চন্দ্রিমা দত্ত (সাঁজবাতি), লেখিকা ও শিক্ষিকা, শ্রীরামপুর, হুগলি:

যে বিষয়টি নিয়ে লিখতে বসলাম, তা অনেক বিস্তৃত লেখা যায়, কিন্তু মানুষের সময় এখন খুব কম। কেউ সহমত নাও হতে পারেন আমার সাথে। আমি শুধু মাত্র আমার মতামতটি লিপিবদ্ধ করলাম এই লেখাটিতে।

স্বার্থপরতাকে মানুষের চরিত্রের একটা দোষ বলে গণ্য করা হলেও সত্যিকারের স্বার্থপর মানুষ পৃথিবীতে খুবই কম। 

সংকীর্ণ অর্থে স্বার্থপরতা ঘৃণ্য, কিন্তু, ব্যাপক অর্থে?

ব্যাপক অর্থে এই স্বার্থপরতাই জগতের শ্রেষ্ঠ সম্মানের আসনটি নিয়ে বসে আছে।

যে ব্যক্তিকে আমরা মহান নিঃস্বার্থ বলে সম্মান দিয়ে থাকি, সেই ব্যক্তিই যে অন্যান্য স্বার্থপর মানুষদের থেকে নিজের স্বার্থটা বেশি মাত্রায় বুঝে নিচ্ছেন, তা কারও দৃষ্টিগোচর হয় না।

যে মানুষ, পার্থিব ভোগসামগ্রীর (জমি, বাড়ি, টাকা, সোনা) মধ্যে নিজের স্বার্থটিকে সংকীর্ণ করে রেখেছে, তার সত্যিকারের স্বার্থপর হবার অবকাশ কোথায়? সে তো সীমার স্বার্থের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছে ! সত্যিকারের স্বার্থপর হবার ক্ষমতাই তো সে হারিয়ে ফেলেছে !

কিন্তু, যে, সীমার স্বার্থকে পেছনে পথের ধূলোয় অবলীলায় ফেলে রেখে সামনের বিরাট অসীমের মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে, সে-ই তো সত্যিকারের স্বার্থপর হবার ক্ষমতা অর্জন করে নিয়েছে। তার স্বার্থপরতাই তাকে মহান করে তুলেছে, বৃহতের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করতে পেরেছে। পার্থিব ভোগের সংকীর্ণ স্বার্থকে নিঃস্বার্থ ভাবে ত্যাগ করেছে।

কিন্তু, এই বৃহৎ স্বার্থটি কি, তা বোঝবার ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই আছে। ঈশ্বর, এই বৃহৎ স্বার্থটিকে পার্থিব সুখসম্পদের স্বার্থ থেকে আলাদা করে রেখেছেন বলেই তা সাধারণের স্থুল দৃষ্টির আড়ালেই রয়ে গেছে।

অচেতনতার অন্ধকার যার দৃষ্টিকে আড়াল করে রেখেছে, অসীমের আনন্দ উপভোগ করার মহান স্বার্থটির সাথে তার মিলন হবার কোনওদিনই কোনো সুযোগ নেই।

কারন, সংসারের সংকীর্ণ সীমায় বিশ্বসংসারের অসীম সুর শোনার অবকাশই নেই তার।

আপনারা বলতে পারেন, তবে স্বার্থপর কে?

(www.theoffnews.com - selfish)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours