সজল বোস, ফিচার রাইটার ও সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:

মহাকাশ গবেষণায় নাসা এবার চাঁদে মহিলা নভচারী পাঠানোর বিষয়ে নতুন উদ্যোগ নিতে চলেছে। এই প্রজেক্টর নাম দিয়েছে *আর্টেমিস*।

কিন্তু আর্টেমিস নামকরণ এর পিছনে কারন হলো পৌরাণিক, গ্রীক পুরাণে আর্টেমিস ছিলেন অ্যাপোলো-র যমজ বোন এবং চাঁদের দেবী। তাই প্রথমেই মহিলা নভচারী যাবেন তখন চাঁদের দেবীর নাম করণ হিসাবে *আর্টেমিস* রাখা হয়।  এখন, প্রথম মহিলা ও পরে পুরুষ সহ ২০২৪ সালের মধ্যে চন্দ্র পৃষ্ঠে নভোচারীদের ফিরিয়ে আনার নাসার কর্মসূচির নাম হিসাবে প্রকাশ করেছেন। আমেরিকান নভোচারীরা পা ফেলবেন যেখানে কোনও মানুষ এর আগে কখনও অবতরণ হয়নি, সেটি চাঁদের দক্ষিণ মেরু।

২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে প্রথম মহিলা এবং পরের পুরুষ সহ আমেরিকান নভোচারীদের অবতরণ করতে নাসা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।২০২২ সালের মধ্যে টেকসই মিশন স্থাপনে ও তাদের  বাণিজ্যিক এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা করবে এবং তারপরে নাসা যা যা শিখবে এবং তা ব্যবহার করে পরবর্তী দৈত্যকার লাফ দেবে - মঙ্গল  গ্রহে।

আর্টেমিসের কাজ কতদুর এগোচ্ছে তার অগ্রগতি সম্পর্কে আরও তথ্য জানার দরকার, মঙ্গলে যাবার বদলে কেন চাঁদে যাবে?

মঙ্গল সহ ভবিষ্যত অন্বেষণের জন্য প্রয়োজনীয় নতুন প্রযুক্তি, ক্ষমতা এবং ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এই কাজের অবতারণা। 

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব এবং চাঁদে একটি কৌশলগত উপস্থিতি স্থাপন যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রভাবকে প্রসারিত করবে। বাণিজ্যিক এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব প্রসারিত করার সাথে সাথে একটি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। 

নাসার শক্তিশালী নতুন রকেট, স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস), পৃথিবী থেকে প্রায় চতুর্থাংশ মিলিয়ন মাইল অবধি ওরিয়ন মহাকাশযানের উপরে নভোচারীদের প্রেরণ করবে চন্দ্র কক্ষপথে। মহাকাশচারী গেটওয়েতে ওরিয়নকে ডক করবে এবং চাঁদের পৃষ্ঠে অভিযানের জন্য একটি মানব অবতরণ ব্যবস্থায় স্থানান্তর করবে। তারা নিরাপদে পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের আগে আবার অরিয়ান বোর্ডে ফিরে কক্ষপথে ফিরে আসবে।

এখন প্রশ্ন হলো বাণিজ্যিক ভাবে কি আমরা কোনদিন চাঁদে ভ্রমণের জন্য যাবো? 

মানব প্রত্যাবর্তনের আগে, ২০২১ সালে বাণিজ্যিক চাঁদ বিতরণের মাধ্যমে চন্দ্র পৃষ্ঠে বিজ্ঞান যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি প্রদর্শনের একটি স্যুট প্রেরণ করবে। সংস্থাটি তার গভীর মহাকাশ অনুসন্ধান ব্যবস্থা পরীক্ষা করার জন্য চাঁদের চারপাশে দুটি মিশন উড়িয়ে দেবে। আরএসটিএস এবং অরিয়ন মহাকাশযানের একসাথে পরীক্ষা করার জন্য একটি অনাবৃত ফ্লাইট আর্টেমিস প্রথম চালু করার দিকে নাসা কাজ করছে, তারপরে আর্টেমিস দ্বিতীয় মিশন, ক্রুদের সাথে প্রথম এসএলএস এবং ওরিয়ন পরীক্ষার বিমান। নাসা আর্টেমিস তৃতীয় মিশনে ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী অবতরণ করবে এবং এরপরে বছরে প্রায় একবার করে এই যাত্রা পথ খুলে যাবে,  আর বলবেন এবার পুজোর ছুটিতে একটু চাঁদে ঘুরে আসি। 

ফেজ 1 গেটওয়ে ধারণা

ওরিওনের সাথে চন্দ্র কক্ষপথে ফেজ 1 গেটওয়ের শিল্পীর ধারণা এবং মানব অবতরণ ব্যবস্থাটি কক্ষপথের ফাঁড়ির সাথে যুক্ত। কিন্তু সেখানে কি হবে?

মঙ্গল দিগন্তের লক্ষ্য, আর সেই লক্ষ্যে মানব এবং রোবোটিক অন্বেষণকারীদের সাথে চাঁদের পুরো পৃষ্ঠটি অন্বেষণ করার আগে দর্শনীয় স্থানগুলি প্রথম সেট করবে। চন্দ্রের  দক্ষিণ মেরু দিয়ে শুরু করে নতুন অবস্থানগুলিতে নভোচারীদের পাঠাবে।

দীর্ঘমেয়াদী অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজনীয় জল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্থানগুলি সন্ধান এবং ব্যবহার চাঁদের রহস্যগুলি তদন্ত করবে এবং আমাদের হোম গ্রহ এবং মহাবিশ্ব সম্পর্কে আরও জানার

অন্য মহাকাশীয় দেহের পৃষ্ঠে যেখানে নভোচারীরা বাসা থেকে মাত্র তিন দিন দূরে থাকেন সেখানে কীভাবে বাঁচা যাবে এবং মঙ্গল গ্রহে মিশনে নভোচারী প্রেরণের আগে আমাদের যে প্রযুক্তি প্রয়োজন তা প্রমাণ করতে হবে। 

আমেরিকান মহাকাশ সংস্থার চাঁদে মানুষ নিয়ে যাবার এই প্রকল্পের জন্য ২,৮০০ কোটি ডলার  বা ২৮ বিলিয়ন ডলারের খরচ হবে। এই বিশাল অর্থ খরচের পর কতটা সফল্য আসবে সেদিকেই নজর থাকুক। আর চাঁদের বাড়ি ঘুরে আসার স্বপ্নটাকে সফল করার জন্য আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে। তাই আশায় রইলাম... 


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours