সুস্মিতা পাল, লেখিকা ও শিক্ষিকা, কলকাতা:
পথ চলতে চলতে কখনো মিলে যায় দুটি ধারা, আবার কখনো আলাদা দিকেও পাড়ি দেয়।
"তুম ঔর ম্যায়
জিন্দগী কে সফর মে মিলে.....
জিস রাহ জিন্দগী লে গয়ী
চল দিয়ে........
ঔর ফির
না জানে কব.......
এক দুজে মে মিল কর
পানী বন গয়ে......
সাগর মে সমা গয়ে......
হাঁ......
তুম ঔর ম্যায়......
এক হো গয়ে......"
কবি সুমিত্রানন্দন পন্থের কবিতা বিশ শতকের হিন্দী সাহিত্যের কোষাগারকে অনেকটা সমৃদ্ধ করেছিল। কৌসানীর কবির সাদামাটা জীবনযাপনের পরিবেশ আর উপাদানকে সযত্নে বাঁচিয়ে রেখেছেন স্থানীয় মানুষ। কি যত্নে তাঁর স্মৃতি আগলে রেখেছেন, তার বসতবাড়িটিকে নতুন করে সংরক্ষণাগার বানানো হচ্ছে। বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কবির ওঠাবসা ছিল অথচ কি সাদামাটা জীবনযাপন - দেখলে অবাক হতে হয়। এই বিস্ময় যদি আমাদেরও কিছু শেখাতে পারে- তবেই তা সার্থক হবে। সুমিত্রানন্দন নামটি তার নিজের নির্বাচন। অবিবাহিত কবির দত্তক কন্যা সুমিত্রা যোশী দিল্লীতে থাকেন এখন।জমজমাট কৌসানী মার্কেট এরিয়ায় পন্থ মিউজিয়ামে ভারি সুন্দর সময় কাটল।
কৌসানীতে গান্ধিজীর অনাসক্তি আশ্রম পাহাড় চূড়ায় এক অনবদ্য আকর্ষণ। ১৯২৯ এ বাপুজী এখানে কিছুদিন ছিলেন। জায়গাটির শান্ত পরিবেশ তাকে অপার তৃপ্তি দিয়েছিল, ভালোবেসে তিনি একে বলতেন - ভারতের সুইজারল্যান্ড। এখানে আপনিও থাকতে পারেন, অনলাইন বুকিং করা যায়। ব্যবস্থা নামীদামী হোটেলের থেকে কম নয়।উপরি পাওনা প্রার্থনা কক্ষে রাখা প্রচুর দুর্লভ ফটো।
মহাভারতের শান্তিপর্বে কৌশিকমুনির কথা মনে পড়ে? দস্যুদের ভয়ে এক পথিক তার আশ্রমে আত্মগোপন করে। দস্যুরা অনুসরণ করে সেখানে এসে মুনির কাছে খোঁজ চায়। কৌশিক কখনো মিথ্যা বলতেন না, তাই বলে দেন কোথায় লুকিয়ে আছে পথিক। সর্বস্ব লুঠ করে পথিককে হত্যা করে দস্যুরা। সত্যি বলার অপরাধে অনন্ত নরকে ঠাঁই হয় কৌশিকমুনির। সেই কৌশিকমুনির আমে পৌঁছলাম দুর্গম পাহাড়ী পথে ট্রেকিং করে। রুদ্রধারী ফলস-র জলধারা সাদা দুধের মতো শিবলিঙ্গের ওপর এসে পড়ত, যদিও এখন একটু দূরে সরে গেছে। জনহীন ঐ মন্দিরে একা সারাদিন কাটান পুরোহিত, অনেক গল্প করলাম তার সঙ্গে। জঙ্গলের গাছ, ক্যাকটাস, সোঁতা চিনতে চিনতে দু একবার পা হড়কে সামলে দারুণ অ্যাডভেঞ্চারাস সময় কেটেছিল সেদিন।
শাল (Shawl) ফ্যাক্টরিতে নিজের চোখে দেখেছিলাম কিভাবে ভেড়ার লোম থেকে সুতো বা উল বের করে কার্ডিগান বোনা হচ্ছে। ভেড়ার লোম থেকে তৈরী এই কার্ডিগান শীতের দিনে যে উষ্ণতা দেয়, তার জুড়ি মেলা ভার। পশমিনা তৈরী হয় কচি ভেড়ার লোম থেকে, তবে কাশ্মীরের নরম পশমিনা খরগোশের লোম থেকে তৈরী - জানালেন কারিগররা। বাংলার তাঁতের মতো যন্ত্রে হাতে বোনা হয় এধরনের শীতবস্ত্র। (ক্রমশঃ)
(ছবি সৌজন্যে প্রতিবেদক স্বয়ং)
(http://www.theoffnews.com travel)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours