গত ২০ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জন্য ‘বসবাস অযোগ্য’ নরকে পরিণত হয়ে উঠছে বলে পৃথিবী, বলে কড়া সতর্কতা উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। জলবায়ু সংকটকেই এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে জাতিসংঘ বলছে, বিশ্ব নেতারা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এই সংকট মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
গত ১২ অক্টোবর জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সংক্রান্ত অফিস ইউএনডিআরআরের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে ফলপ্রসূ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতাদের ব্যর্থতায় এই গ্রহ ধীরে ধীরে কোটি কোটি মানুষের জন্য বসবাস অযোগ্য নরকে পরিণত হচ্ছে।
সংস্থাটি বলছে, সঠিক সময়ে দুর্যোগ প্রশমনে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের অদূরদর্শিতার কারণে গেল ২০ বছরে পৃথিবীতে আবহাওয়া জনিত ঘটনাপ্রবাহ নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে তাপ দাহ আর খরায় আগামী দশকে নরকে রূপ নেবে সুজলা-সুফলা সবুজ এই পৃথিবী।
১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে দেয়া হয়েছে এই সর্তকতা। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ যথাযথভাবে না মানার কারণে প্রতিবেদনটিতে করোনা ভাইরাসে সমগ্র বিশ্বে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য স্ব-স্ব দেশগুলোকে দায়ী করা হয়েছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দশকে সবচেয়ে ভয়াবহ হুমকি হিসেবে দেখা দেবে তাপ প্রবাহ এবং খরা। আবহাওয়াকে উত্তপ্ত করে তোলা গ্যাসের ব্যবহার বাড়ার কারণেই তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে খরা, দাবানল, বন্যা, ভূমিকম্প, সুনামি ও হ্যারিকেনসহ বিশ্বে সাত হাজার ৩৪৮টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে। এসব দুর্যোগে মারা গেছে প্রায় ১২ লাখ ৩০ হাজার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪২০ কোটির বেশি মানুষ।’ দুই দশকের এসব দুর্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই লাখ ৯৭ হাজার কোটি ডলার।
তবে দুর্যোগের ব্যাপারে আগাম প্রস্তুতি এবং সতর্কবার্তা প্রদান ব্যবস্থার কারণে বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ কিছু জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এর মধ্যে বাংলাদেশ এবং ভারতের মতো কিছু দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোর বন্যা ও সাইক্লোন মোকাবিলার উন্নত প্রস্তুতির কারণে অনেক মানুষের জীবন বাঁচানো গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours