সারাদিন একটা পোস্টকার্ডের প্রত্যাশায় থাকি
ফেসবুকের আর হোয়াটসঅ্যাপের শুভেচ্ছা-বাণীর ক্লান্তিতে মনে হয়ে সব উড়ে যাক,
ধুয়ে যাক এই সন্ধ্যের ঝোরো-বৃষ্টির সাথে। আর পরের দিন ভোর হতে না হতেই ফিরে আসুক শালিক পাখির মত একটা পোস্টকার্ড।
ঝর্ণা-কলমে সুন্দর গোটা গোটা হাতের লেখায়
তাতে লেখা থাকবে, ইতি, আশীর্বাদ সহ, স্নেহ নিও, এইসব কপালে আদরমাখানো কিছু কথা।
লেখা থাকবে পোস্টকার্ডের এপিঠ ওপিঠ
জুড়ে বাড়ির গন্ধ-মাখানো অনেক কুশল বিনিময়।
পাশের অশ্বত্থ গাছের কোটরের কথা,
পেছনের দরজা খুলে বেরিয়ে গোয়ালে
লালী গরুর গাভিন হওয়ার কথা।
লেখা থাকবে উপেন্দ্রর কথা, যে নিজের জুতো-সেলাইয়ের থলে মাথায় রেখে
রাত আটটায় বারান্দায় শুতে আসত তার
কথা, আহা নিজের বাড়িঘর ছেড়ে সে
এসেছে শহরের লোকের জুতো ঘষে-মেজে নতুন করে দিতে।
চলা-ফেরায় তাদের কপাল চমকাতে এসেছে উপেন্দ্র সেই পুরুলিয়ার গ্রাম থেকে,
কিন্তু তার খবর! সারাদিন সে ঘোরে
শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত আর রাতে
শোবার জায়গা নেই।
তাকে বারান্দা পেতে শুতে না দিলে সে
কোথায় যাবে বলো তো! এটাই তো শুভরাত্রি। আর মাসে একদিন একটা
ভাঁজ করা পোস্টকার্ড এনে সে বলে – লিখে
দাও, আমি খুব ভালো আছি বাড়িতে যেন
চিন্তা না করে – আর এই নাও ঠিকানা।
এবার ভাঁজের পর ভাঁজ খুলে সে বার করে
যত্নে রাখা তার গ্রামের ঠিকানা। সে
চিঠির দাম কোথায় যে খরচ হয়ে গেল!
আজ তাই শুভেচ্ছা চাইছি।
একটি পোস্টকার্ড পাওয়ার শুভেচ্ছা ।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours