তৃপ্তি মিত্র, লেখিকা ও আবৃত্তিকার, কলকাতা:

আমাদের জীবনে মা-বাবার তিলে তিলে গড়ে তোলা শিক্ষাই শিখিয়েছে আমাদের বেঁচে থাকার মন্ত্র৷ আমাদের জন্ম থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু শিক্ষা নিয়ে চলেছি৷ এমন কি রাস্তায় পড়ে থাকা ভিক্ষারী, অযত্নে ফুটে থাকা ফুল, এমনকি রাস্তার কুকুর -বিড়াল ও শিখিয়ে দিয়েছে প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার সংগ্রাম কতটা কঠিন৷

আর বর্তমান করোনা পরিস্থিতি আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেল টিকে থাকার লড়াই। এই পৃথিবীর জল, মাটি হাওয়ায় সুন্দর সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার শিক্ষা৷

আমাদের জীবনে পুঁথিগত শিক্ষা এবং জীবনের ভীত গড়ে দিতে শিক্ষকের ভূমিকা অনেকখানি৷ আমার সৌভাগ্য শিক্ষাজীবনে বেশ কিছু সংখ্যক ভালো শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছি। ছাত্রী জীবনের অনেক টুকরো ঘটনা ভেসে উঠছে৷ ক্লাস সিক্সে পড়ি৷ তখন আমাদের ক্লাস টিচার ছিলেন রেখাদি৷ খুব স্নেহ করতেন সকলকে৷ লেখা পড়ার পাশাপাশি রেখাদির সঙ্গে বেশ বন্ধুত্ব সুলভ সম্পর্ক৷ কিন্তু তাতে বিঘ্ন ঘটল ওই একই স্কুলের বালক বিভাগে দিদির বদলি হওয়া৷ আমরা তো শোনা মাত্র ভীষন চিন্তায় পড়ে গেলাম৷ রেখাদিকে অনেক বার অনুরোধ করেছিলাম৷ দিদি বললেন এখানে আমার কোন সিদ্ধান্ত খাটে না৷ কি করবো ভেবে পাচ্ছি না৷ সব বন্ধুরা একজোট হলাম৷ অপরিনত হাতে একটি দরখাস্ত লিখে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জমা দিলাম৷ কিন্তু দুঃখের বিষয় সে অনুরোধে কাজ হল না৷ হবেই বা কেন? আমরা যে বয়সে অভিজ্ঞতায় নিতান্তই ছোট৷ কে কবে ছোটদের এ হেন আবদার অনুরোধের মূল্য দিয়েছে৷ রেখাদির পরিবর্তে অন্য যে শিক্ষিকাকে পেলাম তিনি ততোধিক কড়া মেজাজের, রাশভারী ষ৷ কি করা অগত্যা মানিয়ে নিলাম৷ 

এখন সে সব কথা মনে পড়লে মনে মনে হাসি৷ এই যে টুকরো টুকরো অভিজ্ঞতা থেকে যে শিক্ষা নিয়েছি সে তো সময়ই শিখিয়েছে৷ তাই নির্দ্বিধায় বলতে পারি সময় ও আমাদের শিক্ষার একটি বিশেষ অংশ।



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours