দি ব্যুরো (বাংলাদেশ), দ্য অফনিউজ, কলকাতা:

বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৮৬ তম জন্মবার্ষিকী আজ। জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের এই দিনে বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন ক্ষণজন্মা এই বীরপুরুষ। তার পিতার নাম মনসুর রহমান এবং মা জাহানারা খাতুন। জিয়াউর রহমানের বাবা তৎকালীন সময়ে কলকাতার একটি সরকারি দফতরে কেমিস্ট ছিলেন। ভারত ভাগ হওয়ার পর তিনি করাচি বদলি হয়ে গেলে পুত্র জিয়াউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে যান। এর আগে পর্যন্ত জিয়াউর রহমান কলকাতার ঐতিহ্যবাহী হেয়ার স্কুলে লেখাপড়া করতেন।

জিয়াউর রহমানের ডাক নাম ছিল কমল। বগুড়া ও কলকাতায় শৈশব কৈশোর অতিবাহিত করার পর জিয়াউর রহমান পিতার কর্মস্থল করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৫ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। একজন সৈনিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও জিয়াউর রহমানের জীবনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তিনি দেশের সঙ্কটময় মুহূর্তে ত্রাণকর্তা হিসেবে বারবার অবতীর্ণ হয়েছেন এবং দেশকে সে সঙ্কট থেকে মুক্ত করেছেন। জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে অস্ত্র হাতে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধ শেষে হলে আবার সেনাবাহিনীতে সৈনিক জীবনে ফিরে গেছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান সময়ের প্রয়োজনেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তার হাতে গড়া সেই রাজনৈতিক দল আজ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশ বিনির্মাণে অসাধারণ দেশপ্রেমিক, অসম সাহসিকতা, সততা নিষ্ঠা ও সহজ সরল ব্যক্তিত্বের প্রতীক জিয়াউর রহমানের অবদান অসামান্য। জিয়াউর রহমান ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেন। আবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ও ফোর্সেস কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। বিশ্ব-মানচিত্রে তিনি বাংলাদেশকে ব্যাপকভাবে পরিচিত করিয়েছেন স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যে। জাতির মর্যাদাকেও বিশ্বব্যাপী সমুন্নত করেছেন তার শাসনামলে। জিয়াউর রহমান ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার হিসেবে এবং একই বছরের অক্টোবরে মেজর জেনারেল (সেনাবাহিনী প্রধান) হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। 

আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জিয়াউর রহমানের সৈনিক ও রাজনৈতিক জীবনের সততা, নিষ্ঠা ও নিরলস পরিশ্রম প্রতিটি মানুষ আজও স্মরণ করে গভীর শ্রদ্ধাভরে। একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবেও তার পরিচিতি সর্বজনবিদিত। সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক দর্শন ও দিক নির্দেশনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর তারই সহকর্মী খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। পরবর্তী সময়ে নানা রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে সিপাহি-জনতার ঐক্যবদ্ধ অভ্যুত্থান ঘটে। দেশের সেই চরম ক্রান্তিকালে সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াউর রহমান নেতৃত্বের হাল ধরেন। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাক-ব্যক্তিস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে আমৃত্যু চেষ্টা চালিয়েছেন। জাতির মধ্যে একটি নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করে তাদের জাগিয়ে তুলতে সফল হয়েছিলেন তিনি।

জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে শাহাদৎবরণ করেন।

(www.theoffnews.com - Bangladesh Ziaur Rahman)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours