তার অর্থ হল জ্ঞানী বা wise আর sexual নিয়ে কী বলব? এতো আজকালকার তিন বছরের বাচ্চাও জানে। তাহলে মানে দাঁড়াল এই গোষ্ঠীর লোকজন আপনার বুদ্ধি থাকলে, আপনার প্রেমে পড়বে। আমি যখন প্রথম গুগল বাবাজীকে জিজ্ঞেস করলাম, বাবাজী, স্যাপিওসেক্সুয়াল মানে কী? বা তার সংজ্ঞা কী হবে? তিনি বললেন। "sapiosexuality means that a person is sexually attracted to highly intelligent people. So much so that they consider it to be the most important trait in a partner.
বেশ, ভাল কথা। তা এই দলে কে বা কারা আছে? LGBTQ+ আর straight রা এই দলে পড়ে, মানে তারা sapiosexual হতে পারে। তার মানে, এদের কাছে যতক্ষণ আপনি দেখাতে পারবেন, আপনি গ্ৰে ম্যাটারটি যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবহার করেন। ততক্ষণ এরা আপনাকে কাছে রাখবে। এক্ষেত্রে একটা মোটা দাগের উদাহরণ দিতে চেষ্টা করছি। ধরুন আপনি তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, রোলস রয়েস বা মার্সিডিজ বেনজ বা পোরশে নিয়ে, সে ততক্ষণে ভেবে নেবে, এই গাড়ির কয়টা গিয়ার, কত কিমিতে কত তেল খাবে, এর পাটর্স নষ্ট হলে যেখানে থাকে, সেখানে পাওয়া যাবে কি না, মানে সব ধরণের প্রস এ্যাণ্ড কনস। হ্যাঁ তার মধ্যে আপনার শারীরিক ভঙ্গি বা আপনার কথা বার্তার ও কাটাছেঁড়া সে পুরো সময় ধরে করবে। তাই বলছি, আপনার বিপরীতে বসা ব্যক্তি (সবধরনের লিঙ্গের কথা আগেই বলেছি) স্যাপিওসেক্সুয়াল হয়ে থাকেন। তাহলে সাধু সাবধান। লোকজন পটানোর জন্য অর্থ ব্যয় করে, আপনি আপনার গ্ৰে ম্যাটারটি ব্যবহার করুন। জানি দিনের শেষে ক্লান্ত লাগবে। তাও ইয়ে করতে একটু বেশি বুদ্ধি খরচ করতে পারবেন না? নাহলে কিন্তু সব ভেস্তে যাবে।
সব ঘেঁটে যা দেখলাম এরা, রূপ, বর্ণ, চেহারার আকার আকৃতি কেমন? আপনার টাক আছে না নেই বিচার করে না, বা বলা ভাল এসবের পরোয়া করে না, অন্য আর সাধারণদের মত। এরা অভদ্র চিৎকার চেঁচামেচি ড্রামা একদম পছন্দ করে না। এরা একটু পেঁচিয়ে পিন মারতে বেশ ভালবাসে। বুঝলে ব্যথা, না বুঝলে সমস্যাই নেই। আরে, শব্দটি নতুন এলেও ইংরেজি জানা জ্যোতিষগুলো, এই দলে কারা পড়ে তারও একটা তালিকা বের করেছে। আ প দ। এই শব্দটি নতুন হলেও, এই গোষ্ঠী আগেও ছিল, হয়তো সংখ্যায় কম ছিল। তখন তাদের নামাকরন হয়নি শুধু। এতে কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়। তবে এখন নতুন সমীক্ষা বলছে, এদের সংখ্যা বাড়ছে।
তাই আবার বলছি, আপনি ও আপনার গ্ৰে ম্যাটারটি সবসময় ব্যবহার করুন। কে বলতে পারে, কখন তেনাদের একজন আপনার সামনে পড়ে গেলেন...
(www.theoffnews.com - sapiosexual)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours