সুকন্যা পাল, ম্যানেজিং এডিটর, দ্য অফনিউজ, কলকাতা:

মনের মনিকোঠায় একটা স্বপ্ন সুপ্তঘুমে লুকিয়ে ছিল বরাবরই। সেই কাঁচা শৈশব থেকে। অনেকটা ঝিনুক খোলে মুক্তের সংগোপনে লালন অবস্থানের মতো। তাই সুযোগ আসতেই ফার্স্ট স্লিপে লোপ্পা ক্যাচ ধরবার মতোই সদ্য ছোঁয়া কচি যৌবন বয়সের অলিন্দেই আত্মপ্রকাশ ঘটল মুক্ত-স্বপ্নের মুক্তির চিকমিক স্খলন। ভারতের মতো আসমুদ্রহিমাচল ব্যপ্তি বিশাল দেশে একশোজন মেধাবী পড়ুয়ার সারিতে সে তাই আজ অন্যতম স্বীকৃত লেখক-ছাত্র বনে গেছে রাতারাতি।

নাম তার রাজদীপ সাহা। রাজ্যের শিল্পনগরী দুর্গাপুরের বেনাচিতির বাসিন্দা। অষ্টাদশী যুবক। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সবে শেষ হয়েছে। ছোট থেকে তার পড়াশোনা স্থানীয় সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে। একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির পড়াটা ইস্পাত কলোনির  বিধানচন্দ্র ইনস্টিটিউশনে। রাজদীপ বরাবরই সেই স্বপ্ন দেখে এসেছে, সে একদিন দশের মধ্যে দশ নয়, দশের গর্ভে এক হবে। আজ সেই স্বপ্নপূরণের মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে দুর্গাপুরের গর্বের রাজদীপ।

ব্যাঙ্গালুরুর দ্য রাইট অর্ডার পাবলিকেশন্স নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনধারা সম্পর্কে একটি বই প্রকাশ করে সম্প্রতি। প্রকাশক দ্য ইউথ অফ ইন্ডিয়া সারা দেশের মধ্যে একশোজন মেধাবী ছাত্রকে বেছে নেয় লেখক হিসেবে। আটশো পাতার এই বইটিতে জ্বলজ্বল করছে রাজদীপের মনন ছোঁয়া ধারালো লেখাটি। বইটি বাজারজাত হতেই ক্রেতাদের কাছে মূহুর্তেই হটকেক হয়ে ওঠে। নিত্যদিন বেড়েছে বই বিক্রির পারদ গ্রাফ।

রাজদীপের বাবা কমলেশ সাহা এলাকার একটি স্কুলে সেক্রেটারি পদে কর্মরত। মা বর্ণালীদেবী নিপাট গৃহবধূ। মূলত বাবা-মার পরম উৎসাহে রাজদীপের এই লেখ্য পাদপ্রদীপের উজ্জ্বল শিখায় হয়ে উঠে আসা। সন্তানের এই সাফল্য রীতিমত উৎফুল্ল বর্ণালীদেবী। তিনি বলেন, "আমাদের একমাত্র সন্তানের এই কর্মকান্ডে আজ আমি এক গর্বিত মা। রাজদীপ আরও জীবনে প্রতিষ্ঠিত হোক এই কামনা করি। ওর লেখা আমার মাতৃত্বকে পূর্ণ করে দিয়েছে।

"গত মার্চ মাসে আমি লেখাটি প্রকাশকের কাছে পাঠিয়ে ছিলাম। ছোটবেলা থেকেই নেতাজী আমার কাছে জাতীয় হিরো। তাই সুভাষচন্দ্রের উপর লেখার সুযোগটা হাতছাড়া করিনি। তবে আমার লেখা এরকম একটি এই উচুঁ মানের বইয়ে স্থান করে নেবে সেটা এখনও ভাবতেই অবাক লাগছে।" কথাগুলো রাজদীপের। বইটি তখনও তার হাতেই রয়েছে। "চ্যারিয়টস অফ রিবেলিয়ন" শীর্ষক বইটির পাতা ক্রমেই উল্টে চলেছে। পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে রাজদীপ হঠাৎ অস্ফূট স্বরে আবার বলে উঠলো, "আমার জীবন সাফল্যের পাতা সবে উল্টাতে আরম্ভ করেছে। আমি এতে আত্মবিশ্বাসী ঠিকই। কিন্তু আত্মস্থবীরতা আমাকে পেয়ে বসতে পারেনি। কলমটা খোলা রেখেছি। অনেক সাদা পাতা ভরাট করার কাজ এখনও বাকি। আপনাদের কাছে আশীর্বাদ চেয়ে আমি ক্লান্তহীন এক লেখক হতে চাই।" 

(www.theoffnews.com - book Durgapur)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours