তপন সান্যাল, কবি, গীতিকার ও গবেষক, পাইকপাড়া, কলকাতা:
কলেরা, গুটিবসন্ত, প্লেগ, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়ার মুখোমুখি হওয়া রবীন্দ্রনাথ ইতিহাস ও অভিজ্ঞতার সূত্রে জেনেছিলেন, অদৃশ্য ঘাতক জীবাণু কী ভাবে দাঁত বসায় সুস্থ সমাজ ও সংস্কৃতির গতিশীল বুনিয়াদে। তাঁর মহামারী -অভিজ্ঞতার প্রতিক্রিয়া দু’রকম। সংক্রামক ব্যাধিতে বিপর্যস্ত সমাজ-সংস্কৃতির রূপকে সৃষ্টিতে গেঁথে রাখা, আর গণপরিসরে নিজেই জনস্বাস্থ্য কর্মী হয়ে ওঠা। ‘গোরা’ উপন্যাসে কলেরায় স্বামী-সন্তানহারা হরিমোহিনীর বিলাপে দৈব-বিশ্বাসী বাঙালি সমাজমানসের আত্মনিয়ন্ত্রণহীন কপাল-চাপড়ানো রূপ তিনি এঁকেছেন নিরাসক্ত দৃষ্টিতে। বঙ্গদেশে ১৮৯৮-১৯০৮ পর্যন্ত প্লেগ রুখতে সরকারি উদ্যোগ থাকলেও কেউ চট করে চিকিৎসালয়মুখী হত না। আতঙ্কিত মানুষ দেখেছিল, প্লেগ রোগী সরকারি চিকিৎসালয়ে যায় কিন্তু ‘জ্যান্ত’ বাড়ি ফেরে না।
ঠিক যেমন অনেকেরই ধারণা হাসপাতালে গেলে আর বাড়ী ফিরবে না। সরকারি চিকিৎসার প্রতি জনমনে ছিল ভয়, বিদেশি স্বাস্থ্য প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা। তাই ‘চতুরঙ্গ’ উপন্যাসে প্লেগ থেকে বাঁচতে জগমোহন চাঁদা তুলে স্বদেশী হাসপাতাল খোলে। আবার ‘দিদি’ গল্পে ওলাউঠা থেকে মুক্তি পেতে গ্রামীণ ‘নেটিভ’ ডাক্তারের চেয়ে শহুরে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকে আস্থা রাখে গ্রাম্য বধূ শশীকলা। ‘দুর্বুদ্ধি’ গল্পে ডাক্তার ওষুধ ছাড়াও বিশ্বাস করে কর্মফলে। মহামারি-প্রেক্ষিতে জনমানসের ব্যবহারিক ও মনস্তাত্ত্বিক গতি-প্রকৃতিকে সাহিত্যে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ। সে প্রসঙ্গগুলি সাহিত্যের নান্দনিক মাত্রা পুষ্ট করেছে, তারও বেশি তুলে ধরেছে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রচলিত ধ্যানধারণা বিশ্বাস ও সংস্কার-আশ্রিত জীবনযাত্রার স্বরাঘাত।
চিঠিপত্রে, প্রবন্ধে (‘ম্যালেরিয়া’, ‘সমবায়ে ম্যালেরিয়া নিবারণ’, ‘দেশের কাজ’ ইত্যাদি) ও কবিতাতেও (‘পুরাতন ভৃত্য’, ‘অভিসার’, ‘নৈবেদ্য’-এর ৯২-সংখ্যক কবিতা) মহামারী নিছক প্রসঙ্গ নয়। রবীন্দ্রনাথ দেখালেন, গুটিবসন্ত, কলেরা, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি জীবাণুবাহিত রোগ কোনও স্থানিক বিষয় নয় (বৃন্দাবনে গিয়ে বসন্তে আক্রান্ত হয় মনিব ও ভৃত্য), আবার নির্দিষ্ট কালের খড়ি টেনে মড়কের জন্মদিন চিহ্নিত করাও বাতুলতা। মহামারির আতঙ্কে কোণঠাসা জনগণকে সারকথা বোঝাতে রবীন্দ্রনাথ ফিরে যান বৌদ্ধ যুগে। সে কালেও সংক্রমণ থেকে রক্ষা পায়নি সমাজ, গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয়েছেন নটী বাসবদত্তা। ছোঁয়াচে রোগাক্রান্ত মানুষকে কোনও কালে সমাজ কোল দেয় না, নিজেকে বাঁচাতে ঘরে-বাইরে তৈরি করে স্পৃশ্য-অস্পৃশ্যের দেওয়াল।
জগদীশচন্দ্র বসু প্লেগের ভয়ে বাড়ি পরিবর্তন করেছিলেন। তার নির্দিষ্ট কারণ অবশ্য ছিল। ১৩৯ নম্বর ধর্মতলা স্ট্রিট থেকে তিনি সুহৃদ রবীন্দ্রনাথকে লিখেছিলেন, “উপরের ঠিকানা থেকে বুঝিতে পারিয়াছেন যে, আমি পলাতক—প্লেগের অনুগ্রহে। আমার একজন ভৃত্য ছুটী লইয়া একদিন বড়বাজার গিয়াছিল। সেখান হইতে আসিয়া একদিন পরেই প্লেগ হয়। আর ৩০ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু। বাড়ি ছাড়িয়া আসিয়া উক্ত ঠিকানায় আছি—কতদিন পলায়ন চলিবে জানি না।” এ কেবল জগদীশচন্দ্র বসুর ক্ষেত্রেই নয়, প্রায় সকল কলকাতাবাসীর এমন অবস্থা দেখা দিয়েছিল। রবীন্দ্রনাথও চিঠি-পত্রাদিতে পরিচিত সকলকে সাবধান করতেন। পাড়ায় পাড়ায় নজরদারিতে যাওয়ার সময়েও প্রত্যেককে ঠিক উপায় অবলম্বনের পরামর্শ দিতেন।
প্লেগ ঠেকাতে ব্রিটিশ সরকার টিকাকরণের পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু তীব্র ইংরেজ-বিদ্বেষ, গুজব, রোগ-ভীতি, পর্দাসীন সাধারণের অন্দরমহলে বাইরের লোকের প্রবেশ ইত্যাদি নানা কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষেপে উঠেছিল। এমনকি, রামকৃষ্ণ মিশন থেকে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিলি করা হলে মঠের সন্ন্যাসীদের উপরে আক্রমণও হয়। স্বামী বিবেকানন্দ যে দিন দার্জিলিং থেকে ব্যাগপত্র নিয়ে কলকাতায় আসেন, রাস্তার মানুষ তাঁর প্রতিও মারমুখী হয়ে ওঠে। স্বামীজির ব্যাগে নাকি প্লেগের টিকা আছে। অবশেষে হাত জোড় করে স্বামীজিকে বলতে হয় যে, তিনি ফকির মানুষ, বিদেশ থেকে ফিরছেন।
কলকাতার নাগরিকদের সচেতন করতে রবীন্দ্রনাথও উদ্যোগী হয়েছিলেন। ঠাকুরবাড়ির প্রায় সকল সদস্যই তাতে শামিল হন। ‘Calcutta Notes’ এ নিবেদিতা লিখেছেন, “A few great Hindu families, notably the Tagores, stood firm, in the hope of allaying the agitation.” ঠাকুরবাড়ি যখন প্লেগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে, সে সময়েই অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নয়-দশ বছরের মেয়ে প্লেগ আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাধ্য হয়ে তাঁরা চৌরঙ্গির একটা বাড়িতে পালিয়ে যান। সেখানেই তিনি বিখ্যাত ‘শাহজাহানের মৃত্যু’ ছবিটি আঁকেন। অবনীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, “মেয়ের মৃত্যুর যত বেদনা বুকে ছিল সব ঢেলে দিয়ে সেই ছবি আঁকলুম।”
শুধু প্লেগ নয় কলেরা বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো মহামারীতেও রবীন্দ্রনাথ সক্রিয় ভূমিকা নেন। ১৯১৫ সালে বাংলায় কলেরা মারাত্মক আকার নেয়। ঠাকুরবাড়িতেও মৃত্যু হানা দেয়। রবীন্দ্রপুত্র শমীন্দ্রনাথ কলেরায় মারা যায়। কবির লেখনী আরও শক্ত হয়ে ওঠে। ‘ওলাউঠার বিস্তার’ নামক প্রবন্ধে তিনি বিভিন্ন দেশে এ রোগের বিস্তার নিয়ে আলোচনা করেন। ‘গোরা’ উপন্যাসে হরিমোহিনীর স্বামী ও পুত্রের মৃত্যুর কথা লিখতে গিয়ে নিজের দুঃখের কথাই যেন ব্যক্ত করলেন তিনি—“যে দুঃখ কল্পনা করিলেও অসহ্য বোধ হয় তাহাও যে মানুষের সয় ইহাই জানাইবার জন্য ঈশ্বর আমাকে বাঁচাইয়া রাখিলেন।” তাঁর ‘দুর্বুদ্ধি’, ‘দিদি’ ছোটগল্পেও কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা আছে।
তিনি বুঝেছিলেন, মহামারী -পীড়িত গ্রামকে বাঁচাতে শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনায় কাজ হবে না। ১৯২১-এ শান্তিনিকেতনের কাছে ম্যালেরিয়াগ্রস্ত জনপদে পথে নামলেন, ধারাবাহিক প্রচেষ্টার জোরে নেতিয়ে পড়া গাঁ-গঞ্জের মনে গেঁথে দিলেন সাহস ও বিশ্বাস। অর্থাৎ মানসিক বল যেটা আজও খুব জরুরি। ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, দেশি-বিদেশি ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে পল্লিতে পল্লিতে খোলা হল সেবাকেন্দ্র। ম্যালেরিয়া-আক্রান্ত গ্রামকে সুস্থ করতে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী হলেন দক্ষ জীবাণু বিশেষজ্ঞ, দ্য সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ অ্যান্টি-ম্যালেরিয়া সোসাইটি’-র সেক্রেটারি গোপালচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আমেরিকার রকফেলার ফাউন্ডেশনের ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় পরিদর্শক ডাক্তার জে এফ কেন্ড্রিকও। প্রায় ৫ হাজার বৎসর ধরে গুটি বসন্তে মারা গেছে অসংখ মানুষ সারা পৃথিবী জুড়ে।
ব্রিটিশ চিকিৎসক এডওয়ার্ড জেনার আবিষ্কার করেন বসন্তের টিকা। ইংরেজ জীবাণু গবেষক এডওয়ার্ড অ্যান্টনি জেনারকে বলা হয় প্রতিষেধক বিদ্যার জনক। তখন বসন্ত ছিল এক মারাত্মক আতঙ্ক। মহামারী বসন্তে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেত। জেনারের টিকা সেই মহামারী নির্মূল করল। এই আবিষ্কার নানা জীবাণুঘটিত রোগের বিরুদ্ধে মানুষের সুস্থ থাকার লড়াইকে এক অন্য মাত্রা দিল। আবিষ্কৃত হল আরও বহু রোগের প্রতিষেধক। সেই পথেই ১৯৭৭ সালে পৃথিবী থেকে নির্মূল হয়ে গেছে কালান্তক গুটিবসন্ত। ১৭৯৬ টিকা আবিষ্কার হলেও মানুষের হাতে এসেছিল এই টাকা ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে। তবে মহামারীর সঙ্গে এমন লড়াই মানুষের প্রথম নয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পরপরই ভয়াবহ 'স্প্যানিশ ফ্লু'-র মতো মহামারী প্রাণ কেড়েছিল বহু মানুষের। এদেশে সেই মহামারী 'বম্বে ফ্লু' বা 'যুদ্ধজ্বর' নামে পরিচিত। ১৯১৪ থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত সেই ভয়াবহ মহামারীর সময় মানুষের সেবায় ব্রতী হয়েছিল খোদ রবীন্দ্রনাথ।
গবেষক চৈতালী দাশগুপ্ত বলেন, ''১৯১৮-র ওই সময় রবীন্দ্রনাথ মোট ১৫টি গান লিখেছিলেন। বাংলা দেশে জন স্বাস্থ্যের কথা তিনি প্রথম বলেন। যিনি হলেন সেবক রবীন্দ্রনাথ। যে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষেধক বানিয়েছে মানুষ সুস্থ করতে। বোলপুরের গ্রামের মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রী, যাঁদের এই রোগ হয়েছিল তাঁদের তিনি প্রতিষেধক বানিয়ে খাওয়ান। ওনার পাঁচনের প্রতি খুব আস্থা ছিল।উনার বাগেই থাকতো পাঁচন। উনার এলোপ্যাথিক এ খুব একটা আস্থা ছিল না। তাছাড়া আধুনিক বিজ্ঞান তখনও সেইভাবে গড়ে উঠেনি তাই মানুষের কাছে বিশ্বস্ত হয়ে উঠেনি। মহামারী ঠাকুরবাড়িতে অন্দরেও ঢুকে পড়েছিল। সেসময় শান্তিনিকেতনে এক ড্যানিশ মহিলা পড়াতে এসেছিলেন, তাঁর সূত্রেই জ্বরটা সেখানে আসে। তিনি শান্তিনিকেতনের উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। আর ওই উৎসবে যাঁরা ছিল, তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেরই এক অদ্ভুত জ্বর হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ প্রতিমাদেবীও আক্রান্ত হয়েছিলেন। সকলে সুস্থ হয়ে উঠলেও ওনার বড়দার ছোট পুত্রবধূ মারা যান। সেটা নিয়ে অনেক তোলপাড় হয়। রবীন্দ্রনাথের ভীষণই কাছের অজিতকুমার চক্রবর্তী মারা যান, যিনি ইংরেজীতে লিখেছিলেন প্রথম কবীর দোঁহার অনুবাদ। রবীন্দ্রনাথের ছোট মেয়ে মীরা দেবী বাইরে ছিলেন, উনিও আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই বিষয়গুলিই যুদ্ধ জ্বর এক তথ্যচিত্র উঠে এসেছে।''
তিনি আরও বলেন, ''তবে সেই রোগটা সেসময়ও এসেছিল বিদেশ থেকে। আজকের করোনা তাই।মাঝে ১০২ বছরের তফাৎ। আমরা মন্বন্তরে মরিনি। তাই এই মহামারী থেকেও আমরা বের হয়ে আসতে পারবো। এখনও যেমন সেই অর্থে কোনও ঔষুধ বের হয়নি, কিন্তু টিকা এসেছে, বিভিন্ন ঘরোয়া প্রতিষেধক ব্যবহার হচ্ছে। সেই সময়ও রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং এমনই বিভিন্ন প্রতিষেধকের ব্যবহার করেছিলেন।''
১৯১১ সালের ভারতবর্ষ। কলকাতা সহ নানা জায়গায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে প্লেগ। চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে অগণিত মানুষ। অসহায় মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসতে প্লেগের হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত হলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ভগিনী নিবেদিতা। অবশ্য এই উদ্যোগ্যে বিবেকানন্দ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
অসংখ্য পরিবারে তখন মৃত্যুর আওয়াজ। হননের কালে রবীন্দ্রনাথ লিখলেন, ‘...ম্যালেরিয়া-প্লেগ-দুর্ভিক্ষ কেবল উপলক্ষমাত্র, তাহারা বাহ্য লক্ষণমাত্র—মূল ব্যাধি দেশের মজ্জার মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে। আমরা এতদিন একভাবে চলিয়া আসিতেছিলাম আমাদের হাটে বাটে গ্রামে পল্লীতে আমরা একভাবে বাঁচিবার ব্যবস্থা করিয়াছিলাম, আমাদের সে ব্যবস্থা বহুকালের পুরাতন। তাহার পরে বাহিরের সংঘাতে আমাদের অবস্থান্তর ঘটিয়াছে। এই নতুন অবস্থার সহিত এখনো আমরা সম্পূর্ণ আপস করিয়া লইতে পারি নাই; এক জায়গায় মিলাইয়া লইতে গিয়া আর এক জায়গায় অঘটন ঘটিতেছে। যদি এই নতুনের সহিত আমরা কোনোদিন সামঞ্জস্য করিয়া লইতে না পারি তবে আমাদিগকে মরিতেই হইবে।’
করোনা বিপর্যয় আমাদের সম্পূর্ণ নতুন পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছে। মানুষ সামাজিক জীব।সংঘবদ্ধতাই মানুষের ধর্ম। অথচ দৈহিক দূরত্ব তথা বিচ্ছিন্নতাই এ সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
রবীন্দ্রনাথের কথা আজও কত প্রাসঙ্গিক। 'নিজের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, সর্বোপরি ধরণির স্বার্থে এই নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের সামঞ্জস্য বিধান করতেই হবে। ‘যদি এই নতুনের সহিত আমরা কোনোদিন সামঞ্জস্য করিয়া লইতে না পারি তবে আমাদিগকে মরিতেই হইবে’—রবীন্দ্রনাথের এই সাবধানবাণী কাকতালীয়ভাবে বর্তমান মহামারির সময়ে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। এইখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গৌতম বুদ্ধের সময়ে বৈশালীতে অনাবৃষ্টি ও মহামারীতে বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন।
বুদ্ধ নিজে রাস্তায় নেমেছিলেন যাতে মানুষের সেবা করা যায়। এই সব ইতিহাস রবীন্দ্রনাথ জানতেন তাই তিনি শুধু সাহিত্যে কর্মে থেমে থাকেননি। তিনি তখন যুদ্ধে রত এক জনস্বাস্থ্য সৈনিক। এক বিশ্বকবি মানুষের বিপদের সময়ে জনস্বাস্থ্য কর্মীতে রূপান্তরিত হচ্ছেন এটাই বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতি। মহামারী শেষ পর্যন্ত হারবে মানুষ জিতবে এটাই ইতিহাস, এটাই অভিজ্ঞতা। তাই আতঙ্ক নয় আজ সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন যা মানুষ ইতিমধ্যে শুরু করছেন এই যুদ্ধ জয়ের জন্য।
(www.theoffnews.com - Rabindranath Tagore epidemic)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours