দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:
বিশ্বভারতী চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর নিতে নির্দেশ দেয় সেকশন অফিসার সৌমেন সাহাকে। শুক্রবার কলকাতা উচ্চ আদালতে বিচারক মৌসুমী ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ তাকে এক রায়ে বাতিল করে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার সৌমেন সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ভাষাভবনের তহবিল তছরুপের। ২০২০ সালের ৩ জুলাই কর্ম সমিতির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সুপারিশ হয়। তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কঠোর শাস্তি হিসেবে সৌমেন সাহাকে বলপূর্বক অবসর নিতে নির্দেশ দেওয়া হয় ২০২১ সালের ২৪ অগাস্টের এক নির্দেশে। তারপরই, সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতে স্মরণাপন্ন হন সৌমেনবাবু।
এদিনের রায়ে সিঙ্গেল বেঞ্চ বিশ্বভারতী নিয়োজিত তদন্ত কমিটির কতগুলো ত্রুটি স্পষ্ট করেছে। এক, তদন্ত কমিটির ২০২১ সালের ৭ মে'র রিপোর্টে কোথাও বলা নেই সেকশন অফিসার সৌমেন সাহা এই তছরুপ থেকে ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হয়েছেন। দুই, তছরুপ অর্থ ব্যয়ের কোনো বিলে তার সই নেই। তাই তিনি অর্থ তছরুপে সক্রিয় ভূমিকা নেন, তাও প্রমাণ সাপেক্ষ নয়। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয় সেকশন অফিসার হিসেবে এই তছরুপ আটকাতে তাঁর কোনো ভূমিকা নেননি, বলা থাকলেও, সেই টাকা যে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক লাভ নেননি, তার উল্লেখ আছে। সব থেকে গোঁড়ায় গলদ রিপোর্টে যেটা আদলত স্পষ্টত বলে, ৪৯ (৬) ক্লজ ছাড়া কোথাও বলা নেই বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণের কথা। এক্ষেত্রে ভৎর্সনা, প্রমোশন আটকানো বা তদন্ত কমিটি গঠন ইত্যাদি হয়। আরেকটি বিষয়ে নিয়মের বৈষম্য দেখা গেছে একই অভিযোগে অভিযুক্ত অধ্যাপক নরোত্তম সেনাপতির ক্ষেত্রে। তছরুপ অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাঁর সই আছে। কিন্তু তাঁকে লঘু দণ্ড দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ জাতীয় এক যাত্রায় পৃথক ফল প্রদানে সিদ্ধ হস্ত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতীত্বের অভিযোগ অনেক দিনের।
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রদের উত্তেজিত করা এবং শোকজ চিঠি মিডিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে খড়্গ হস্ত হয় বিশ্বভারতী। সেই সংক্রান্ত মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে গেলে বিশ্বভারতীর মুখ পোড়ে।
(www.theoffnews.com - Visva Bharati University corruption Kolkata High Court)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours