শ্রাবণী দাশগুপ্ত, লেখিকা, কলকাতা:

সিনেমা নয় - (বিষয়: বিশেষ বহন... জীবন আসলে যেমন। শ্রীকান্ত উপন্যাসে "মধু ডোমায়ঃ কন্যায়ঃ নমঃ" মনে করে দেখতে পারেন। সহজতম বসবাস, যাপন ইত্যাদি।)

১) তার প্রেশার বেড়ে ১৯৫/৯৭... অতি নির্ঝঞ্ঝাট এক বাড়িতে গৃহসহায়িকা সে, সারাদিনের দায়িত্ব তার ওপরে। 

নিজের দুই ছেলে - দুজনেই ইলেক্ট্রিকের কাজ করত। একসময়ে আয় ছিল ভালো। ছোটো  কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ক্রমশঃ বেশ অনিয়মিত। ফলে মায়ের আর্থিক সাহায্য ছাড়া চলে না।

বড়ো ছেলে বিয়ে করবে না।

ছোটোটি করতে চায় (খানিক নিজের ইচ্ছা, খানিক পারিপার্শ্বিক চাপ)। ঠিক হল বিয়ে। তার মা বলেছিল মন্দিরে গিয়ে সিঁদুর পরিয়ে/কিছুই না করে একসাথে থাকুক। লোক খাওয়ানো, অনুষ্ঠান করা অসম্ভব। মেয়ের বাড়ি ও ইতরে জনাঃ অল্প কিছু হলেও চাইছিল - হোক একটু। সেই চিন্তায়, চাপে শান্ত মানুষটির এই শারীরিক অবস্থা। 

মিটমাট হল - বন্ধুরা বিয়ে দিয়ে দেবে হৈচৈ করে। নাঃ মন্দির পুরুত রেজিস্ট্রার কিছুই লাগবে না। বিয়ে শেষে মা বউ বরণ করে তুললেই হল।

২) পাঁচ বাড়ি কাজ করে সংসার চালায়। বাড়িতে ফ্রিজ টিভি মিক্সি সবই আছে। বলল, -স্বামীটা মদ খেয়ে খুব মারত। তারপর তাকে ছেড়ে দিই। একদিন মরে যায়। সেও অনেক বছর হয়ে গেল। তখন থেকে একজনের সঙ্গে থাকি। বিয়ে আর করিনি। সেও তার রোজকারে খায়, আমি আমার রোজকারে। কেও কাউকে খাওয়াই না। অনেক বছর হয়ে গেল।

প্রথম পক্ষের বড়ো বড়ো পাঁচ ছেলেমেয়ে, পাড়াপড়শী সবাই জানে, মেনে নিয়েছে। যাওয়া-আসাও আছে।

৩) আদিবাসী খ্রিষ্টান - ছোট্ট দুই ছেলে মেয়ে। আউট-হাউসে থাকে আর দুতিন বাড়ি কাজও করে। প্রথম বরের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। যার সঙ্গে থাকে সে ধর্মে মুসলমান। এই ছেলেমেয়ে দুটি তার। প্রথমপক্ষের ছেলে-বৌ নাতি আছে। মাঝে-মাঝে আসেও।

৪) বরকে, ছেলেকে সারাদিন গালি না দিলে তার ভাত হজম হয় না। তাকে ছেলেসমেত তাড়িয়ে সেই “নচ্ছার আরেকটাকে নিয়ে থাকে। ছেলেও বাপের ধারা - একেবারে নিষ্কর্মার ঢেঁকি”, তার ওপরে দুদিন পরপর বউ বদলায়। আবার বাচ্চাও হয়েছে।

খরচ চালায় মা - সারাদিনে দশটা বাড়ি কাজ করে। অসম্ভব মুখরা আর তেমনই নোংরা কাজ। টাকা যা পায়, একার পক্ষে খুব অসুবিধে না হওয়ার কথা। তবু বাজারে ধারের ওপরে ধার। 

ছেলে এসে হাত পেতে দাঁড়ালে পারে না।

নাতির মুখ মনে পড়ে - তার খরচা দেয়।

নচ্ছার বেজম্মা মিন্সে অসুখে পড়লে ট্যাকা না দিয়ে উপায় কি?

 *** এসব ভারতবর্ষের সত্যিকারের কথা। সেই ইণ্ডিয়ানরা আবার বিশেষ বিশেষ নিয়ম পালন না করে, খরচের বহর না দেখিয়ে পারে না।

(www.theoffnews.com - Indian society expence Mother)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours