সঞ্জয় সরকার, ফিচার রাইটার ও সাংবাদিক, বাঁকুড়া:

বিশের বিষ কাটিয়ে একুশের নতুন বছর শুরু হল। বর্ষবরণে শহর নগর থেকে প্রান্তিক মানুষরা মাতলেন নানাভাবে। কেউ মাতলেন ছুটির মেজাজে পিকনিক করে আবার কেউ কাটালেন সপরিবারে ঘুরে বেড়িয়ে। আবার বছর শেষের রাতে কেউ জেগে থাকলেন সুরায় আর সুরের নেশায় ঘড়ি ধরে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে। এই প্রথা চিরদিনের। তবে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে অভিনবত্ব আনলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের যুবক সদানন্দ দত্ত। নতুন বছরের প্রথম দিন বিষ্ণুপুরের ঐতিহাসিক লালবাঁধের জলে ২০২১ বার ডুব দিয়ে বর্ষবরণ করলেন তিনি। অভিনব এই বর্ষবরণ দেখতে ১ জানুয়ারি সকালে লালবাঁধের পাড়ে ভিড় জমিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ থেকে মন্দিরনগরী দেখতে আসা পর্যটকরা। রীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টার পর থেকেই বাজি ফাটিয়ে মাইক বাজিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানান শহরের মানুষ। প্রায় মধ্য রাত পর্যন্ত চলে মানুষের এই উন্মাদনা। ১ জানুয়ারি সকাল থেকে পিকনিক করতে দেখা যায়৮-৮০ সবাইকে। তার মধ্যেই ওই দিন সকাল ১১টার পর সদানন্দকে নিয়ে মেতে ওঠেন মানুষ। এবার নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে নতুন বছরকে এভাবেই লালবাঁধের জলে ডুব দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন তিনি। যা দেখতে ভিড় করেন মানুষ। 

১ জানুয়ারি সকালে মাত্র ৬০ মিনিটে ২০২১ বার জলে ডুব দিয়ে মানুষের মন জয় করে নেন তিনি। অভিনব এই বর্ষবরণ করে জল থেকে উঠে আসার পর মানুষ তাঁকে অভিনন্দন জানান। শীতের সকালে লালবাঁধের শীতল জলে ডুব দিয়ে ওঠার পর ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে সদানন্দ বলেন 'প্রতিবছর আমি সাল অনুযায়ী লালবাঁধের জলে ডুব দিয়ে বর্ষবরণ করি। এবার ২০২১ সাল পড়ল। তাই ২০২১ বার জলে ডুব দিলাম। এভাবেই আমি বিশ্বরেকর্ড করতে চাই। আমি চাই একদিন আমার নাম গিনেস বুকে উঠুক'। শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাহাদুরগঞ্জের বাসিন্দা সদানন্দ দত্তর ছোটবেলা থেকেই জলে টান। বাবার হাত ধরে শিখেছিলেন সাঁতার কাটা। এখন বাবা নেই বৃদ্ধা মাকে নিয়ে সংসার। জলের নেশায় পেশাকেও বেছে নিয়েছেন জলেই। বর্তমানে সদানন্দ বিষ্ণুপুর সুইমিংপুলের অন্যতম প্রশিক্ষক। তাই জল যেন তাঁর কাছে 'জলভাত'। বর্ষবরণে একটুও না থেমে একটানা ২০২১ বার জলে ডুব দিয়ে হাসি মুখে উঠে এলেন। এই অভিনব বর্ষবরণ দেখতে এসেছিলেন বেশ কিছু পর্যটক। তাঁরা বলেন 'বিষ্ণুপুর এসে এটা একটা নতুন পাওনা পেলম। এর আগে কোনো দিন কোথাও এই ধরণের বর্ষবরণ করতে দেখিনি। বেড়াতে এসে এটা আমাদের বাড়তি পাওনা পেলাম। সত্যি এটা অসাধারণ উদ্যোগ'।

(www.theoffnews.com - Bankura Bishnupur Sadananda Dutta)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours