তপন সান্যাল, কবি, গীতিকার ও গবেষক, পাইকপাড়া, কলকাতা:

মোগল সাম্রাজ্য অস্ত যাওয়ার কালে ছিল উর্দু কাব্যের সবচেয়ে অহঙ্কারের যুগ। এর কারণ বোধ হয় এই যে, উর্দু কাব্য বাইরের প্রকৃতির চাইতে মানুষের মনোজগতের প্রকৃতির দিকেই বেশি মনোযোগী। আর দীর্ঘ দিনের শাসনের, সংস্কৃতির অধিকার থেকে সরে যাওয়ার এমন দুর্যোগ ভারতবর্ষের বুকে কমই নেমেছে। মির্জা গালিব সেই বেদনার শ্রেষ্ঠ রূপকার। একজন মান্য কাব্য আলোচকের মতে—ভারতবর্ষে দু’টো মাত্র প্রেরিত পুস্তক আছে, একটি পবিত্র বেদ আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে গালিবের কাব্য সংকলন। 

সাহিত্যে তার অনন্য অবদানের জন্য তাকে দাবির-উল-মালিক ও নাজিম-উদ-দৌলা উপাধি দেওয়া হয়। তার সময়কালে ভরতবর্ষে মোঘল সাম্রাজ্য তার ঔজ্জ্বল্য হারায় এবং শেষে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ এর মধ্য দিয়ে ব্রিটিশরা পুরোপুরিভাবে মোঘলদের ক্ষমতাচ্যুত করে সিংহাসন দখল করে, তিনি তার লেখায় এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন।

মহাবিদ্রোহের সময়কার তার লেখা সেই দিনলিপির নাম দাস্তাম্বু। ১৭৯৭ সালে আগ্রায় জন্ম নিয়ে ছিলেন মির্জা আসাদুল্লাহ খান। কবির নাম ‘গালিব’, যার অর্থ বিজয়ী। কৈশোরের পর জীবনের বাকি অংশ কাটিয়েছেন দিল্লিতে। ভারতবর্ষের প্রথম আধুনিক মানুষদের মধ্যে অন্যতম তিনি। বলা হয়—কাব্য যদি ধর্ম হয়, তবে গালিবকে না বোঝা মানে কাফের হওয়া! গালিব দৃশ্যকল্পের কবি। মাত্র ২৩৪টি গীতিকবিতা আছে তাঁর চলতি কাব্য সঙ্কলনে।তাতেই তিনি উর্দু কাব্যের অধীশ্বর।

মদ ও জুয়ার নেশায় তাঁর সর্বস্ব চলে গিয়েছিল।তিনি বলতেন শরাব ছাড়া কি করে শায়েরী তৈরি হবে। ওই সময় তাঁর ঋণ ছিল প্রায় ৪০ হাজার টাকার মতো। তিনি দেশী মদ খেতে পারতেন না।খেতেন বিদেশী মদ বাইরের দেশ থেকে আসতো।অবশেষে গালিবের হাজত বাস হলো। ঋণ শোধে ব্যর্থ হওয়ায়। শেষে বন্ধু নবাব আমনুদ্দিন তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

গালিব সিপাই বিদ্রোহকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। সময়টা ছিল এমন ভারতবর্ষ তখন মোঘল শাসন থেকে ব্রিটিশের হাতে হস্তান্তরিত হচ্ছে। সাল  ছিল ১৮৫৭। তিনি বাড়ী থেকে বেরোতে পারছেন না। মুসলমান দেখলেই কচুকাটা করছে ব্রিটিশ সিপাহীরা। আর এক দিকে চলছে দেশে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। অর্থাৎ তিনি মহামারীও কাছ থেকে দেখেছেন। অর্থাৎ ম্যালেরিয়ার প্রকোপে মানুষের মৃত্যু, সিপাহীদের হাতে মৃত্যু, অন্যদিকে অর্থাভাব। এই ছিল গজলের ভিত্তি, মহান কবির উপাদান। তিনি তাঁর সমস্ত যন্ত্রনাকে কাব্যে উজাড় করে ঢেলেছেন। কিন্তু বেঁচে থাকতে সন্মান পাননি।  তাঁর মূল্যায়ন হলো পরের যুগে অর্থাৎ ঊনিশ শতকে।

তাঁর সমসাময়িক অন্য কবিরাও রসিকতা করতেন:

‘মিরের কবিতা বুঝলাম, সওদার ভাষাও বুঝি কিন্তু আপনার কবিতা আপনি, নয়তো খোদা ছাড়া কেউ বোঝে না।’ এরপর মির্জা গালিব নিজে উত্তর দিলেন: 'প্রশংসার বাসনা নেই, নেই স্বীকৃতির অভিলাষ। আমার কবিতায় যদি অর্থ না থাকে, নাই থাকল।’ 

সেই সময় গালিব এক মান্য অভিধানের ভুল ধরে লিখলেন নিজে একটি অভিধান। ভাষার জগতে তাই নিয়ে কোলাহল পড়ে গেল। যা লিখলেন, তা বাদ দিয়ে গালিবের বদনামি নিয়ে আলোচনা শুরু হলো বেশি। দিনে একাধিক বেনামি চিঠি আসা শুরু হলো। তাতে খিস্তি-খেউর ভর্তি। একদিন দুপুরের খাবার খাচ্ছেন গালিব। ডাকপিয়ন চিঠি দিয়ে গেল। প্রেরকের নাম নেই, অচেনা হাতের লেখা দেখে তিনি সেটা এক সাগরেদকে দিয়ে বললেন, ‘কী ব্যাপার দেখো তো।’ তবে চিঠি পড়ে শিষ্যটি চুপ। গালিব বুঝলেন, এটি সেই গালমন্দের চিঠি। তাই নিজেই নিয়ে পড়ে দেখলেন। হেসে বললেন: ‘গাধাটা গালও দিতে জানে না। বুড়ো লোককে মা ধরে গাল দিতে নেই। এদের গাল দিতে হয় মেয়েকে নিয়ে। জোয়ান লোককে গাল দিতে হয় বউকে নিয়ে। এদের বউয়ের জন্য মনে ভালোবাসা থাকে। আর বাচ্চাকে গাল দিতে হয় তার মায়ের নাম ধরে। কারণ, এর চেয়ে আপন তার আর কেউ নেই। এ যে আমার মতো বাহাত্তর বছরের বুড়োকে মা ধরে গাল দিচ্ছে! এমন বেকুব আগে দেখিনি।’ 

এ তো গেল কবিদের সঙ্গে কবির দড়ি টানাটানি। এমন রসিক কিন্তু জটিল কবিকে সাধারণ মানুষ খুব পছন্দ করে। তিনি তাদের কাছে পরিচিত ‘চাচা গালিব’ নামে। গালিবের নামে চালু আছে এত কবিতা, যার খুব কমই গালিবের নিজের লেখা। যাঁর কবিতা নিয়ে ভারী কাচের চশমাওয়ালা গবেষকেরা নিত্যই ভিরমি খান, তিনি কী করে সাধারণে এত প্রিয় হন! 

এটা বুঝতে হলে মির্জা গালিবের সময়টাকে বুঝতে হবে। আর এও বুঝতে হবে যে তিনি তাঁর সময়কে বুঝতে পেরেছিলেন। তখন কয়েক শতাব্দীর পরাক্রান্ত মোগল সাম্রাজ্য লালকেল্লার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। নিজে অভিজাত পরিবারের লোক হয়ে ইংরেজদের কাছে পৈতৃক মাসোহারার জন্য মামলা লড়ছেন গালিব। যা কিছু এত দিন মহান ছিল, তার সব বেমালুম মিলিয়ে যাচ্ছে হাওয়ায়। এই সব দেখে জগতের ধ্রুপদি ব্যাখ্যায় সন্দিহান হয়ে পড়েন তিনি। ফলে একদিন গরমকালে খোলা ছাদে শুয়ে তারাভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে এই কবি বলেছিলেন, ‘আকাশের তারাগুলো এমন এলোমেলো ছড়ানো, এই জগৎ-সংসার কেউ পরিকল্পনা করে তৈরি করেছে কিনা, সন্দেহ হয়!’ 

তবে এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না যে গলিবের মাসিক রোজগার ছিল ২৭ টাকা। আর ঘরে ছিল ২০ জন খাওয়ার লোক। এদিকে রাতে বিদেশি মদিরা, খাঁটি গোলাপজল, প্রতিদিন তাজা ফুল, সোহান হালুয়া আর কাবাব ছাড়া তাঁর চলে না। এর মধ্যে আবার পাওনাদার ঘরে এসে তাগাদা দিয়ে যা-তা কথা শুনিয়ে যায়। এই সব নিয়ে বন্ধুকে চিঠিতে লেখেন গালিব: 

'এই সব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার এক উপায় আমি বের করেছি। নিজেকে আমি আরেকজন ভেবে নিই। যখন পাওনাদার ঘরে এসে অপমান করে যায়, তখন নিজেকে আরেকজন ভেবে নিয়ে নিজের দুর্দশায় নিজেই মজা পাই। তখন নিজেকে বলি, নে, আরও ধার কর, ফুলওয়ালার কাছ থেকে ফুল, বাজাজের থেকে কাপড়, সাহুকারের কাছ থেকে টাকা ধার কর! আরে, ধার করার আগে তো ভাববি যে শোধ করবি কোত্থেকে!’ 

রাজকৃপা আশ্রিত কবিদের দিন শেষ। রাজা নিজেই মাসোহারা নিয়ে চলেন! বহু প্রতীক্ষার পর সেই ভাঙা দরবারের সভাকবি হলেন গালিব। এর কয়েক দিন পর মোগল শাসনই আর থাকল না। লক্ষ্ণৌর যে নবাবের কাছ থেকে মাসিক ভাতা পেতেন, গদি হারালেন সেই নবাবও। সেই সময় কবিকে একজন বললেন, ‘আপনি রামপুরের নবাবের কাছে সাহায্য চান।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে গালিবের বক্তব্য ছিল, ‘আমার সঙ্গে বদনসিবি জড়িয়ে আছে। যে আমাকে সাহায্য করে, তারই কপাল পোড়ে। রামপুরের নবাবের সঙ্গে দুশমনি থাকলে নিশ্চয়ই আমি তাঁর সহায়তা চাইতাম।’ 

এরপর অবশ্য রামপুরের ওই নবাবের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল গালিবের। বিদায় নেওয়ার সময় নবাব তাঁকে বললেন, ‘মির্জা, খোদা হাফিজ। মানে আপনাকে খোদার হাতে সঁপে দিলাম।’ গালিব বললেন, ‘হায় হায়, এ কি বললেন নবাব সাহেব!’ বিস্মিত হয়ে নবাব বললেন, ‘ভুল কী বললাম!’ এবার কবি জবাব দিলেন, ‘খোদা আমাকে নিয়ে নাচার হয়ে আপনার কাছে পাঠালেন আর আপনি আবার আমাকে ফিরিয়ে তাঁর কাছে সঁপে দিচ্ছেন!’ 

গালিব বুঝতে পেরেছিলেন, অতীত হয়ে গেছে বিগত মহিমার কাল। নবাব-বাদশাহরা নিজেও তাঁর মতোই ব্যতিব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন—আজ গদিতে তো কাল পথে। পুরোনো দিনের সঙ্গে পুরোনো সংস্কৃতিও মিলিয়ে যাচ্ছে। এটা যতই বেদনারই হোক, তা আর ফিরে আসবে না। 

যে সময়ে মানুষের মৃত্যু মুড়ি মুড়কির মতো হচ্ছে সেই সময়ে উনি আত্ম জীবনী লিখছেন। কাশ্মীরি গেটের কাছে ব্রিটিশ রেসিডেন্টের বিশাল আবাস, এখন যুদ্ধঘাঁটি। প্রখর সূর্য ফোস্কা ফেলছে দিল্লির এমনিতেই পুড়ে যাওয়া ত্বকে। পেটের অসুখ আর ম্যালেরিয়া ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে মহামারির আকার নিয়েছে প্রায়। মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে প্রতিদিন। ঘরে ঘরে মৃত্যুর ছোবল। ব্রিটিশরা একের পর এক যুদ্ধ জিততে শুরু করেছে। সিপাহিদের পতন অদৃশ্য কালিতে লেখা হয়ে গিয়েছে লালকেল্লার ওই দেওয়ালে। প্রস্তরবৎ মির্জা আসাদুল্লা খান গালিব। দোয়াতে কলম চুবিয়ে হলদেটে কাগজে আঁকিবুঁকি কাটছেন মাঝে মধ্যে। আসলে ঠিক আঁকিবুঁকিও নয়। কয়েকটি বাক্য বার বার লিখছেন আর কেটে দিচ্ছেন। ‘আমার শহরের নাম দিল্লি। আমার মহল্লার নাম বাল্লিমারান…’ ব্যস, আর এগোচ্ছে না কলম। কেটে দিচ্ছেন, কালি উপচে পড়ছে। পাতাটির চেহারাও যেন হয়ে উঠছে আজকের দিনের দিল্লির মতো— ভাবলেন গালিব। এখানে এক ধ্বংসযজ্ঞ, মহামারি চলছে— যে গোলকধাঁধায় প্রবেশ আছে, কিন্তু নির্গমনের পথ নেই। সমস্ত মুশায়রা আজ যেন মৃত। রুক্ষু বাতাসে মিশে যায় গালিবের প্রশ্বাস। কলম চলতে থাকে…..

নহ গিলে নাগমা হু নহ পরদাএশাজ

ম্যয় হু অপনি শিকসত কী আওয়াজ

‘মৃত্যুর শহর। প্রিয় দিল্লি হে আমার, তুমি এখন শুধুই মৃত্যুর শহর।’ নিজের মনে বিড়বিড় করছেন গালিব। উমরাও বেগম রাগ করে উঠে চলে গিয়েছেন কিছুক্ষণ আগে। ঘরে পিন পতনের নীরবতা। একটা টিকটিকি বা পতঙ্গেরও দেখা নেই। বাইরে থেকে নৈমিত্তিক কাকের ডাকও তো ভেসে আসছে না। দিল্লির অনেক মানুষের মতো ওরাও কি তা হলে পালাল শহর ছেড়ে? বিড়বিড় করতে করতে টেবিলে এসে ঝুঁকে বসলেন গালিব। দাস্তাম্বু অর্থাৎ দিনলিপি লিখছিলেন যে খাতায়, সেটি টেনে নিলেন। সাদা পৃষ্ঠায় কালির আঁচড় পড়তে থাকল, যেন তাঁর ভিতরের বেড়ে যাওয়া ধুকপুকের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই।

হিন্দন নদীর ধারে ব্রিটিশ সেনার সঙ্গে সিপাহিদের লড়াই ক্রমশ রক্তাক্ত হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই ঘোড়সওয়ার ব্রিটিশ সেনারা দিল্লির একাংশ তছনছ করে দিয়েছে। নৌকো জোড়া লাগিয়ে যমুনার উপর সেতু গড়েছে। বাদশাহ বাহাদুর শাহ জাফরের প্রিয় নদী, নিভৃত কক্ষে বসে তিনি যার শোভা দেখতেন, তা এখন শোণিতে লাল হওয়ার অপেক্ষায়।

দরজায় করাঘাত শুনে উঠলেন গালিব। তাঁর পরম সুহৃদ হাকিম আহসানউল্লা উদ্‌ভ্রান্ত, আতঙ্কিত হয়ে দাঁড়িয়ে। তিনি বাদশার চিকিৎসকও বটে। একটু দম নিয়ে হাকিম জানালেন, বাদশাই দূত হিসেবে পাঠিয়েছেন তাঁকে। গালিবের হাল-হকিকত জানতে। মেরঠ থেকে আসা ব্রিটিশ সেনারা কেল্লার কাছে পৌঁছেছে। শোনা যাচ্ছে, পথে-ঘাটে মুসলমান দেখলেই কচুকাটা করছে। বাদশা বলেছেন, গালিব যেন খুব সাবধানে থাকেন। রাতে তো নয়ই, দিনমানেও যেন নিজের গলি থেকে বেরিয়ে জামা মসজিদ, চাঁদনি চৌকের দিকে না যান। বাহাদুর শাহ জাফর তাঁর প্রিয় কবির জীবন নিয়ে সবিশেষ চিন্তিত।

হা আল্লা! গালিব ভাবেন, এই মারণ সময়ে স্বয়ং বাদশার জীবন কে রক্ষা করবে? কে বাঁচাবে তাঁর সাধের দিল্লিকে? আর কথা না বাড়িয়ে দ্রুত পায়ে ফিরে যান হাকিম আহসানউল্লা। দরজার ফাঁক দিয়ে হট্টগোল, মারণ চিৎকার, হত্যাযজ্ঞের কিছু শব্দ কানে আসে। না কি তা মনের ভুল? এই মহল্লায় তো এখনও গড়িয়ে আসেনি হিংসা। তিনি যা দেখছেন তা কি বাস্তবের দিল্লি, না কি এ সব তাঁর সদা আতঙ্কিত মনের বিকারগ্রস্ত ভ্রম? ফের এসে বসেন গালিব। তবে এ বার আর কলম স্পর্শ করেন না। দু’হাতে মাথা চেপে ধরে বসে থাকেন চেয়ারে। প্রস্তরবৎ।

হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢোকেন উমরাও বেগম। আতঙ্কে তাঁরও চেহারা বদলে গিয়েছে। চোখের দৃষ্টি অচেনা। গালিব জানেন, ত্রাস তাঁর কণ্ঠস্বরও কী ভাবে বদলে দেয়। উমরাও কিছুটা বেখাপ্পা ভাবেই ঘরের মধ্যে চিৎকার করে ওঠেন, “আল্লা মেহেরবান!” পরিবেশ কিছুটা লঘু করার জন্যই গালিব বলেন, “বিবি, চিন্তা কোরো না। আমি খাঁটি মুসলমান তো নই! ব্রিটিশরা সেটা বুঝবে। অর্ধেক মুসলমানকে তারা মারবে না।” উমরাওকে অবাক হয়ে চেয়ে থাকতে দেখে গালিব বলেন, “আমি মদ্য পান করি ঠিকই, কিন্তু শূকরের মাংস তো ছুঁই না!” "হায় আল্লা! এমন কথা কি কোনও খাঁটি মুসলমান বলতে পারে?” "না বিবি, পারে না। আর সে কারণেই তো বললাম আমি নিরাপদ! যাও তুমি, এ সব বাজে চিন্তা না করে গোস্ত আর মোগলাই পরোটা বানিয়ে নিয়ে এসো। আর কাল্লু মিঞাকে দেখতে পেলে পাঠিয়ে দাও।” এই হলেন মির্জা গালিব। তিনি বলে দিয়ে গেছিলেন পরবর্তী যুগ তাঁকে মনে রাখতে বাধ্য হবে। তাই হলো বাস্তবে। গালিবের মৃত্যু ও তাঁর রচনা প্রকাশিত হওয়ার পর সারা দেশ শুধু নয়, সারা পৃথিবীতে নাম ছড়িয়ে পড়লো।

তিনি উর্দু কাব্যের অহংকার এবং অভিমান। এই উর্দু ও ফার্সি ভাষার কবির মৃত্যু হয় ১৮৬৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর। তিনি যে প্রকৃতই কালজয়ী বাদশা। গজলমহলের অন্তরালে তাই আজও তিনি শায়িত চিরন্তনী কলম-শয়নে।

(www.theoffnews.com - Mirza Ghalib)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours