শামা আরজু, লেখক, বাংলাদেশ:
সেই সময়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত উপন্যাস। সম্ভবত ওখানেই পড়েছিলাম। বিছানায় অক্ষম মেয়েমানুষ পাশে থেকে কিভাবে বিছানার কাজে স্বামীকে যোগান দিতো। এরই নাম বৈধতা। ওতে পাপ হয় না।
বাবার অসুস্থতার কারনে পুরুষ ওয়ার্ডে মা একটা বসার টুলের ওপর ঠায় বসে থাকতেন আর বাবাকে বাড়তি অক্সিজেনের যোগান দেওয়ার জন্য সারাটা জীবন হাতপাখার বাতাস দিতেন। এই করে আর ক'দিনই বা একটা মানুষকে জীবিত রাখা যায়। বাবা একটু অসময়েই চলে গেলেন। অমানবিক শ্রমের মাসুল তো মাকে দিতেই হয়েছে। বৈধতার মোড়ক মাকে রেহাই দেয়নি ভোগান্তি থেকে।
মুশতাককে চলে যেতে হোলো। আইনের বৈধতার মোড়কেই মানুষ ভয়াবহ নির্যাতনের চিহ্ন রেখে চলে যায়। কিশোররা চোখের জলে ধারণ করেন আপাদমস্তক একটা ভয়াবহ আইনকে পোষা রাষ্ট্রকেই। তাও নাকি বৈধই সেটা ।
চারপাশের এতো এতো বৈধতায় কিছু মানুষ ভয়ানক মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেই খাবি খায়। আস্ত মানুষটাই একদলা অসুখ হয়ে যায়। ডাক্তারের কাছে গিয়ে আরও কয়েক দফা অসুস্থ হয়। কৃষিতে মনযোগ কম হলেও শিল্পে মনযোগ অনেক বেশি রাষ্ট্রের। ওষুধ চাষে কাঁচা টাকা। অসুখও এখানে চাষই হয়। রোগীর চাইতে ওষুধ কোম্পানির লোকের প্রতিই যেন ডাক্তারের দায়বদ্ধতা বেশি। এই করে করে সভ্যতার বুলি আওড়ানো গেলেও ঠিক সভ্য হওয়া যায় না। হাসপাতালগুলো আর মসজিদ - মন্দিরের চাকচিক্যই প্রমাণ করে একটা সমাজ কতোটা অসুস্থ। বৈধতার মোড়কে যাকে সুস্থ ভাবলেও আসলে সেটা সুস্থতা নয়।
(www.theoffnews.com - Bangladesh illness society)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours