শেখ ফরিদ, প্রগতিশীল লেখক, বাংলাদেশ:

পৃথিবীর পুরাতন ভাষার অন্যতম একটি সংস্কৃত ভাষা। অনেকটা প্রায় হারিয়ে যাওয়ার মত। ইহুদীদের হিব্রু ভাষা হারিয়েই গিয়েছিলো। তারা তা জীবন্ত করেছে গবেষনা ও প্রযুক্তির কল্যানে। ভারতের অনেক জায়গায় আমি ভ্রমন করেছি।  এমন কি মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়ার কারনে (?) কোন কোন স্থানে আমার প্রবেশ সনাতন ধর্মতঃ নিষিদ্ধ। সেখানেও আমি গিয়েছি। তবে অনেক অনুরোধের পরে তা সম্ভব হয়েছিল। 

কোথায়, মানুষের মাতৃভাষা সংস্কৃত সেগুলো খুঁজে বের করেছিলাম। এবং সেই সকল গ্রামের একটিতে বসবাসের চিন্তাও করেছিলাম সংস্কৃত শিখবো বলে। কিছু অর্থও জমা করেছিলাম এ কারনে। যদিও পয়সা সঞ্চয় করা আমার স্বভাব বিরোধী। কিন্তু বাধ সেধেছিলো সরকারি বিধি নিষেধ। তখন সেই গ্রামগুলোতে বিদেশি তো দুরের কথা ভারতীয়দেরও যাতায়াত ও বসবাসের অধিকার সংরক্ষিত ছিল। সে জন্য আর সেই গ্রামগুলোতে বসে সংস্কৃত ভাষায় কথা বলা শেখা  হয়ে উঠেনি।

প্রকৃতই কোন ভাষা পড়তে পারা, লেখা ও বলার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। কেউ কোন ভাষা কেবল পড়তে ও লিখতে জানলেই সে ভাষায় কথা বলতে পারে না। তাহলে বহু আগেই বাঙালি মুসলমান ইরানী ও আরবদের থেকেও বেশি আরবি ও ফার্সিতে কথা বলতে পারতো। আর বাঙালি হিন্দু মুসলমান উভয়েই ইংরেজিতে কথা বলতো বৃটিশদের চেয়েও বেশি। যা হয়নি, সম্ভবও নয়৷ স্রেফ ইংরেজিতে পাশ করার একটা সনদ মিলে। ইংরেজি শিখতে সময়, শ্রম ও অর্থের করুণ অপচয়ে পারদর্শী বাঙালি হিন্দু মুসলমান! চায়নিজ ও কোরিয়ানরা সে ভুল করেনি। কেবল চায়না ও কোরিয়া নয়। অনেক জাতিই তা করে না।

যে সাতটি গ্রামে বাসিন্দাদের মাতৃভাষা আজও সংস্কৃত সেগুলো হলো, ১) হোসাহালি, ২) মাতুর, ৩) বাঘুয়ার, ৪) মোহাড, ৫) ঝিড়ি, ৬) সাসানা, ৭) গানোদা।  মাতুর ও হোসালি কর্নাটক রাজ্যে। ঝিড়ি, বাঘুয়ার ও মোহাড মধ্যপ্রদেশে। সাসানা ওড়িশ্যায়। গানোডা গ্রাম রাজস্থানে।

আজও এই গ্রামগুলোতে মানুষ সংস্কৃত ভাষায় স্বপ্ন দেখে। স্বাগত ও বিদায় জানায়। গল্প করে। ঝগড়া করে। ভালোবাসা ও প্রেমের কথা সংস্কৃত ভাষাতেই বলে। প্রায় হারিয়ে যাওয়া কোন ভাষা আজও কোন গ্রামের মানুষের মাতৃভাষা এ ঘটনা বিরল। 

(www.theoffnews.com - sanskrit language mother tongue India)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours