সজল বোস, সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:

সারা বিশ্বে কত কত ঘটনা যা অজানাই থেকে যায়, তাই আমাদের কাজ সেটাই এই অজানা তথ্যকে জনসমক্ষে নিয়ে আসা। হয়তো এটাই সময়ের দলিল হয়ে থাকবে। পৃথিবীব্যাপী প্রতিদিনই কয়েক লক্ষ  শিশুর জন্ম হচ্ছে। এটা নিশ্চিত আজ কোন কোন ছোট গ্রামেরও  জনসংখ্যা শতাধিক এবং বছরে অন্তত তিন চারজনের জন্ম হয়ই হয়। কিন্তু এমন একটি ছোট গ্রাম যে গ্রামের জনসংখ্যা মাত্র ২৮ আর সেই গ্রামে দীর্ঘ আট বছর পর নবজাতকের জন্ম হলো আর নাগরিক পরিসংখ্যান বেড়ে হলো ২৯জন। আসুন আজকে সেই গ্রামের নবজাতকের জন্মের কাহিনী জেনে নিই। 
ইতালির লোম্বারডিতে পাহাড়ের ওপর ছোট্ট গ্রাম মোরতেরোন। আট বছর পর ওই গ্রামে কোনো শিশুর জন্ম হলো। নতুন বাসিন্দার আগমনে ইতালির ক্ষুদ্রতম গ্রামটির লোকসংখ্যা বেড়ে হলো ২৯ জন। যে বাড়ির শিশু, তার দরজায় রিবন দিয়ে সাজিয়ে পুরো ব্যাপারটার মধ্যে একটা উৎসবের আমেজ এনেছেন গ্রামবাসীরা। উৎসাহ উদ্দীপনাতে সবাই উৎফুল্ল। নবজাতক শিশু নাম রাখা হয়েছে ডেনিস। 
ইতালির পুরোনো প্রথা হলো, গ্রামে কোনো শিশুর জন্ম হলে সে বাড়ির দরজায় রিবন বেঁধে সবাইকে তা জানান দেওয়া। ছেলেশিশু হলে নীল রিবন আর মেয়ে হলে গোলাপি।
২০১২ সালের দীর্ঘ্য সময় পর আবার অতি আনন্দ ও উৎসবে মোরতেরোন গ্রামে মেতে উঠেছেন সকলেই। সে প্রথা মেনেই ডেনিসের মা-বাবা সারা ও মাত্তেও তাঁদের বাড়ির দরজায় নীল রঙের রিবন লাগিয়ে ওপরে লিখে দেন ডেনিসের নাম।
ডেনিসের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে লেক্কোর আলেসান্দ্রো মানজোনি হাসপাতালে ডেনিসের জন্ম হয়েছে। ওজন দুই কেজি ষাট গ্রাম। মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছে।
মোরতেরোনের মেয়র আন্তোনেল্লা ইনভারনিজি বলেন, গোটা গ্রামের কাছেই এটা একটা সত্যিকারের আনন্দঘন মুহূর্ত। এছাড়াও প্রতীক্ষিত তাদের নাগরিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলো। 
ডেনিসের মা সারা বলেন, ‘মহামারির সময় গর্ভবতী হওয়ার একটা বিরল অভিজ্ঞতা ছিলো। আশপাশ সবই লকডাউন হয়ে ছিল। বাড়ির বাইরে বেরোতেই পারিনি। সন্তানসম্ভবা হওয়ার খবর পেয়েও স্বজনরা দেখা করতে আসতে পারেননি। সন্তান জন্ম দিয়ে ভীষণ খুশি। ভালো লাগছে গ্রামের জনসংখ্যা আরেকজন বাড়ল।
২০১২ সালে গ্রামে প্রথমবারের মতো এই জাতীয় রিপোর্টে দেখা গেছে, যখন একটি বাচ্চা মেয়ে জন্মেছিল।
ডেনিসের জন্মের এক সপ্তাহ পরের তথ্য থেকে দেখা গেছে যে ২০১২ সালে ইতালির হ্রাসপ্রাপ্ত জন্মের হারটি রেকর্ডে সবচেয়ে কম গেছে, ৪,২০,১৭০ জন শিশুর জন্ম হয়েছিল - ১৮৬১ সালে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে এটি ছিলো সর্বনিম্ন।
জনসংখ্যার আকারের কারণে মরটারন ইটালির ক্ষুদ্রতম পৌরসভা হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। সেখানকার মেয়র ইনভার্নিজির বাবার মৃত্যুর পরে জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল মাত্র ২৮।
যাক এই ধরনের অজানা কিছু খবর আমাদের জানা বোঝার ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করার পাশাপশি মনের অলিন্দে একটা সুখানুভূতি হবে, কারন মহামারির সংক্রমণের ইতালি সহ সারা বিশ্বে যেখানে মৃত্যুর খবর অব্যহত সেখানে নবজাতকের জন্মের খবর যে বাড়তি খুশীর বার্তা আনে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে মানব জাতির এই অসহায় অবস্থার পরিবর্তন যে কতটা গুরুত্ব আর তার জন্য মরতে মরতে রোজ বেঁচে থাকার সংগ্রাম আর মুক্তির আশায় হতাশা কে কাটিয়ে এই খবর যে মন ভালো করা রোদ্দুরের মতো আমাদের কাছে বড়ই শান্তির।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours